মানুষ চায় তার যৌবন ধরে রাখতে কিন্তু প্রকৃতির নিয়ম অনুযায়ী জন্মিলে মরিতে হবে এটা সবারই জানা আছে । তবুও মানুষ তার যৌবন ধরে রাখার জন্য কত কিছুই না করে,যে সকল খা্দ্যাভাসের কারনে মানুষ সহজে বুড়িয়ে যার তা এখানে দেওয়া হল । যে সকল খাবার আমাদের বয়সকে সহজে বাড়িয়ে দেয় তাহা নিচে দেওয়া হল ।
১ মিষ্টি:
অতিরিক্ত মিষ্টি বা চিনি গ্রহণ করার ফলে চিনির অণুর সঙ্গে প্রোটিনের মিশ্রণে একটি বিশেষ প্রক্রিয়া শুরু হয়, যাকে বলা হয় গ্লাইকেশন। আর এই প্রক্রিয়া ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। এজন্য অতিরিক্ত মিষ্টি খাওয়ার অভ্যাসের কারণে ত্বকে বয়সের ছাপ পড়তে পারে।
শুধু ত্বক নয়, দাঁতের জন্যও মিষ্টি ক্ষতিকর। চিনির কণা দাঁতের সঙ্গে আটকে থাকে, আর সেখান থেকে ব্যাকটেরিয়া জন্মায়, দাঁত ক্ষয় করে আর বিবর্ণ করে দেয়। তাই মিষ্টিজাতীয় খাবার খাওয়ার পর পানি দিয়ে মুখের ভেতর ভালোভাবে পরিষ্কার করুন।
২ অ্যালকোহল :
সুন্দর ত্বকের জন্য চাই সুস্থ যকৃত বা লিভার। শরীরের বিষাক্ত পদার্থ বের করে দিতে কাজ করে সুস্থ লিভার। যদি লিভারে বিষাক্ত পদার্থ জমতে থাকে আর ঠিক মতো শরীর থেকে বের করতে না পারে তখন তকে ব্রণ, ফুষ্কুড়ি দেখা দেয়। আর অ্যালকোহল লিভারের কার্যক্রমে বাধা দেয়।
তাছাড়া অ্যালকোহল ঘুমের ব্যঘাত ঘটায়। আর অপর্যাপ্ত ঘুমের কারণেও ত্বকের উপর বয়সের ছাপ পড়তে পারে।
৩ লবনাক্ত খাবার :
লবণ দিয়ে প্রতিটি খাবারই রান্না করা হয়। তবে খাবারে অতিরিক্ত লবণ ত্বকের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। কিছু কিছু টিনজাত খাবার সংরক্ষণ করতে সোডিয়াম ব্যবহার করা হয়। যা শরীরে অতিরিক্ত পানি ধরে রাখাতে সাহায্য করে। ফলে ত্বকে কিছুটা ফোলাভাব দেখা দিতে পারে।
৪.প্রক্রিয়াজাত মাংস :
সসেজ, বেকন, প্যাটি ইত্যাদি প্রক্রিয়াজাত মাংস খেতে দারুণ মজা। তবে এই মাংসগুলো প্রক্রিয়জাত করতে ব্যবহার করা হয় সালফাইট এবং অন্যান্য প্রিজারভেটিভ। আর ওই উপাদানগুলো ত্বকের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
এসব খাবারকে বিদায় জানাতে না পারলে, অন্তত কম খান। পাশাপাশি বেশি করে সবজি খাওয়ার চেষ্টা করুন।
৫ .রেড মিট :
চর্বিযুক্ত মাংস বেশি খাওয়া খারাপ। এ কথা আমরা সবাই জানি। কারণ রেড মিট বেশি খেলে বা প্রতিদিন গরুর মাংস খাওয়ার অভ্যাস থাকলে কোষ গঠণে বাধা প্রাপ্ত হয়। যা ত্বকের উপরেও প্রভাব ফেলে।
৬ .কফি :
সারাদিনের অবসাদ দূর করতে কফির জুড়ি নেই। তবে ত্বকে বয়সের ছাপ ফেলতে পারে কফির ক্যাফেইন। তাছাড়া দাঁতের জন্যও ক্ষতিকর কফি। তবে কফির অনেক উপকারও আছে। এরমধ্যে অন্যতম হল কফি স্কিন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।
