বহু নির্বাচনী প্রশ্ন
জাদুঘরে কেন যাব
-----আনিসুজ্জামান
১। আনিসুজ্জামান কত সালে জন্মগ্রহণ করেন?
ক. ১৯২৭ খ. ১৯৩৭
গ. ১৯৩৮ ঘ. ১৯৪৭
২। কোন শতকে ব্রিটেনের প্রথম পাবলিক মিউজিয়াম গড়ে ওঠে?
ক. তৃতীয় শতকে
খ. পঞ্চদশ শতকে
গ. সতের শতকে
ঘ. আঠারো শতকে
৩। স্বতন্ত্র বিদ্যায়তনিক বিষয় বা শৃঙ্খলা হিসেবে নিচের কোনটিকে বোঝানো হয়েছে?
ক. মিউজিয়াম স্টাডিজ
খ. ব্রিটিশ মিউজিয়াম
গ. আলেকজান্দ্রিয়া
ঘ. প্রাসাদোপম অট্টালিকা
৪। জাদুঘরের সংরক্ষিত মুসলিম ঐতিহ্যমূলক নিদর্শন আবদুল মোনায়েম খানকে আকর্ষণ করেছিল কেন?
ক. তিনি দ্বিজাতিতত্বে বিশ্বাসী
খ. তিনি গণতন্ত্রে বিশ্বাসী
গ. তিনি একনায়কতন্ত্রে বিশ্বাসী
ঘ. তিনি মুসলিম বলে
৫। জাদুঘরে যাওয়ার অন্যতম কারণ কী?
ক. অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি
খ. আত্মপরিচয় লাভ
গ. আনন্দ লাভ
ঘ. জ্ঞান অর্জন করা
৬। টাওয়ার অব লন্ডনে সবাই ভিড় করে কেন?
ক. পান্না দেখতে
খ. হিরা দেখতে
গ. কোহিনূর দেখতে
ঘ. মতি দেখতে
৭। ল্যুভ বলতে বোঝানো হয়েছে-
ক. পানশালা
খ. মিউজিয়াম
গ. আকর্ষণ
ঘ. জাদুবিদ্যা
৮। জাদুঘরে ঐতিহাসিক নিদর্শন সংগ্রহ করে রাখা হয় কেন?
ক. প্রদর্শনের জন্য
খ. পরীক্ষার জন্য
গ. অর্থ উপার্জনের জন্য
ঘ. অস্তিত্ব রক্ষার জন্য
৯। উর্দুতে জাদুঘরকে কী বলে?
ক. মিউজিয়াম
খ. আজবখানা
গ. অজায়েব-ঘর
ঘ. জাদুঘর
১০। জাতীয় জাদুঘর কিসের পরিচয় বহন করে?
ক. আত্মপরিচয়
খ. প্রাচীন নিদর্শন
গ. জাতিসত্তা
ঘ. জাতির ঐতিহ্য
১১। রুশ বিপ্লবে নেতৃত্ব দেন কে?
ক. অ্যাশমোল
খ. ট্রাডেসান্ট
গ. লেনিন
ঘ. স্যার রবার্ট কটন
১২। মিউজিওগ্রাফি বিষয়টি কোনটির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত?
ক. জাদুঘরতত্ব
খ. জাদুঘর
গ. মিউজিয়াম
ঘ. ভাস্কর্য
১৩। কী জাদু বাংলা গানে-এ বাক্যে ‘জাদু’ শব্দটি যে অর্থে প্রযুক্ত-
ক. মনোহর খ. কুহক
গ. ইন্দ্রজাল ঘ. ভেলকি
১৪। ‘অপরাজেয় বাংলা’ মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বহন করে। এ বাক্যে ‘অপরাজেয় বাংলা’র সঙ্গে নিচের কোনটির মিল রয়েছে?
ক. ভাস্কর্য খ. স্থাপত্য
গ. প্রত্নতত্ব ঘ. নিদর্শন
১৫। ‘জাদুঘরে কেন যাব’ রচনার মূল উপজীব্য কী?
ক. জাদুঘরের ইতিহাস বর্ণনা
খ. জাদুঘর পরিচিতি
গ. জাদুঘর প্রতিষ্ঠার গুরুত্ব
ঘ. জাদুঘরের প্রয়োজনীয়তা
১৬। ‘জাদুঘরে কেন যাব’ প্রবন্ধে কী ফুটে উঠেছে?
