জ্ঞানমূলক প্রশ্নের উত্তর
সৃজনশীল প্রশ্ন (মান : ৭০)
[যেকোনো ৭টি প্রশ্নের উত্তর দাও। প্রতিটি প্রশ্নের মান ১০(১+২+৩+৪)]
১। নিচের ছকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
ক) রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার কোন নীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত?
খ) দায়িত্বশীল সরকার বলতে কী বোঝায়?
গ) ওপরের ছক অনুযায়ী ‘ক’ ও ‘খ’ রাষ্ট্রের সরকার ব্যবস্থার মধ্যে পার্থক্য লেখো।
ঘ) ‘ক’ ও ‘খ’ রাষ্ট্রের সরকার ব্যবস্থার মধ্যে কোনটিকে তুমি উত্তম মনে করো? তোমার উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও।
২। বাবার মৃত্যুর পর সম্পত্তি ভাগ করার ব্যাপারে বড় ভাই ছোট ভাই-বোনদের বলেন, ‘আমি কোনো অনৈতিক কাজ করব না। আরো বলেন, তোমরা কখনো রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পেলে সবার সুযোগ-সুবিধার সমতার দিকে খেয়াল রাখবে।’
ক) ‘আইন হলো সার্বভৌম কর্তৃত্বের আদেশ’—কার উক্তি?
খ) অর্থনৈতিক স্বাধীনতা বলতে কী বোঝায়?
গ) উদ্দীপকের প্রথমে আইনের যে উৎসটির প্রতিফলন ঘটেছে তার ব্যাখ্যা দাও।
ঘ) উদ্দীপকের শেষে রাষ্ট্রের দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে পাঠ্য বইয়ের কোন ধারণার উল্লেখ করা হয়েছে? ব্যাখ্যা করো।
৩। আজিজ সাহেব সরকারের একটি অঙ্গের সদস্য হওয়ায় তিনি কর আরোপ ও সংগ্রহ এবং সরকারের বিভিন্ন কর্তৃপক্ষকে আদেশ প্রদান ও বিধি-বিধান প্রণয়নের ক্ষমতা দেওয়ার কাজে যুক্ত থাকেন। অন্যদিকে মোবারক সাহেবের বিভাগটি জনগণের মৌলিক অধিকার সংরক্ষণসহ আইনের ব্যাখ্যাও প্রয়োগ করে থাকে।
ক) বাংলাদেশে কততম সংশোধনীর মাধ্যমে সংসদীয় সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়?
খ) ‘ক্ষমতার স্বতন্ত্রীকরণ নীতি’ বলতে কী বোঝায়?
গ) উদ্দীপকে উল্লিখিত আজিজ সাহেবের প্রতিষ্ঠানের কোন কোন কাজের উল্লেখ রয়েছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ) মোবারক সাহেবের বিভাগের নাম উল্লেখপূর্বক কার্যাবলি ব্যাখ্যা করো।
৪। সম্প্রতি রামপালে বিদ্যুেকন্দ্র নির্মাণের জন্য বাংলাদেশ ও ভারতের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হতে যাচ্ছিল। কিন্তু মারাত্মকভাবে পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কায় পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো ও সুশীল সমাজ বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা ও টেলিভিশনের মাধ্যমে এর তীব্র প্রতিবাদ জানায়। বিভিন্ন সংগঠন ও শ্রেণিপেশার মানুষও এর বিরুদ্ধে মানববন্ধন করে।
ক) জনমত কাকে বলে?
খ) রাজনৈতিক সংস্কৃতি বলতে কী বোঝায়?
