শুক্রবার, ১৩ এপ্রিল, ২০১৮
শুভেচ্ছা বার্তা
সোমবার, ৯ এপ্রিল, ২০১৮
কবিতা
গেয়র্গ ট্রাকলের কবিতা
রাজু আলাউদ্দিন অনুদিত
বাতায়নের সামনে সাদা তুষার ঝরে পরে ,
অনেকেরই জন্য টেবিল সাজিয়ে রাখা আছে,
ঘরের মধ্যে অথৈ আয়োজন।
তমসাময় পথের মাথায় এসে
প্রবেশ করে অনেক পান্থজন
এই পৃথিবীর শীতল রস থেকে
দয়াাময়ী বৃক্ষ ফোটায় সোনালী সম্ভার।
শান্ত পায়ে পান্থ প্রবেশ করে;
প্রবেশ-পথ তীব্র ব্যথায় অসাড় হয়ে আছে।
দিব্য আলোর টেবিলে ওই রুটি এবং মদ
দীপ্ত হেয়ে ওঠে।
ট্রাম্পেট
মুণ্ড- ছাট উইলোর নীচে খেলে বাদামী শিশুরা
উইলোর মাথা জুড়ে সতুন পাতার উদগম,
ট্রাম্পেটের সুর ভেসে যায় ।
কেঁপে ওঠে চার্চ -প্রাঙ্গন।মেপল বৃক্ষের বিলাপের মধ্যে দিয়ে
গাঢ় লাল পতাকারা আলোড়িত হয়,
বাইরে মাঠের কাছে অশ্বারোহীরা ,
ঘানিগুলো শুন্য পরে আছে।
কিংবা রাতের বেলা গান গায় মেষপালকেরা ,
ঘুম
অভিশপ্ত কালো বিষ , তুমি,
সাদা ঘুম।
সন্ধ্যার আবরণে বিরল বাগানগুলো
বাদুর , ঊর্ণনাভ,
রাত্রির পোকা আর বিষাক্ত সাপের দখেলে।
আগন্তুক,সূর্যাস্তের রক্তিমাভায়
তোমার হারানো ছায়া।
বেদনার লোনা দরিয়ায়
বিষন্ন জাহাজ।
অয়োময় বিধ্বস্ত নগরীর উপর দিয়ে
রাত্রির শেষে দিকে সাদা পাখি
উড়ে চলে যায়।
ধ্বনি বর্ণ
ভাষার মৌলিক উপাদান হল ধ্বণি। ভাষা হচ্ছে বাগযন্ত্রের সাহায্যে উচ্চারিত ধ্বনির সমষ্টি।
ধ্বণি এবং বর্ণ
আমরা যখন কথা বলি ধ্বনি সাজিয়ে আর আমরা যখন কাগজে লিখি বর্ণের পর বর্ণ সাজিয়ে ।অর্থাৎ বর্ণের মাধ্যমে ভাষার শব্দ চিত্ররূপে অঙ্কিত করা হয়।
বর্ণ: যে সাব প্রতীক বা চিহ্ন দিয়ে ধ্বনি নির্দেশ করা হয় তাকে বর্ণ বলে।
বর্ণমালা : বাংলা ভাষায় যতগুলো বর্ণচিহ্ন রহিয়াছে তাদের কে একত্রে বর্নমালা বলা হয়।
যে সমস্ত বর্ণ বাংলা স্বরধ্বণিগুলিকে উপস্থাপিত করে তারা স্বরবর্ণ তেমনি যে সকল বর্ণ ব্যঞ্জনবর্ণ গুলিকে নির্দেশ করে তাকে ব্যঞ্জন বর্ণ বলে
প্রত্যেক ভাষার ব্যবহৃত ধ্বনিগুলিকে বিচার করলে কতগুলো ক্ষুদ্রতম অবিভাজ্য ধ্বনি একক পাওয়া যায়। এদের বলা হয় ধ্বনিমূল বা মৌলিক ধ্বণি
বাংলা ভাষায় ধ্বণি মূলকে দুটো ভাগে ভাগ করা যায় : ১ .স্বর ধ্বণি ২.ব্যঞ্জনধ্বনি যথাক্রমে-স্বরবর্ণ
ব্যাঞ্জনবর্ণ বলা হয়।
বাংলা বর্ণমালা :
১. স্বর বর্ণ: অ আ ই ঈ উ ঊ ঋ এ ঐ ও ঔ
২.ব্যঞ্জনবর্ণ:
ক খ গ ঘ ঙ
চ ছ জ ঝ ঞ
ট ঠ ড ঢ ণ
ত থ দ ধ ন
প ফ ব ভ ম
য র ল
শ ষ স হ
ড় ঢ় য়
ৎং ঃ ঁ
--------------------
মোট- ১১+৩৯= ৫০টি
বাংলা ভাষায় মাত্রা
রবিবার, ৮ এপ্রিল, ২০১৮
কবিতা
কবিতা
খাঁদু দাদু
..........কাজী নজরুর ইসলাম
ও মা! তোমার বাবার নাকে কে মেরেছে ল্যাং?
খ্যাঁদা নাকে নাচছে ন্যাদা- নাক ড্যাঙ্গা-ড্যাং- ড্যাং!
ওঁর নাকতাকে কে করল খ্যাঁদ্যা রাঁদা বুলিয়ে?
