প্রশ্ন: ব্যাকরণে কী কী বিষয় আলোচিত হয ?উদাহরণসহ আলোচনা কর । কু.বো.০১, ব. বো.-০২,রা.বো-২০০০
ব্যাকরণ: ব্যাকরণ শব্দটির ব্যুৎপত্তিগত অর্থ বিশেষভাবে বিশ্লেষণ। সুতরাং, যে শাস্ত্রে বাংলা ভাষার বিভিন্ন উপাদানের গঠন প্রকৃতি ও স্বরূপের বিচার বিশ্লেষণ করা হয় এবং বিভিন্ন উপাদানের সম্পর্ক নির্ণয় ও প্রয়োগবিধি বিশদভাবে আলোচিত হয়, তাকে বাংলা ব্যাকরণ বলে।
বাংলা ব্যাকরণের আলোচ্য বিষয় :
প্রতিটি ভাষারই ৪টি মৌলিক অংশ থাকে- ধ্বনি, শব্দ, বাক্য ও অর্থ। আর তাই সব ভাষার ব্যাকরণই প্রধানত এই ৪টি অংশ নিয়েই আলোচনা করে। অর্থাৎ, বাংলা ব্যাকরণের মূল আলোচ্য বিষয়/ অংশ ৪টি-
১. ধ্বনিতত্ত্ব (Phonology): ধ্বনিতত্ত্ব: ব্যাকরণের এ অংশে ধ্বনি, ধ্বনির উচ্চারণ, ধ্বনির বিন্যাস, ধ্বনির পরিবর্তন, বর্ণ, সন্ধি ণ-ত্ব বিধান, ষ-ত্ব বিধান প্রভৃতি ধ্বনি সম্বন্ধীয় বিষয় আলোচিত হয়।
২. শব্দতত্ত্ব বা রূপতত্ত্ব (Morphology) : এ অংশে শব্দের প্রকার, পদের পরিচয়, শব্দ গঠন, উপসর্গ, প্রত্যয়, বিভক্তি, লিঙ্গ, বচন, ধাতু, শব্দরূপ, কারক, সমাস, ক্রিয়া-প্রকরণ, ক্রিয়ার কাল, ক্রিয়ার ভাব, শব্দের ব্যু ৎপত্তি ইত্যাদি বিষয়ের আলোচনা থাকে।
৩. বাক্যতত্ত্ব বা পদক্রম (Syntax) : বাক্য, বাক্যের অংশ, বাক্যের প্রকার, বাক্য বিশ্লেষণ, বাক্য পরিবর্তন, পদক্রম, বাগ্ধারা বা বাগিবধি বা বাক্যরীতি, বাক্য সংকোচন, বাক্য সংযোজন, বাক্য বিয়োজন, যতিচ্ছেদ বা বিরাম চিহ্ন প্রভৃতি বিষয় এ অংশে আলোচিত হয়।
৪. অর্থতত্ত্ব (Semantics):শব্দের অর্থবিচার, বাক্যের অর্থবিচার ,অর্থের প্রকারভেদ; মুখ্যার্থ, গৌণার্থ, বিপরীতার্থ
এছাড়াও ব্যাকরণে আরো বেশ কিছু বিষয় নিয়েও আলোচনা করা হয়। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- অভিধানতত্ত্ব(Lexicography), ছন্দ ও অলংকার, ইত্যাদি।
প্রশ্ন: অ ধ্বনি উচ্চারণের পাঁটি নিয়ম লেখ।/অথবা, প্রমিত বাংলা উচ্চারনের পাচঁটি নিয়ম লেখ ।
১। শব্দের দ্বিতীয় স্বর ‘অ’, আ, ও, হলে অ –এর উচ্চারণ স্বাভাবিক হয়। যেমন- অন্ন, অর্থ, অক্ষর , কলম, অমল ইত্যাদি ।
২। স’ বা সম’ উপসর্গযুক্ত আদি অ-ধ্বনি স্বাভাবিক হয়। যেমন: সস্নেহ, সহাস্য, সজীব, সরল, সবিনিয় ইত্যাদি ।
৩। না অর্থে অ বা অন থাকলে অ – ধ্বনি স্বাভাবিক বা বিবৃত হয়। যেমন: অমূল্য, অমৃত, অস্থির , অনিয়ম, আনাগত ইত্যাদি।
৪।অ – এর নিজস্ব উচ্চারন স্বাভাবিক বা বিবৃত হয় । যেমন: যেমন: জল, সরল, দখল, ইত্যাদি।
৫।অ – স্বরধ্বনিযুক্ত একাক্ষর (sylleble) শব্দের অ-এর উচ্চারণ স্বাভাবিক। যেমন: নদ্, টব, শব্, দম্, রব্ ইত্যাদি