প্রচলিত ঘরোয়া চিকিৎসা
শীত কিংবা বাহিরের ধুলাবালির কারণে ঠাণ্ডা লেগে সর্দি কাশি ও বুকে কফ জমার মতো সমস্যায় ভুগছেন অনেকেই।খুব বেশী কফ জমে থাকার কারণে শ্বাসকষ্টও দেখা দেয়।তবে শুধু বড় মানুষরা না, বাচ্চারাও এই সমস্যার ভুক্তভুগী।
বুকে জমে থাকা এই কফ দূর করার জন্য রয়েছে কিছু অসাধারণ ঘরোয়া উপায়। চলুন, দেখে নেওয়া যাক -
আদা: বুকে জমে থাকা কফ দূর করতে আদা খুব ভালো কাজে দেয়। আদা চা কিংবা আদা পানি খেলে এই সমস্যার থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। আদা পানির জন্য এক গ্লাস গরম পানিতে আদা কুচি দিয়ে ফুটিয়ে নিন। পানি ভালোভাবে ফুটে উঠলে আদা ছেঁকে নিন এবং কুসুম গরম থাকা অবস্থায় খেয়ে ফেলুন।এছাড়া শুষ্ক কাশি এবং গলা খুসখুস ভাব কমানোর জন্য একটুকরো আদা মুখে নিয়ে রেখে দিতে পারেন।
লেবু ও মধুর সিরাপ: এক চামচ মধুর সাথে লেবুর রস ও দারুচিনি গুঁড়া মিশিয়ে একটি সিরাপ তৈরি করুন। যখনই গলা খুসখুস করবে বা কফের কারণে শ্বাস নিতে কষ্ট হবে তখনই এই সিরাপটি খেয়ে নিন। তাছাড়া কুসুম গরম পানিতে লেবু ও এক চামচ মধু মিশিয়ে খেলে গলা পরিষ্কার থাকে।
হলুদ: শুধু অ্যান্টিসেপ্টিক নয়, হলুদে আছে কারকিউমিন নামক উপাদান যা জমে থাকা কফ দ্রুত বের করতে সাহায্য করে।এতে থাকা অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান গলা ব্যথা, বুকে ব্যথা দূর করতে সাহায্য করে। তাই প্রতিদিন কুলকুচি করার জন্য এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে এক চিমটি হলুদের গুঁড়ো মিশিয়ে নিন।অথবা এক গ্লাস দুধে আধা চা চামচ হলুদের গুঁড়ো মিশিয়ে জ্বাল দিয়ে এর সাথে মধু মিশিয়ে খেয়ে নিন।
তরল খাবার: বুকে কফ জমে থাকার কারণে খাবারের কষ্ট হয়।তাই এই সময় বেশি করে তরল এবং গরম খাবার খেলে আরাম পাওয়া যায়। সারাদিন প্রচুর পানি, জুস, মুরগী ও সবজির স্যুপ বা তুলসী পাতার চা পান করুন।
গড়গড়া করা: গরম পানি দিয়ে গড়গড়া করলে গলা ব্যথা কমে যায়। এজন্য এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে আধা চা চামচ লবণ মিশিয়ে গড়গড়া করুন। এভাবে দিনে অন্তত তিনবার গড়গড়া করার চেষ্টা করুন। এটি কাশি কমাতে বেশ কার্যকর একটি ঘরোয়া উপায়।
গরম পানির ভাপ: ফুটন্ত গরম পানিতে মেন্থল দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। চুলা থেকে পানি নামিয়ে একটি বড় তোয়ালে দিয়ে মাথা ঢেকে নিন এবং ঘন ঘন শ্বাস নিন।এভাবে অন্তত ১০ মিনিট করে দিনে ২ বার ভাপ নিন। এতে বন্ধ থাকা নাক খুলে যাবে এবং বুকে জমে থাকা কফ বের হয়ে আসবে।
গরম দুধ: গরম দুধে মধু, হলুদ, গোলমরিচ মিশিয়ে খাওয়া বুক কফ জমা ও সর্দি-কাশি সারাতে অত্যন্ত উপকারী। হলুদে আছে ব্যাকটেরিয়া ও সংক্রমণ রোধকারী উপাদান, গোলমরিচ হজমে সাহায্য করে, সারায় কফ ও সর্দি। প্রতিদিন দুবার পান করতে হবে।
