শুক্রবার, ৪ মে, ২০১৮

সারাংশ

রংপরিবর্তন >>

সারাংশ সারমর্ম
গল্প-কবিতা ছোট-বড় আকারে থাকতে পারে। কোনো কিছু বোঝাতে গিয়ে নানা প্রসঙ্গ আসতে পারে, বাক্যের সংখ্যাও বাড়তে পারে। গল্প বা কবিতা যত বড়ই হোক, এর মূল ভাব কিন্তু ছোট। সহজ ও সাবলীল ভাষায় গল্প বা কবিতাকে সংক্ষেপ করা বা এর অন্তর্নিহিত ভাব লেখাই হলো পুরো ঘটনার সারমর্ম বা সারাংশ।গদ্যের ভাবসংক্ষেপ হলো সারাংশ আর পদ্যের ভাবসংক্ষেপ সারমর্ম।

কিছু কায়দা-কানুন জানা থাকলে সারাংশ কিংবা সারমর্ম ঠিকঠাক লেখা যাবে। এর জন্য যা যা করতে হবে—

পড়ো-বুঝো
সারমর্ম বা সারাংশ লেখার সময় অনুচ্ছেদের কথা বা বাক্য লিখে দিলে চলবে না। আগে মূল ভাব বুঝতে হবে, এরপরই সাজিয়ে সংক্ষেপে লিখতে হবে। কবিতা, গদ্য বা রচনা খেয়াল করে পড়লেই মূল ভাব আঁচ করা যাবে। অর্থাৎ ভালোভাবে পড়লেই মূল বিষয়বস্তু বোঝা যাবে।

মূল ভাব একাধিক হলে
কোনো কোনো সময় রচনায় একাধিক মূল ভাব বা বক্তব্যও থাকতে পারে। যদি এমনটি হয়, তাহলে আসল মূল ভাব বোঝার সহজ উপায় হলো—রচনার বাক্যগুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ লাইনগুলো শনাক্ত করা। এরপর বাক্যগুলোর সঙ্গে কোন ভাবটি বেশি কাছাকাছি তা যাচাই করা।

দরকারি-অদরকারি অং কোন বাক্যগুলো দরকারি, কোনগুলো অদরকারি—সেগুলো আলাদা করতে হবে। তাহলে কাজটা সহজ হবে। মূল রচনার যে অংশটা প্রশ্নে থাকবে, সেখানে উল্লিখিত উদ্ধৃতি, বর্ণনা, সংলাপ, উদাহরণ, উপমা বাদ দিতে হয়। লেখার গণ্ডি
সারমর্ম কিংবা সারাংশ বড় করে লেখার সুযোগ নেই। আর লেখার গণ্ডি অবশ্যই রচনার মূল ভাবের মধ্যেই যেন সীমিত থাকে। এখানে নিজের ইচ্ছামতো কোনো মন্তব্য বা মতামত লেখা যাবে না।

একদা ছিল না জুতা চরণ যুগলে
দহিল হৃদয় মম সেই ক্ষোভানলে
ধীরে ধীরে চুপি চুপি দুঃখাকুল মনে
গেলাম ভজনালয়ে ভজন কারণে।
সেথা দেখি এক জন পদ নাহি তার
অমনি জুতার খেদ ঘুচিল অমার।
পরের দুঃখের কথা করিলে চিন্তন
নিজের অভাব ক্ষোভ থাকে কতক্ষণ।

সারর্মম:পদহীন দুঃখীজনের কথা চিন্তা করলে পায়ে জুতা না থাকার দৈন্য মনে স্থান পায় না । অসলে পরের দুঃখ কষ্টকে উপলব্ধি করার মাঝেই জীবনের প্রকৃত সার্থকতা নিহিত।

কোথায় স্বর্গ ? কোথায় নরক ? কে বলে তা বহুদূর ?
মানুষরেই মাঝে স্বর্গ-নরক ,মানুষেতেই সুরাসুর।
রিপুর তাড়নে যখনি মোদের বিবেক পায় গো লয়
আত্নগ্লানির নরক অনলে থখনি পুড়িতে হয় ।
প্রীতি ও প্রেমের পুণ্য বাঁধনে যবে মিলি পরস্পরে,
স্বর্গ আসিয়া দাঁড়ায় তখন আমাদের কুঁড়েঘরে।

সারমর্ম:- এই পৃথিবীতে মানুষের মাঝেই স্বর্গ ও নরক বিদ্যমান । বিবেকবর্জিত মানুষ পৃথিবীতেই নরক যন্ত্রণা ভোগ করে , আর যারা ভালোবাসা ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে চলে তাদের কাছে পৃথিবীটাই স্বর্গ।

অতীতকে ভুলে যাও। অতীতের দুশ্চিন্তার ভার অতীতকেই নিতে হবে। অতীতের কথা ভেবে ভেবে অনেক বোকাই মরেছে। আগামীকালের বোঝার সঙ্গে মিলে আজকের বোঝা সবচেয়ে বড় হয়ে দাঁড়ায়। ভবিষ্যৎকেও অতীতের মতো দৃঢ়ভাবে দূরে সরিয়ে দাও। আজই তো ভবিষ্যৎ-কাল বলে কিছু নেই। মানুষের মুক্তির দিন তো আজই। ভবিষ্যতের কথা যে ভাবতে বসে সে ভোগে শক্তিহীনতায়, মানসিক দুশ্চিন্তায় ও স্নায়ুবিক দুর্বলতায়। অতএব অতীতের এবং ভবিষ্যতের দরজায় আগল লাগাও, আর শুরু করো দৈনিক জীবন নিয়ে বাঁচতে।

সারাংশ:মানুষের জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় হলো বর্তমান। অতীত এবং ভবিষ্যতের ভাবনা মানুষের জীবনে কোনো সুফল বয়ে আনে না। বরং তা মানুষকে শক্তিহীন, দুশ্চিন্তাগ্রস্ত এবং স্নায়ুবিকভাবে দুর্বল করে তোলে। তাই জীবনকে সফল করে তুলতে হলে অতীত ও ভবিষ্যতের চিন্তা ঝেড়ে ফেলে বর্তমানকে গুরুত্ব দিতে হবে।

সারাংশ রচনা ,ভাবসম্প্রসারন,চিঠি-পত্র