তাই এই ধরনের পানীয় গ্রহণের কিছুক্ষণ পর পানি পান করার অভ্যেস করুন। ক্যাফেইন ধরনের পানীয়তে যে ক্ষার থাকে তা ধুয়ে দিবে পানি।
অকালে চেহারায় বার্ধক্যের ছাপ পড়ার আরও কিছু কারণ-
মানসিক চাপ: ঘরে বাইরে আজকাল প্রায় সবারই মানসিক চাপ একটু বেশি। কিন্তু এই মানসিক চাপ মস্তিষ্কের ক্ষতি করে। অল্পতেই অতিরিক্ত অস্থির হয়ে পড়া, মানসিক চাপ নেওয়া মস্তিষ্কের স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা নষ্ট করে যা বয়সের সঙ্গে সঙ্গে হয়ে থাকে। দুশ্চিন্তা থাকবেই, সবকিছুর সঙ্গে মানিয়ে চলার চেষ্টা করুন, স্বাভাবিকভাবে নিয়ে দুশ্চিন্তামুক্ত রাখুন নিজেকে।
রোদে ঘোরাঘুরি: সূর্যের অতিবেগুণী রশ্মি ত্বকের যতোটা ক্ষতি করে অন্য কোনো কিছুই এতোটা ক্ষতি করতে পারে না। আপনি যদি সানস্ক্রিন না লাগিয়ে বেশি রোদে ঘোরাঘুরি করেন তাহলে বয়স ৩০ পার হতে না হতেই ত্বকে দেখা দেবে বয়সের ছাপ। এছাড়াও সানগ্লাস ব্যবহার না করার কারণে দৃষ্টিশক্তিরও সমস্যা দেখা দেয়।
খাদ্যাভ্যাস: বাইরের তেলেভাজা খাবার ফাস্ট ফুড এই সবই ত্বকের বয়স বাড়ানোর জন্য দায়ী খাবার। চিনি জাতীয় খাবারের কারণেই ত্বক হারাচ্ছে ইলাস্টিসিটি। যার কারণে বুড়িয়ে যাচ্ছে মানুষ। কোমল পানীয় পানের অভ্যাস থাকলে জেনে রাখুন, নিজের হাতেই ক্ষতি করছেন দাঁত ও হাড়ের। এতে অকালেই বার্ধক্য আসছে শরীরে।
ধূমপান ও মদ্যপান: অতিরিক্ত ধূমপান ও মদ্যপান করার অভ্যাস রয়েছে অনেকেরই। কিন্তু ধূমপান ও মদ্যপানের ফলে দেহ ও ত্বক দুটোরই বয়স বেড়ে যাচ্ছে অনেক। গবেষণায় দেখা যায়, যারা নিয়মিত ধূমপান করেন তাদের প্রতিবছরে দেহের যতোটা ক্ষয় হয় তা সাধারণত ৫ বছরে হয়ে থাকে। মদ্যপানের ফলাফল প্রায় একই রকম। মানুষ নিজেই নিজেকে বার্ধক্যের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
পরিশ্রম না করা: গবেষণায় জানা যায় প্রতিবছর ধূমপানের ও মদ্যপানের কারণে যতো মানুষ মৃত্যুবরণ করেন ঠিক ততো মানুষই অলসতা ও অপরিশ্রমী হওয়ার জন্য করে থাকেন। শুনতে অবাক শোনালেও এটি সত্যি। শারীরিক পরিশ্রম করার মাধ্যমে নানা রোগ ও শারীরিক সমস্যা দেহে বাসা বাঁধতে পারে না। কিন্তু দেহে অলসতা থাকলে কিংবা বসা কাজের কারণে শারীরিক পরিশ্রম না করতে দেহ বার্ধক্যের দিকে যেতে থাকে। উপুড় হয়ে ঘুমানো: অনেকেরই এই অভ্যাস রয়েছে। কিন্তু উপুড় হয়ে ঘুমানে মুখ বেকায়দাভাবে বালিশের ওপর থাকে যা ত্বকে রিংকেল পড়ার অন্যতম প্রধান কারণ।
এতে করে অল্প বয়সেই আপনাকে বেশ বয়স্ক মনে হয়। এছাড়াও খাবার হজমে সমস্যা এবং মেরুদণ্ডের ক্ষতি তো রয়েছেই। তাই সাবধান হওয়া বিশেষ প্রয়োজন।