কুসুম গরম পানি পান: ঠাণ্ডা লাগলে কুসুম গরম পানি পান করলে গলায় আরাম হয়। বুকে জমা কফও সেরে উঠতে থাকে ক্রমেই। শ্বাসনালী ও বুকে জমে থাকা সর্দি গলিয়ে ফেলতে কুসুম গরম পানি অত্যন্ত কার্যকর।
মুরগী ও সবজির স্যুপ খান। তবে ঘন স্যুপের চাইলে পাতলা ও স্বচ্ছ স্যুপ খাওয়া ভালো।
গরম পানি দিয়ে গড়গড়া: বুকে জমা কফ ও গলার সমস্যা সারাতে এই পদ্ধতি সম্ভবত সবচাইতে বেশি প্রচলিত। এক গ্লাস গরম পানিতে আধা টেবিল-চামচ লবণ মিশিয়ে এক থেকে দুই মিনিট গড়গড়া করতে হবে। দিনে তিন থেকে চারবার পদ্ধতিটি অনুসরণ করলে বেশি উপকার মিলবে। তবে এই পানি গিলে ফেলা যাবে না।
চা: আদা, পুদিনা-পাতা, ক্যামোমাইল, রোজমেরি মিশিয়ে চা বানিয়ে পান করাও এক্ষেত্রে বেশ উপকারী। চিনির বদলে মধু ব্যবহার করলে মিলবে বাড়তি উপকার। চা ভালো না লাগলে আদা চিবিয়ে খেতে পারেন।
বাষ্প: পানিতে ইউক্যালিপ্টাস তেল মিশিয়ে তার বাষ্প নিশ্বাসের মাধ্যমে গ্রহণ করলে বুকে জমা কফ দূর করতে সাহায্য করবে। বাষ্প নেওয়ার সময় জোরে শ্বাস নিতে হবে, বন্ধ নাক ও বুকে জমা কফের অস্বস্তি থেকে আরাম মিলবে দ্রুত। ইউক্যালিপ্টাস তেলে আছে যন্ত্রণানাশক ও ব্যাকটেরিয়া রোধকারী উপাদান যা এতে সহায়ক।
ব্ল্যাক কফি: অস্বস্তি থেকে সাময়িক আরাম মেলে ব্ল্যাক কফি পান করলে। আর জমে থাকা সর্দি গলাতেও উপকারী। তবে দিনে দুই কাপের বেশি পান করা যাবে না, কারণ অতিরিক্ত ক্যাফেইন স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
পেঁয়াজের নির্যাস: এতে থাকা ‘কুয়ারসেটাইন’ সর্দি দূর করে এবং আবার জমতে বাধা দেয়, সংক্রমণ থেকেও বাঁচায়। পেঁয়াজের রস বের করে তাতে লেবুর রস, মধু ও পানি মিশিয়ে নিতে হবে। পরে কুসুম গরম করে পান করতে হবে প্রতিদিন তিন থেকে চারবার।
গরম পানির ভাপ : ফুটন্ত গরম পানিতে মেন্থল দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। চুলা থেকে পানি নামিয়ে একটি বড় তোয়ালে দিয়ে মাথা ঢেকে নিন এবং ঘন ঘন শ্বাস নিন। এভাবে অন্তত ১০ মিনিট করে দিনে ২ বার ভাপ নিন। এতে বন্ধ থাকা নাক খুলে যাবে এবং বুকে জমে থাকা কফ বের হয়ে আসবে।
অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার গলার কফ সরাতে অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার দারুন কাজ করে। এক কাপ কুসুম গরম পানিতে দুই চা চামচ বিশুদ্ধ অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার মিশিয়ে নিন। এর সঙ্গে এক চা চামচ মধু মেশান। এইবার এই পানীয় দিনে তিনবার পান করুন। দেখবেন বুকের কফ অনেক কমে গেছে
তবে ঘরোয়া এই পদ্ধতিগুলো ব্যবহারের আগে উপকরণগুলোতে ব্যক্তিগত সমস্যা আছে কিনা তা নিশ্চিত হতে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।