ক. জাদুঘরের সংখ্যা বৃদ্ধি
খ. জাদুঘর সম্পর্কিত ধারণা
গ. জাদুঘরের ভ‚মিকা
ঘ. জাদুঘরের ইতিহাস
১৭। ইউরোপীয় রেনেসাঁসের তাৎপর্য-
i. শিল্প-সাহিত্যের ক্ষেত্রে নবজাগরণ
ii. চিন্তা-চেতনা ও জ্ঞানচর্চার ক্ষেত্রে নবজাগরণ
iii. মধ্যযুগ থেকে আধুনিক যুগে উত্তরণ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii
খ. ii ও iii
গ. i ও iii
ঘ. i, ii ও iii
১৮। অতীত স্থাপত্যের নিদর্শন বলতে বোঝাত-
i. কাঠের স্তম্ভ
ii . অজস্র উপকরণে নির্মিত
iii. পাথরের স্তম্ভ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii
খ. ii ও iii
গ. i ও iii
ঘ. i, ii ও iii
নিচের উদ্দীপকটি পড়ো এবং ১৯ ও ২০ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও :
১৫ আগস্ট বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি ভয়াবহ ও মর্মান্তিক অধ্যায়। এই দিনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। তাঁর সেই বাসভবনটি তাঁর নামে স্মৃতি জাদুঘর হিসেবে রাখা হয়।
১৯। উদ্দীপকের বঙ্গবন্ধু জাদুঘর নামোলেখে ‘জাদুঘরে কেন যাব’ রচনায় যে জাদুঘরের নাম সমর্থনযোগ্য-
ক. বরেন্দ্র জাদুঘর
খ. মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর
গ. অ্যাশমোলিয়ান মিউজিয়াম
ঘ. ব্রিটিশ মিউজিয়াম
২০। উদ্দীপকের ভাববস্তু ‘জাদুঘরে কেন যাব’ রচনার যে দিকটিকে করে-
i. ইতিহাসচেতনা
ii. ঐতিহ্যের ধারক
iii. স্মৃতি সংরক্ষণ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii
খ. ii ও iii
গ. i ও iii
ঘ. i, ii ও iii
২১। পৃথিবীর প্রথম জাদুঘরে মূলত কী ছিল?
ক. দর্শনচর্চার কেন্দ্র
খ. নিদর্শন সংগ্রহশালা
গ. ইতিহাস চিত্র
ঘ. ঐতিহ্য
২২। কোন জাদুঘর এখন খুবই প্রচলিত?
ক. ব্রিটিশ মিউজিয়াম
খ. ল্যুভ মিউজিয়াম
গ. হার্মিটেজ মিউজিয়াম
ঘ. উন্মুক্ত মিউজিয়াম
২৩। ফরাসি বিপ্লবের পর প্রজাতন্ত্র কী সৃষ্টি করে?
ক. কায়রো মিউজিয়াম
খ. ব্রিটিশ মিউজিয়াম
গ. ল্যুভ
ঘ. হার্মিটেজ মিউজিয়াম
নিচের উদ্দীপকটি পড়ো এবং ২৪ ও ২৫ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও :
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর বাঙালির জাতিসত্তার পরিচয় বহন করে। বাঙালি বীরের জাতি তা মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে গেলে পরিস্ফুট হয়ে ওঠে।
২৪। উদ্দীপকের মুক্তিযুদ্ধের ভ‚মিকা ‘জাদুঘরে কেন যাব’ রচনার কিসের সঙ্গে তুল্য?
ক. জাদুঘর
খ. ধাতবপাত্র
গ. অ্যাশমোল
ঘ. প্রত্নতত্ব
২৫। উদ্দীপক ও ‘জাদুঘরে কেন যাব’ রচনার উভয়ের মধ্যে তুলনীয় দিকটি হলো-
ক. ইতিহাসচেতনা
খ. জাতিসত্তার পরিচয় জ্ঞাপন
গ. ঐতিহ্যচেতনা
ঘ. আত্মপরিচয়ের ধারক
২৬। পৃথিবীর প্রথম জাদুঘর কোথায় স্থাপিত হয়েছিল?
