সোমবার, ২ এপ্রিল, ২০১৮

ণত্ববিধান ষত্ব বিধান কাহাকে বলে

◼️প্রশ্ন: ণত্ব-বিধান বলতে  কী বোঝ ণত্ব-বিধানের পাঁচটি নিয়ম লেখ ।
উত্তর: য়ে নিয়ম অনুসারে বাংলা ভাষায় ব্যাবহৃত সংস্কৃতিক  শব্দের বানানে ‘ন’  স্থানে মূধর্ন্য হয়  তাকে ণত্ব-বিধান বলে।
অর্থাৎ তৎসম শব্দের বানানে  ণ - ব্যাবহারের নিয়ম কে ণত্ব-বিধান বলে।

ণত্ব-বিধানের পাঁচটি নিয়ম
১.সাধারণভাবে তৎসম শব্দে ঋ ,র,ষ -এর  পর মূধর্ন্য হয়।
উদাহরণ- ঋণ, কারণ,মরণ,ভীষণ,ভাষণ ইত্যাদি।

২.র= র,ঋ ,রেফ  র্   ,ঋকার  ‍ৃ র-ফলা (্র্র) অথবা ক্ষ এর পরে য়দি  স্বরবর্ণ ,
ক-বর্গের ক খ গ ঘ ঙ  এবং প-বর্গের প ফ ব ভ ম আরও য য় হ,ং এই বর্গের যেকোন বর্ণ আস  ে। তবে তার পরেও  ণ হবে।
উদাহরণ- অপরাহ্ণ,পরিবহণ,রক্ষিণী, রোণপ , কৃপণ ,গৃহিণী ,অর্পণ, চর্বণ, পার্বণ, পূর্বাহ্ণ, অগ্রহায়ণ ,গ্রহণ ইত্যাদি।

৩. ট -বর্গের  ট ঠ ড ঢ -এই চারটি বণের পূর্বে যদি ন ধ্বণি থাকে এবং ন সহযোগে যদি যুক্তবর্ণ তৈরি  হয়  তা হলে সর্বদা মূর্ধন্য হবে । যেমন-কণ্টক, ঘণ্টা, কণ্ঠ,দণ্ড ইত্যাদি।

৪.উত্তর ,পর,পার,চান্দ্র,নার ,রাম,শব্দের পরে অনয়  শব্দ যোগ হলে  দন্তন্য পাল্টে মূর্ধন্য হবে
উদাহরণ
উত্তর+ অয়ন=উত্তরায়ণ
পর+ অয়ন= পরায়ণ
পার+অয়ন= পারায়ণ
চান্দ্র+অয়ন=চান্দ্রায়ণ
নার +অয়ন=নারাযণ
রাম+অয়ণ=রামায়ণ

৫.পরি, প্র, নির --এ তিনটি উপসর্গের পর ণত্ব-বিধানে নিয়ম অনুসারে   ‘ন’  ‘ণ’  তে  পরিণত হয়।
পরিণত, পরিণাম , প্রনয়ণ, প্রমাণ ইত্যাদি।

৬.বিদেশি শব্দের বানানে  ণত্ব-বিধান প্রযোজ্য হয় না। উদাহরণ -অ্যাকাউন্ট,এজেন্ট,টেন্ডার ,বন্ড ইত্যাদি।

◼️ ষত্ব-বিধান  কাকে বলে ? বাংলা ভাষায় ষত্ব-বিধানের  পাঁচটি নিয়ম উদাহরণসহ লেখ।
উত্তর: ষত্ব-বিধান: যে রীতি অনুসারে বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত তৎসম বা সংস্কৃত শব্দের বানানে মূর্ধন্য  ‘ষ’  ব্যবহৃত হয়  তাকে ষত্ব বিধান বলে ।

ষত্ব-বিধানের পাঁচটি নিয়ম :

১.ঋ বা ‘ঋ’ কারের পরে মূর্ধন্য  ‘ষ’ হয়  যেমন: ঋষভ, কৃষক,বৃষ  ইত্যাদি

২.রেফ এর পর মূর্ধন্য  -ষ  হবে যেমন - বর্ষা, বার্ষিক , বিমর্ষ ,শীর্ষ ইত্যাদি

৩. ট ,ঠ -এই দুইটি বর্ণের পূর্বে সর্বদা ‘ষ’ হবে । যেমন : অনিষ্ট , অকৃষ্ট , তুষ্ট ,দুষ্ট , নষ্ট, নির্দিষ্ট , অনুষ্ঠান ,ওষ্ঠ ,  কনিষ্ঠ, কাষ্ঠ,কোষ্টী , জেষ্ঠ  ,জৈষ্ঠ্ ,পৃষ্ঠ ,বলিষ্ঠ , ভূমিষ্ঠ ,শ্রেষ্ঠ  ইত্যাদি।

৪. ই-কারান্ত  উ-কারান্ত  উপসর্গের পরে কতগুলো ধাতুতে ‘ষ’  হবে। অভিষেক ,অনুষঙ্গ, প্রতিষেধক, অনুষ্ঠান , বিষম ,সুষমা  ইত্যাদি।

৫. ক  খ  প  ফ  এদের  আগে ইঃ (ঃি ) অথবা  উঃ (বা ‍ু ঃ ) থাকলে সন্ধির ফলে বিসর্গের জায়গায় সর্বদা   ‘ষ’   হবে । যেমন:
অবিঃ+কার =আবিষ্কার
দুঃ+কর   =দুষ্কর
নিঃ+ফল  =নিষ্ফল
৬. ট ঠ - এই  দুটি  মূর্ধন্য বর্ণের পূর্বে সর্বদা   ষ  হবে ; অর্থাৎ . যুক্তাক্ষরের রূপ হবে  ষ্ট/ষ্ঠ । যেমন: অনিষ্ট অপচেষ্টা চেষ্টা .অনুষ্ঠান, লগিষ্ঠ শ্রেষ্ঠ

-------🌿------