গ) উদ্দীপকে সরকারের অবস্থান পরিবর্তনে যে বিষয়টি ভূমিকা রাখে তা পাঠ্য বইয়ের আলোকে ব্যাখ্যা করো।
ঘ) উদ্দীপকের আলোকে গণমাধ্যমের ভূমিকা বিশ্লেষণ করো।
৫। মি. ‘ক’ ও মি. ‘খ’ উচ্চপদস্থ স্থায়ী সরকারি কর্মকর্তা। মি. ‘ক’ বিশ্বাস করেন উচ্চপদস্থ হলেও তিনি সাংবিধানিকভাবে জনগণের সেবক। তাঁর উচিত রাজনীতি নিরপেক্ষভাবে কাজ করে যাওয়া। কিন্তু মি. ‘খ’ নিজেকে ক্ষমতাবান মনে করেন। তিনি স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেন।
ক) আমলাতন্ত্রের জনক কে?
খ) লালফিতার দৌরাত্ম্য বলতে কী বোঝায়?
গ) ‘‘উদ্দীপকে উল্লিখিত মি. ‘খ’ এর আচরণ ও কর্মকাণ্ড সুশাসনের জন্য অন্তরায়’’ ব্যাখ্যা করো।
ঘ) উদ্দীপকে উল্লিখিত মি. ‘খ’-এর মানসিকতা ও আচরণ উন্নত করার জন্য কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত বলে তুমি মনে করো? তোমার উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও।
৬। ‘ক’ রাষ্ট্রটি পূর্ব ও পশ্চিম অঞ্চলে বিভক্ত। পূর্বাঞ্চলের জনগণ বাংলায় কথা বলে এবং তারা ওই রাষ্ট্রের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠী। তারা নিজেদের অনেক দিন ধরে পশ্চিমাঞ্চল থেকে আলাদা ভাবে। কেন্দ্রীয় সরকার সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ভাষাকে অগ্রাহ্য করে। অন্য একটি ভাষা তাদের ওপর চাপিয়ে দেয়। ফলে ভাষার দাবি প্রতিষ্ঠা করতে তারা সংগ্রাম করে। পরবর্তীকালে পূর্বাঞ্চলের জনগোষ্ঠী ‘ক’ রাষ্ট্র থেকে আলাদা হয়ে নতুন একটি রাষ্ট্রের জন্ম দেয়।
ক) জাতি কাকে বলে?
খ) জাতি ও জাতীয়তার মধ্যকার পার্থক্য লেখো।
গ) উদ্দীপকে বর্ণিত ‘ক’ রাষ্ট্রে কোন চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে পূর্বাঞ্চলের মানুষ সংগ্রাম করেছিল? ব্যাখ্যা করো।
ঘ) উদ্দীপকে বর্ণিত চেতনার উপাদানগুলো বিশ্লেষণ করো।
৭। নিচের ছকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
ক) ‘ইতিহাস ব্যতীত পৌরনীতি ভিত্তিহীন এবং পৌরনীতি ব্যতীত ইতিহাস মূল্যহীন’—উক্তিটি কার?
খ) নাগরিকের গণতান্ত্রিক চেতনা বৃদ্ধিতে পৌরনীতি পাঠ গুরুত্বপূর্ণ কেন?
গ) ছকে উল্লিখিত বিষয় দুটির মধ্যকার সম্পর্ক লেখো।
ঘ) নাগরিক জীবনকে পরিপূর্ণতা দিতে দুটি বিষয়ই সমান ভূমিকা রাখে—যুক্তি দাও?
৮। বর্তমানে পৃথিবীতে মানুষের সার্বিক কল্যাণকে নিশ্চিত করার জন্য রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার সঙ্গে একটি ধারণা বা প্রক্রিয়া ব্যবহার করা হচ্ছে, যার মাধ্যমে নাগরিকরা আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষার প্রকাশ করতে পারে এবং অধিকার ভোগ করতে পারে।
ক) আইনের শাসন কাকে বলে?
খ) সরকারের জবাবদিহি বলতে কী বোঝায়?