ক. জার্মানি
খ. লন্ডনে
গ. আলেকজান্দ্রিয়ায়
ঘ. ইংল্যান্ডে
২৭। মিউজিওলোজি বলতে কী বোঝায়?
ক. জাদুঘর সম্পর্কিত বিদ্যা
খ. জ্ঞান কোষ্য
গ. বিদ্যায়তনিক ভাষা
ঘ. সুপ্রাচীন নগর
২৮। ভাস্কর্য বলতে কোনটি বোঝায়?
ক. স্থাপত্য
খ. প্রাসাদ
গ. মূর্তি নির্মাণ করা
ঘ. চিত্র
২৯। ফরাসি বিপ্লব কত খ্রিস্টাব্দে সংঘটিত হয়?
ক. ১৭৫৭ খ. ১৭৭৯
গ. ১৭৮৯ ঘ. ১৮৫৭
৩০। ফরাসি বিপ্লব সম্পর্কে নিচের যে তথ্যটি প্রযোজ্য-
ক. সামন্তবাদ উৎপাটন
খ. লেনিনের নেতৃত্ব
গ. জারতন্ত্রের উদ্ভব
ঘ. রেনেসাঁর প্রভাব
৩১। পড়িলে বই আলোকিত হই, না পড়িলে বই অন্ধকারে রই। উদ্দীপকে বইয়ের সঙ্গে ‘জাদুঘরে কেন যাব’ রচনার সাদৃশ্য রয়েছে-
ক. জাদুঘর খ. স্থাপত্য
গ. ভাস্কর্য ঘ. নৃতত্ব
৩২। ‘যঃ পলায়েতে স জীবতি’ উক্তিটির তাৎপর্য কী?
ক. যে পালায় সে জীবিত
খ. যে পালায় সে বাঁচে
গ. যে পাশ কাটিয়ে যায় সে রক্ষা পায়
ঘ. উপস্থিত সমস্যায় সঠিক সিদ্ধান্ত
৩৩। পাশ্চাত্য দেশে জাদুঘরতত্বে স্বতন্ত্র বিদ্যায়তনিক বিষয় হিসেবে যেটি গ্রহণযোগ্য-
i. মিউজিওলজি
ii. মিউজিওগ্রাফি
iii. মিউজিয়াম স্টাডিজ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii
খ. i ও iii
গ. ii ও iii
ঘ. i, ii ও iii
৩৪। জাদু ও আজব শব্দে কত রকম দ্যোতনা আছে?
ক. দুই খ. তিন
গ. চার ঘ. পাঁচ
নিচের উদ্দীপকটি পড়ো এবং ৩৫ ও ৩৬ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও :
ঐতিহাসিক নিদর্শন পাহাড়পুরের কাছে একটি ছোট পরিসরে জাদুঘর আছে। এখানে সংরক্ষিত বহু প্রাচীন প্রতœতাত্বিক নিদর্শন দেখে দর্শনার্থীরা চমৎকৃত হয়।
৩৫। উদ্দীপকের প্রতœতাত্বিক শব্দটি ‘জাদুঘরে কেন যাব’ প্রবন্ধে যে অর্থে প্রযুক্ত-
ক. স্থাপত্য খ. পুরাতাত্বিক
গ. ধাতবতত্ব ঘ. ভাস্কর্য
৩৬। উদ্দীপকে নিদর্শন দেখে দর্শনার্থী চমৎকৃত হওয়ায় ওই রচনার যে দিকটি ফুটে উঠেছে-
i. জাদুঘর কৌত‚হলোদ্দীপক
ii. জাদুঘর আনন্দ দান করে
iii. জাদুঘর চেতনা জাগায়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii
খ. ii ও iii
গ. i ও iii
ঘ. i, ii ও iii
৩৭। ‘হার্মিটেজ’ শব্দের অর্থ কী?
ক. মসজিদ খ. মন্দির
গ. মঠ ঘ. গির্জা
৩৮। ‘জাদুঘরে কেন যাব’ রচনা থেকে আমরা কী শিক্ষা লাভ করি?