চামচিকে- ছা ব'সে যেন ন্যাজুড় ঝুলিয়ে।
বুড়ো গরুর টিকে যেন শুয়ে কোলা ব্যাং।
অ মা! আমি হেসে মরি, ন্যাক ডেঙ্গাডেং ড্যাং।
ওঁর খ্যাঁদা নাকের ছ্যাঁদা দিয়ে টুকি কে দেয় 'টু'!
ছোড়দি বলে সর্দি ওটা, এ রাম! ওয়াক! থুঃ!
কাছিম যেন উপুড় হয়ে ছড়িয়ে আছেন ঠ্যাং!
অ মা! আমি হেসে মরি, ন্যাক ডেঙ্গাডেং ড্যাং।
দাদু বুঝি চিনাম্যান মা, নাম বুঝি চাং চু,
তাই বুঝি ওঁর মুখটা অমন চ্যাপটা সুধাংশু।
জাপান দেশের নোটীশ উনি নাকে এঁটেছেন!
অ মা! আমি হেসে মরি, ন্যাক ডেঙ্গাডেং ড্যাং।
দাদুর নাকি ছিল না মা অমন বাদুড়- নাক
ঘুম দিলে ঐ চ্যাপটা নাকেই বাজতো সাতটা শাঁখ।
দিদিমা তাই থ্যাবড়া মেরে ধ্যাবড়া করেছেন!
অ মা! আমি হেসে মরি, ন্যাক ডেঙ্গাডেং ড্যাং।
লম্ফানন্দে লাফ দিয়ে মা চলতে বেঁজির ছা
দাড়ির জালে প'ড়ে দাদুর আটকে গেছে গা,
বিল্লি- বাচ্চা দিল্লি যেতে নাসিক এসেছেন!
অ মা! আমি হেসে মরি, ন্যাক ডেঙ্গাডেং ড্যাং।
দিদিমা কি দাদুর নাকে টাঙাতে 'আলমানাক'
গজাল ঠুঁকে দেছেন ভেঙ্গে বাঁকা নাকের কাঁখ?
মুচি এসে দাদুর আমার নাক করেছেন 'ট্যান'!
অ মা! আমি হেসে মরি, ন্যাক ডেঙ্গাডেং ড্যাং।
বাঁশির মতন নাসিকা মা মেলে নাসিকে,
সেথায় নিয়ে চল দাদু দেখন -হাসিকে!
সেথায় গিয়ে করুন দাদু গরুড় দেবের ধ্যান,
খাঁদু দাদু নাকু হবেন, নাক ডেঙ্গাডেং ড্যাং।
তোমারে পড়িছে মনে - প্রেমের কবিতা, বিরহের কবিতা
- কাজী নজরুল ইসলাম
তোমারে পড়িছে মনে
তোমারে পড়িছে মনে
আজি নীপ-বালিকার ভীরু-শিহরণে,
যুথিকার অশ্রুসিক্ত ছলছল মুখে
কেতকী-বধূর অবগুন্ঠিত ও বুকে-
তোমারে পড়িছে মনে।
হয়তো তেমনি আজি দূর বাতায়নে
ঝিলিমিলি-তলে
ম্লান লুলিত অঞ্ছলে
চাহিয়া বসিয়া আছ একা,
বারে বারে মুছে যায় আঁখি-জল-লেখা।
বারে বারে নিভে যায় শিয়রেরে বাতি,
তুমি জাগ, জাগে সাথে বরষার রাতি।
সিক্ত-পক্ষ পাখী
তোমার চাঁপার ডালে বসিয়া একাকী
হয়ত তেমনি করি, ডাকিছ সাথীরে,
তুমি চাহি' আছ শুধু দূর শৈল-শিরে ।।
তোমার আঁখির ঘন নীলাঞ্জন ছায়া
গগনে গগনে আজ ধরিয়াছে কায়া । ...
আজি হেথা রচি' নব নীপ-মালা--
স্মরণ পারের প্রিয়া, একান্তে নিরালা
অকারণে !-জানি আমি জানি
তোমারে পাব না আমি। এই গান এই মালাখানি
রহিবে তাদেরি কন্ঠে- যাহাদেরে কভু
চাহি নাই, কুসুমে কাঁটার মত জড়ায়ে রহিল যারা তবু।
বহে আজি দিশাহারা শ্রাবণের অশান্ত পবন,
তারি মত ছুটে ফেরে দিকে দিকে উচাটন মন,
খুঁজে যায় মোর গীত-সুর
কোথা কোন্ বাতায়নে বসি' তুমি বিরহ-বিধুর।
তোমার গগনে নেভে বারে বারে বিজলীর দীপ,
আমার অঙ্গনে হেথা বিকশিয়া ঝরে যায় নীপ।
তোমার গগনে ঝরে ধারা অবিরল,
আমার নয়নে হেথা জল নাই, বুকে ব্যথা করে টলমল।
আমার বেদনা আজি রূপ ধরি' শত গীত-সুরে
নিখিল বিরহী-কন্ঠে--বিরহিণী--তব তরে ঝুরে!
এ-পারে ও-পারে মোরা, নাই নাই কূল!
তুমি দাও আঁখি-জল, আমি দেই ফুল!
কাজী নজরুল ইসলাম
কাব্যগ্রন্থ - চক্রবাক
.