গ) উদ্দীপকের ধারণাটি কিভাবে রাষ্ট্রের জনগণের সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিত করতে পারে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ) উদ্দীপকের ধারণাটি কেন বর্তমানে বিশ্বের রাষ্ট্রব্যবস্থায় জনপ্রিয় ধারণা? যুক্তি দাও।
৯। সাইফুল মেধাবী ছাত্র ও খেলোয়াড়। কলেজের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার সময় তার শরীরের মারাত্মক ক্ষতি হয়। সংবাদ পেয়ে ছাত্র-শিক্ষকসহ এলাকার মানুষ তার পাশে দাঁড়ায় এবং দীর্ঘ চিকিৎসার পর সাইফুল সুস্থ হয়ে সবার মাঝে ফিরে আসে।
ক) গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ কাকে বলে?
খ) ‘সাম্য ব্যতীত গণতন্ত্র অর্থহীন’—ব্যাখ্যা করো।
গ) উদ্দীপকে বর্ণিত সাইফুলের প্রতি সবার আচরণে কোন মূল্যবোধের প্রকাশ ঘটেছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ) সাইফুলের প্রতি সবার এ ধরনের আচরণ সমাজে যে প্রভাব ফেলবে তার বিশ্লেষণ করো।
১০। জনাব মামুন জনপ্রিয় লেখক। তাঁর লেখনীতে দেশের সব জনগোষ্ঠীর ভাষা-সাহিত্য, ইতিহাস ও ঐতিহ্য সংরক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। তিনি আশা করেন ব্যক্তির প্রতিভা বিকাশে সমাজের সবাই এগিয়ে আসবে।
ক) সামাজিক কর্তব্য কাকে বলে?
খ) মানবাধিকার বলতে কী বোঝায়?
গ) জনাব মামুনের লেখনীতে কোন ধরনের অধিকারের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ) উদ্দীপকের বর্ণিত অধিকারের নিশ্চয়তা সমাজের উন্নতিতে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে? বিশ্লেষণ করো।
১১। কলেজের অধ্যাপক শিক্ষক আফসার উদ্দিন ছাত্রদের রাজনৈতিক দল ও নেতৃত্ব সম্পর্কে আলোচনা করছিলেন। আলোচনার একপর্যায়ে তিনি বলেন, সুযোগ্য নেতৃত্ব ছাড়া কখনো সুসংগঠিত রাজনৈতিক দল গঠন সম্ভব নয় এবং সঠিক নেতৃত্বই পারে একটি জনসমাজকে জাতীয়তাবোধে উদ্বুদ্ধ করতে।
ক) জাতীয়তাবোধ কী?
খ) সম্মোহনী নেতৃত্ব বলতে কী বোঝায়?
গ) কী কী গুণের সমাবেশ ঘটলে সুযোগ্য নেতৃত্ব গঠন সম্ভব? ব্যাখ্যা করো।
ঘ) ‘সুশাসনের সাথে নেতৃত্বের সম্পর্ক খুবই ঘনিষ্ঠ’—উক্তিটির যথার্থতা নির্ণয় করো।
এইচএসসি পৌরনীতি ও সুশাসন প্রথম পত্র মডেল টেস্টের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
সৃজনশীল অংশের জ্ঞানমূলক (ক) ও অনুধাবনমূলক (খ) প্রশ্নের উত্তর :
ক) রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার কোন নীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত?
১। ক) ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত।
খ) দায়িত্বশীল সরকার বলতে কী বোঝায়?
