সোমবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

বাংলা বানানের পাঁচটি নিয়ম




প্রশ্ন : বাংলা একাডেমি প্রবর্তিত প্রমিত বাংলা বানানের ছয়টি নিয়ম উদাহরণসহ লেখো।
অথবা, বাংলা একাডেমি প্রণীত আধুনিক বাংলা বানানের পাঁচটি নিয়ম উদাহরণসহ লেখো।



উত্তর : বানান ব্যাকরণের একটি বিবর্তনশীল অধ্যায়। নানা বিবর্তনের মধ্য দিয়ে বাংলা বানান আজকের পর্যায়ে এসেছে। বানানের এই পরিবর্তনের ধারায় বাংলা একাডেমি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। বাংলা একাডেমি প্রবর্তিত প্রমিত বাংলা বানানের নিয়ম থেকে ছয়টি নিয়ম নিচে উল্লেখ করা হলো :

ক. তৎসম শব্দের বানান অপরিবর্তিত থাকবে। যেমন : চন্দ্র, সূর্য, নদী, ভাষা ইত্যাদি।

খ. যেসব তৎসম শব্দের বানানে ই এবং ঈ বা এদের কার চিহ্ন অথবা উ এবং ঊ বা এদের কার চিহ্নের উভয় রূপই শুদ্ধ, সেসব শব্দের বানানে কেবল শুধু ই এবং উ বা এদের কার চিহ্ন বসবে। যেমন : বাড়ি, উনিশ ইত্যাদি।

গ. তৎসম এবং অতৎসম শব্দে কোথাও রেফের পরে দ্বিত্ব হবে না। যেমন : অর্জন, অর্চনা, ধর্ম, কীর্তন ইত্যাদি।

ঘ. শব্দের শেষে বিসর্গ থাকবে না। যেমন : ক্রমশ, প্রায়শ, মূলত ইত্যাদি।

ঙ. সন্ধি দ্বারা গঠিত শব্দে ক খ গ ঘ এর আগে ং এবং ঙ দুটোই শুদ্ধ। যেমন : অহঙ্কার/অহংকার, সঙ্গীত/সংগীত ইত্যাদি।

চ. নঞর্থক অব্যয় পদ আলাদাভাবে বসবে। যেমন : জানি না, দেখি নি ইত্যাদি।

ছ. রেফের পর ব্যঞ্জনবর্ণের দ্বিত্ব হবে না। যেমন—অর্জন, কর্ম, কার্য, সূর্য ইত্যাদি।

জ. বাংলা ক্রিয়াপদের আন্তঃস্থিত ন ণ হয় না। যেমন—হবেন, মারেন, যাবেন, করেন, খাবেন ইত্যাদি।

ঝ. ভাষা ও জাতির নামের শেষে ই-কার হবে। যেমন- বাঙালি, ইংরেজি, জাপানি ইত্যাদি।




১। প্রশ্ন : উচ্চারণরীতি কাকে বলে? বাংলা ভাষা উচ্চারণের চারটি নিয়ম লেখো।

উত্তর : শব্দের যথাযথ উচ্চারণের জন্য নিয়ম বা সূত্রের সমষ্টিকে উচ্চারণরীতি বলে।
(ক) শব্দের আদ্য ‘অ’-এর পরে ‘য’ ফলা যুক্ত ব্যঞ্জনবর্ণ থাকলে সে ক্ষেত্রে ‘অ’-এর উচ্চারণ সাধারণত ‘ও’ কারের মতো হয়। যেমন-অদ্য (ওদেদা), কন্যা (কোন্না) ইত্যাদি।
(খ) পদের মধ্যে কিংবা শেষে ব-ফলা থাকলে সংযুক্ত বর্ণের উচ্চারণদ্বিত্ব ঘটে থাকে। যেমন—বিশ্ব (বিশেশা), পক্ক (পকেকা) ইত্যাদি।
(গ) যুক্ত ব্যঞ্জনবর্ণের সংযুক্ত ম-ফলার উচ্চারণ হয় না। যেমন-সূক্ষ্ম (শুকেখা), যহ্মা (জক্খাঁ) ইত্যাদি।
(ঘ) পদের মধ্যে কিবা অন্ত্যে যুক্ত ব্যঞ্জনবর্ণের সঙ্গে য-ফলা যুক্ত হলে সাধারণত তার উচ্চারণ হয় না। যেমন—সন্ধ্যা (শোন্ধা), স্বাস্থ্য (শাসেথা) ইত্যাদি।
(ঙ) শব্দের মাঝে বা শেষে ‘ক্ষ’-এর উচ্চারণ ‘ক্খ’ হয়ে থাকে। যেমন—দক্ষতা (দোকেখাতা), পক্ষ (পোকেখা) ইত্যাদি।.