ক. প্রতœতত্ব
খ. নৃতত্ব
গ. জাদুঘরের গুরুত্ব
ঘ. জাদুঘরের ইতিহাস
নিচের উদ্দীপকটি পড়ো এবং ৩৯ ও ৪০ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও :
তরুণ যশোর এম এম কলেজের ‘চেতনায় চিরঞ্জীব’ ভাস্কর্যটি দেখে মুগ্ধ হয়। এখন সে যেকোনো ভাস্কর্য দেখতে যেতে অনেক বেশি আগ্রহী।
৩৯। উদ্দীপকে ‘ভাস্কর্য’ শব্দটি ‘জাদুঘরে কেন যাব’ রচনার আলোকে যে অর্থে প্রযুক্ত-
i. মূর্তি নির্মাণ কলা
ii. ধাতুর খোদাইয়ের শিল্প
iii. পাথর খোদাইয়ের শিল্প
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii
খ. ii ও iii
গ. i ও iii
ঘ. i, ii ও iii
৪০। উদ্দীপকের বিষয় অনুসারে ‘জাদুঘরে কেন যাব’ প্রবন্ধের মর্মার্থ ফুটে উঠেছে-
ক. জাদুঘরের সৌন্দর্য
খ. জাদুঘরের বিস্ময়
গ. জাদুঘরের বৈশিষ্ট্য
ঘ. জাদুঘর চেতনা
উত্তরগুলো মিলিয়ে নাও
১. খ ২. গ ৩. ক ৪. ক ৫. খ ৬. গ
৭. খ ৮. ঘ ৯. খ ১০. গ ১১. গ ১২. ক ১৩. ক ১৪. ক ১৫. ঘ ১৬. গ ১৭. ঘ
১৮. গ ১৯. গ ২০. ঘ ২১. ঘ ২২. ঘ
২৩. গ ২৪. ক ২৫. খ ২৬. গ ২৭. ক ২৮. গ ২৯. গ ৩০. ক ৩১. ক ৩২. ঘ ৩৩. ঘ ৩৪. ক ৩৫. খ ৩৬. ঘ ৩৭. গ ৩৮. গ ৩৯. ঘ ৪০. গ হ
বুধবার, ৮ আগস্ট, ২০১৮
জাদুঘরে কেন যাব বহু নির্বাচনী
মঙ্গলবার, ৭ আগস্ট, ২০১৮
ক্ষুদে গল্প ১
‘কৃতজ্ঞতার মূল্য’
প্রশ্ন: ‘কৃতজ্ঞতার মূল্য’ বিষয় নিয়ে খুদে গল্প লেখো।
সকালবেলায়ই বাসা থেকে রোজ বেরিয়ে যায় কাদের... ছুটির দিন কী জিনিস, তা সে জানে না। শুধু জানে, এক দিন কাজে না গেলে উপোস করে থাকতে হবে সারা দিন। সেই ১৪ বছর বয়স থেকেই তার এই ছুটে চলা শুরু। এরপর শুধু ছুটছে আর ছুটছে। আদৌ কি কোনো দিন সে এই ক্লান্ত জীবন থেকে রেহাই পেতে পারবে? স্বপ্নগুলোকে কি কোনো দিন বাস্তবে রূপ দিতে পারবে? এসব চিন্তা করতে করতে দ্রুত পায়ে হেঁটে চলে সে, এক মিনিট দেরি হলেও যে কথা শুনতে হবে সরদারের কাছ থেকে।
শ্রমিকদের সরদার জমির মিয়া। তাদের সব কাজ তদারক করে সে। বদরাগী হলেও মানুষ হিসেবে ভালো জমির মিয়া। কারও প্রতি অন্যায় আচরণ করে না সে।
কম বয়সেই মা-বাবাকে হারিয়ে অনাথ হয়ে যাওয়া কাদেরের জীবন ছিল দুঃখ-দৈন্য, অভাব-অনটনে জর্জরিত। জমির মিয়া তাদের বস্তিরই অন্য একটা ঘরে থাকত। এই জমির মিয়াই তাকে শ্রমিকের চাকরির ব্যবস্থা করে দেয় পাটকলে। তখন থেকেই তাকে গুরু হিসেবে মেনে নিয়েছিল কাদের। জীবনে যা-ই সে অর্জন করুক না কেন, জমির মিয়ার কৃতিত্বের কথা অকপটেই স্বীকার করে কাদের।