খ) আধুনিক যুগের গণতান্ত্রিক সরকারকেই দায়িত্বশীল সরকার বলে। কেননা গণতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থায় রাষ্ট্রের সব জনগণের অংশগ্রহণের সুযোগ থাকে।
রাষ্ট্রের নাগরিকরা তাদের মূল্যবান ভোট প্রয়োগের মাধ্যমে দায়িত্বশীল সরকার প্রতিষ্ঠা করে। এ জন্য দায়িত্বশীল সরকার রাষ্ট্রের জনগণের সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সংস্কৃতিকসহ সব বিষয়ে উন্নতি সাধনে সক্ষম হয়। এ ব্যবস্থায় আইনের শাসন, জবাবদিহি, স্বাধীন বিচার বিভাগ, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও সর্বোপরি দায়িত্বশীল শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়।
২। ক) জন অস্টিন।
খ) ব্যক্তির স্বাভাবিক জীবন ধারণের জন্য অভাব ও দারিদ্র্য থেকে মুক্ত করে অর্থনৈতিক নিরাপত্তার বিধান ও আর্থিক সুযোগ-সুবিধা লাভের অধিকার নিশ্চিত করাকেই অর্থনৈতিক স্বাধীনতা বলে।
অর্থনৈতিক স্বাধীনতা ছাড়া অন্য সব স্বাধীনতাই অনেকটা অর্থহীন হয়ে পড়ে। অর্থনৈতিক স্বাধীনতার মাধ্যমে ব্যক্তির সামর্থ্য ও যোগ্যতা অনুযায়ী জীবিকা নির্বাহের ব্যবস্থা নিশ্চিত হয়। ন্যায্য মজুরি লাভের অধিকার, অবকাশ যাপনের স্বাধীনতা, কর্মের স্বাধীনতাসহ বৃদ্ধ ও অক্ষম অবস্থায় আর্থিক নিরাপত্তা লাভের অধিকারকেই অর্থনৈতিক স্বাধীনতা বলা হয়।
৩। ক) দ্বাদশ সংশোধনীর মাধ্যমে বাংলাদেশে সংসদীয় সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়।
খ) একটি রাষ্ট্রের সরকারের আইন, শাসন ও বিচার বিভাগের ক্ষমতা ও কাজকে পৃথক বা স্বতন্ত্র করাকেই ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতি বলা হয়।
সরকারের তিনটি বিভাগ স্বতন্ত্রভাবে গঠিত হবে। প্রতিটি নিজ কর্মক্ষেত্রে সম্পূর্ণ স্বাধীন থাকবে। অর্থাৎ এক বিভাগ অন্য বিভাগের কাজে বাধা প্রদান বা হস্তক্ষেপ করবে না। এই নীতি অনুসারে আইন বিভাগ আইন প্রণয়ন করবে, শাসন বিভাগ সেই আইন কার্যকর করবে এবং বিচার বিভাগ সেসব আইনের ব্যাখ্যা দানসহ বিভিন্ন মামলায় প্রয়োগ করে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করবে।
৪। ক) জনমত হচ্ছে কল্যাণকামী, বলিষ্ঠ, যুক্তিভিত্তিক ও সুস্পষ্ট মতামত, যা সরকার ও জনগণকে প্রভাবিত করতে সক্ষম।
খ) রাজনৈতিক সংস্কৃতি বলতে সেসব লক্ষ্য, উদ্দেশ্য, মনোভাব, বিশ্বাস, অনুভূতি ও মূল্যবোধকে বোঝায়, যা মানুষের রাজনৈতিক আচরণ ও মূল্যবোধকে নিয়ন্ত্রণ করে।
রাজনৈতিক সংস্কৃতি মূলত একটি রাষ্ট্রের আর্থ-সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় বিশ্বাস ও মূল্যবোধকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে। রাজনৈতিক সংস্কৃতি হচ্ছে রাজনৈতিক ব্যবস্থার দর্পণ বা প্রতিচ্ছবি, যা রাজনৈতিক ব্যবস্থার গভীরে প্রবেশ করে এর অন্তর্নিহিত ও মনস্তাত্ত্বিক দিকের প্রকাশ ঘটায়।
