বাংলা ২য় পত্র
প্রশ্ন: কার ও ফলা কাকে বলে কার ও ফলার বিস্তারিত বর্ণনা দাও
উত্তর:- বাংলা স্বরবর্ণের সংক্ষিপ্ত রূপকে `কার' বলা হয় । ‘অ’ ভিন্ন স্বরবর্ণগুলো ব্যঞ্জনবর্ণের সঙ্গে সংযুক্ত হলে পূর্ণরূপের বদলে সংক্ষিপ্ত রূপ পরিগ্রহ করে । স্বরবর্ণের এ ধরনেরসংক্ষিপ্ত রূপকে বলা হয় ’কার”
। স্বরবর্ণের কার চিহ্ন ১০টি । যথা :
আ -কার (া ) :মা , বাবা ঢাকা | ৃ- কার (ৃ): কৃষক তৃণ পৃথিবী |
ই-কার ( ি) : কিনি ,চিনি . মিমি | এ- কার ( ে ) : চেয়ার , টেবিল মেয়ে |
ঈ- কার ( ী ): শশী , সীমান্ত, রীতি | ঐ-কার ( ৈ ) :তৈরি ,বৈরী, হৈচৈ |
উ- কার ( ু) :কুকুর , পুকুর . দুপুর । | ও -কার ( ে া ) : খোকা, পোকা , বোকা । |
ঊ- কার (ূ) : ভূত, মূল্য , সূচি | ঔ-কার ( ৌ) :নৌকা, মৌসুমী ,পৌষ |
ব্যঞ্জনবর্ণের সংক্ষিপ্ত রূপকে ফলা বলা হয়। বাংলায় ফলা চিহ্ন ৭ টি
য-ফলা (্য) : ব্যাঙ,খ্যাতি,সহ্য । | ন-ফলা (ন /ন): বিভিন্ন, যত্ন, রত্ন |
ব-ফলা (্ব) :পক্ব,বিশ্ব , অশ্ব । | ণ-ফলা (ণ):পুবাহ্ণ অপরাহ্ণ |
ম-ফলা (ম): পদ্ম,সম্মান , স্মরণ | ল-ফলা (ল) :ক্লান্ত, ম্লান , অম্ল |
র -ফলা (্র): প্রমাণ,শ্রান্ত,ক্রয় | ----- |
প্রশ্ন: গুরুচণ্ডালী দোষ কাকে বলে ?গুরুচণ্ডালী দোষ দূষণীয় কেন? উদাহরণসহ বিশ্লেষন করো ।
অথবা
ভাষায় সাধু ও চলিতরীতির মিশ্রণ দূষণীয়, ইহা বর্জন অবশ্যই কর্তব্য।’—আলোচনা করো।
উত্তর: গুরুচণ্ডালী দোষ: বাংলা ভাষার দুটি রূপ আছে। তার মধ্যে একটি সাধু এবং অপরটি চলিত। উভয়রীতির মধ্যে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য বিদ্যমান। তাই একই রচনায় সাধু ও চলিত ভাষার সংমিশ্রণ অসংগত ও অশুদ্ধ। ভাষারীতির এ অশিষ্ট প্রয়োগকে গুরুচণ্ডালী দোষ বলে। সাধু ও চলিত ভাষার মিশ্রণের ফলে ভাষা প্রকৃতিগত বৈশিষ্ট্য হারিয়ে কলুষিত হয়ে পড়ে। তাই সাধু ও চলিতরীতির মিশ্রণ দূষণীয় হিসেবে পরিগণিত হয়। এ জন্য উভয়রীতির মিশ্রণ পরিহার করা অবশ্যই কর্তব্য।
সাধু ও চলিত ভাষার মিশ্রণকে গুরুচণ্ডালী দোষ বলে !!
যেমন- গরুর গাড়ি চলিত ভাষা সে স্থলে গরুর শকট ,শবদাহ স্থলে শবপোড়া ।
প্রশ্ন: ব্যাকরণ কাকে বলে ? ব্যাকরণ পাঠের প্রয়োজনীয়তা আলোচনা করো।
উত্তর: সংজ্ঞা: ‘ব্যাকরণ’ শব্দের ব্যুৎপত্তিগত অর্থ বিশ্লেষণ। ভাষা বিশ্লেষণ করাই ব্যাকরণের কাজ। সুতরাং যে শাস্ত্রে কোনো ভাষার বিভিন্ন উপাদানের প্রকৃতি ও স্বরূপের বিচার-বিশ্লেষণ করা হয় এবং বিভিন্ন উপাদানের সম্পর্ক নির্ণয় ও প্রয়োগবিধি বিশদভাবে আলোচিত হয়, তাকে ব্যাকরণ বলে।
ডক্টর সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের মতে, যে শাস্ত্রে কোনো ভাষাকে বিশ্লেষণ করে তার স্বরূপ, প্রকৃতি ও প্রয়োগরীতি বুঝিয়ে দেওয়া হয়, সে শাস্ত্রকে বলে সে ভাষার ব্যাকরণ।
ব্যাকরণ পাঠের প্রয়োজনীয়তা: পৃথিবীর প্রতিটি ভাষা একটি শৃঙ্খলা ও নিয়মবিধির দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। ভাষার এ নিয়মবিধি জানার জন্যই ব্যাকরণ পাঠ অপরিহার্য। একটা ভাষা সম্বন্ধে সম্পূর্ণ জ্ঞান লাভ করার জন্যই সে ভাষার ব্যাকরণ জানতে হবে। ব্যাকরণ পাঠ করে ভাষার বিভিন্ন উপাদানের প্রকৃতি ও স্বরূপের বিচার-বিশ্লেষণ করা হয় এবং সেগুলোর সুষ্ঠু ও সঠিক ব্যবহার বা প্রয়োগবিধি সম্বন্ধে জ্ঞানলাভ করা যায়। এ ছাড়া ব্যাকরণ জানা থাকলে লেখায় ও কথায় ভাষা প্রয়োগের সময় শুদ্ধাশুদ্ধি নির্ধারণ সহজতর হয়। বাগধারা, ছন্দ ও অলংকার প্রকরণও ব্যাকরণের অন্তর্ভুক্ত বিষয়। কাজেই ব্যাকরণ পাঠের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।