৫। ক) আমলাতন্ত্রের জনক হলেন জার্মান সমাজবিজ্ঞানী ম্যাক্স ওয়েবার।
খ) লালফিতার দৌরাত্ম্য বলতে পূর্ববর্তী নিয়মকে অন্ধভাবে অনুসরণ ও অনুকরণ করাকে বোঝায়।
আমাদের সমাজে আমলাতন্ত্রের দৌরাত্ম্য, আনুষ্ঠানিকতার বাড়াবাড়ি ও অহেতুক বিলম্ব বোঝাতে মন্দ অর্থেই লালফিতার দৌরাত্ম্য শব্দটি ব্যাপকভাবে প্রচলিত। Red Tapism বা লালফিতা প্রত্যয়টি শপ্তদশ শতাব্দীতে ইংল্যান্ডে প্রচলিত ছিল। সে সময়ে সরকারি ফাইলপত্র লাল রঙের ফিতায় বেঁধে রাখা হতো। তখন থেকেই আমলাতন্ত্রের আনুষ্ঠানিকতা, দীর্ঘসূত্রতা, নিয়ম-কানুনের কড়াকড়ি ও বাড়াবাড়ি বোঝাতে লালফিতার দৌরাত্ম্য কথাটির ব্যবহার শুরু হয়। ফলে সমস্যা সমাধানে বিধি মোতাবেক যথাযোগ্য নিয়মে অগ্রসর হতে গিয়ে সমস্যা আরো জটিল হয়। জনগণের চাওয়া-পাওয়া, আবেদন লালফিতার বাঁধনে আটকা পড়ে থাকে।
৬। ক) জাতি বলতে বোঝায় এমন এক রাজনৈতিক চেতনাসম্পন্ন জনসমাজ, যারা স্বাধীন বা স্বাধীনতাকামী। অন্য ভূগন্ডে বসবাস করতে পারে।
খ) জাতীয়তা নাগরিকত্বের ভিত্তিতে নিরূপিত হয়। জাতীয়তা ও নাগরিকত্ব একটি অপরটির পরিপূরক হলেও নাগরিকত্ব ব্যতীত জাতীয়তা অর্জন সম্ভব নয়। জাতীয়তা একটি দেশের ভূখণ্ডভিত্তিক,
৭। ক) উক্তিটি করেছেন অধ্যাপক ক্লিন্টন বুথ সিলি।
খ) পৌরনীতি নাগরিকের রাষ্ট্রের প্রতি দায়িত্ব-কর্তব্য পালন, অধিকার গ্রহণ ও রাষ্ট্রীয় কাজে অংশগ্রহণ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করে। তাই নাগরিকের গণতান্ত্রিক চেতনা বৃদ্ধিতে পৌরনীতি পাঠ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে জনগণের দেশকে ভালোবাসার শিক্ষা, রাজনৈতিক সচেতনতা বৃদ্ধি, সুনাগরিকতার শিক্ষা লাভসহ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার বিভিন্ন বিষয় পৌরনীতি পাঠের মাধ্যমে জানা সম্ভব। গণতন্ত্রকে সফল করতে হলে সর্বাগ্রে প্রয়োজন সচেতন নাগরিক আর নাগরিকের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ, যা একজন নাগরিক পৌরনীতি পাঠ করে আয়ত্ত করতে পারে।
৮। ক) আইনের শাসন বলতে আইনের প্রাধান্য স্বীকার করা, আইনানুযায়ী শাসন করা ও সবার জন্য একই প্রকার আইনের ব্যবস্থা থাকা।
খ) সরকারের জবাবদিহি বলতে জনগণের কাছে সরকারের দায়বদ্ধতা বা দায়িত্বশীলতাকে বোঝায়। রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে সরকার থেকে শুরু করে প্রশাসনের সব স্তরে জবাবদিহি বা দায়বদ্ধতার নীতি প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে শাসন বিভাগ বা মন্ত্রিসভাকে আইনসভার কাছে তাদের গৃহীত নীতি, সিদ্ধান্ত ও কাজের জন্য জবাবদিহি করতে হবে। এভাবেই পর্যায়ক্রমে রাষ্ট্রের প্রশাসন ব্যবস্থার বিভিন্ন পর্যায়ে সরকারের জবাবদিহি নিশ্চিত করা সম্ভব।
৯। ক) গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে যেসব চিন্তাভাবনা, লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও সংকল্প মানুষের গণতান্ত্রিক আচার-ব্যবহার ও কর্মকাণ্ডকে নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত করে, তাকে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ বলে।
খ) সাম্য বলতে সেই পরিবেশকে বোঝায়, যেখানে জাতি-ধর্ম-বর্ণ, নারী-পুরুষ-নির্বিশেষে সব নাগরিকের সমান সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হয় এবং সবাইকে সমানভাবে আত্মবিকাশের সুযোগ করে দেওয়া হয়।
সাম্য গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রাণস্বরূপ। আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ‘সকল নাগরিক সমান’—এ আদর্শ বাস্তবায়নের চেষ্টা করে। গণতন্ত্র বাস্তবায়ন করতে হলে সাম্য প্রতিষ্ঠা করা ছাড়া বিকল্প নেই। গণতন্ত্রকে সফল করতে সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও আইনগত সাম্যসহ সব ধরনের সাম্য প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন। তাই বলা যায়, সাম্য ছাড়া গণতন্ত্র অর্থহীন।
১০। ক) সমাজজীবনকে সুন্দর ও সুশৃঙ্খলভাবে গড়ে তোলার জন্য নাগরিকরা যেসব কর্তব্য পালন করে সেগুলোকে সামাজিক কর্তব্য বলে।
খ) মানবজীবনে যেসব সুযোগ-সুবিধা ভোগের দাবিদার হয় এবং যা ছাড়া তার ব্যক্তিত্ব বিকশিত হয় না, সেগুলোকেই মানবাধিকার বলা হয়।
মানবাধিকার অধিকারেরই একটি বিস্তৃত রূপ, যা জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। মানুষ স্বাধীন হয়ে জন্মগ্রহণ করে এবং জন্মগতভাবেই সম-অধিকার ও সমমর্যাদাসম্পন্ন। সুতরাং মানবাধিকার বলতে সেই সব অধিকারকে বোঝায়, যা পৃথিবীর সব মানুষ শুধু মানুষ হিসেবে দাবি করতে পারে। মানবাধিকার কোনো দেশ বা কালের সীমানায় আবদ্ধ নয়, সব দেশের, সব কালের।
১১। ক) জাতীয়তার চেতনায় উদ্বুদ্ধ মানুষের মধ্যে যে ঐক্যের সৃষ্টি হয়, তাকেই জাতীয়তাবোধ বলে।
খ) কোনো বিশেষ নেতা যখন তাঁর বক্তব্য ও কাজ দ্বারা জনগণকে ভীষণভাবে সম্মোহিত, অনুপ্রাণিত ও উদ্বুদ্ধ করতে সক্ষম হন, তখন সেই নেতৃত্বকে সম্মোহনী নেতৃত্ব বা জাদুকরী নেতৃত্ব বলা হয়। সাধারণত সফল রাজনৈতিক নেতৃত্বই সম্মোহনী নেতৃত্বের অধিকারী হয়। সম্মোহনী নেতৃত্বের ভূমিকা জনগণকে মুগ্ধ ও আবেগাপ্লুত করে তোলে। এ ধরনের নেতৃত্বের মাধ্যমে কোনো নেতা তাঁর বক্তব্য, ব্যক্তিত্ব, দূরদৃষ্টি, চারিত্রিক দৃঢ়তা, সাহসিকতা, বুদ্ধিমত্তা, নিরপেক্ষতাসহ নেতৃত্বের অন্য গুণাবলির দ্বারা জনগণকে তাঁর প্রতি আনুগত্য প্রকাশে অনুপ্রাণিত ও উদ্বুদ্ধ করতে পারেন।