এক দিন পাটের বস্তার হিসাব মেলানোর সময় জমির দেখল, ১০টি বস্তা কম আছে। অথচ ডেলিভারির সময় প্রায় শেষ। শ্রমিকেরাও ততক্ষণে যার যার বাড়িতে চলে গেছে। ম্যানেজার সাহেব এসে সবকিছু দেখে জমিরের ওপরই সন্দেহ করলেন। মাল ডেলিভারি সঠিক সময়ে না হওয়ায় কোম্পানির ক্ষতি হলো। কোনো প্রমাণ ছাড়াই জমির মিয়াকে চাকরিটা হারাতে হলো। আসল অপরাধী আড়ালেই রয়ে গেল। কাদেরের দৃঢ় বিশ্বাস ছিল, কাজটি জমির মিয়া করেনি। কিন্তু তাকে সাহায্য করার মতো কোনো প্রমাণও তার কাছে ছিল না। দারিদ্র্যের সংসারে চাকরি ছাড়া জমির মিয়াও ভয়াবহ অভাবে পড়ল।
কাজ শেষে প্রতিদিন একসঙ্গেই বাড়ির পথ ধরে শ্রমিকেরা। গল্প করতে করতে তাদের সঙ্গে বাড়ি ফিরছিল কাদেরও। হঠাত্ করেই তার চোখ পড়ল জসিমের ওপর। সেও একই পাটকলের শ্রমিক। কাউকে কিছু না বলে দলছুট হয়ে অন্য পথ ধরল সে। কাদেরের সন্দেহ হলো তার ওপর। সে গোপনে তার পিছু নিল। জসিমের পিছু নিতে নিতে কাদের পৌঁছাল একটি অন্ধকার গলির শেষ মাথায়। সন্ধ্যার দিকে এই দিকটা খুব ফাঁকা থাকে, লোকজনের চলাচল নেই বললেই চলে। কাদের আঁচ করতে পারল, জসিমের নিশ্চয়ই কোনো কুমতলব আছে। সে একটা খুঁটির পেছনে লুকিয়ে জসিমের কর্মকাণ্ড দেখতে লাগল।
কিছুক্ষণ পর একটা লোক এল জসিমের সঙ্গে দেখা করতে। লোকটা বেঁটে। গায়ে কালো জ্যাকেট। কাদের তাদের কথাবার্তা নিঃশব্দে শুনতে চেষ্টা করল। সবকিছু শুনে সে বুঝতে পারল আজ রাতে তারা চুরি করার পরিকল্পনা করছে। প্রায় ৩০ বস্তা মাল, কথাটি শুনে তার সন্দেহ আরও জোরালো হয়।
তখনই কাদেরের খেয়াল হলো যে এই চুরির ব্যাপারটা কয়েক দিন আগের চুরির মতোই। চট করে একটা বুদ্ধি বের করল সে। পুরো ঘটনা ম্যানেজার সাহেবকে জানিয়ে তারা দুজন ওই রাতে পুলিশ সঙ্গে নিয়ে পাটকলের স্টোর রুমেই লুকিয়ে থাকল।
রাত ১২টার দিকে জসিম এল। সঙ্গে ওই লোকটা। তারা মালগুলোর কাছাকাছি যেতেই পুলিশ তাদের ধরে ফেলল। আগের চুরিটা যে জসিমই করেছে, পুলিশের জেরায় তাও বেরিয়ে এল। পরদিন জমির মিয়া তার হারানো চাকরিটা ফিরে পেল। কাদেরও ম্যানেজারের কাছ থেকে পুরস্কার পেয়েছিল। ক্ষুধার অনল জ্বালা থেকে কাদেরকে বাঁচিয়েছিল জমির মিয়া। আজ সেই ঋণ সে শোধ করতে পেরেছে—এই ভেবে মন আনন্দে ভরে উঠল কাদেরের। পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ এখন কাদের।
ক্ষুদে গল্প লেখা
শিরোনাম : ইঁদুরের বৈঠক
লোকালয়ের কাছেই মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে একটি পাহাড়। সেই পাহাড়ের গুহায় বাস করত একদল ইঁদুর। পাহাড়ের গুহায় কোনো খাবার পাওয়া যেত না বলে তাদের লোকালয়ে যেতে হতো। কিন্তু সেখানে থাকত একটি হুলো বিড়াল। বিড়ালের অত্যাচারে ইঁদুররা লোকালয় থেকে খাদ্য জোগাড় করতে না পেরে একসময় খুব অতিষ্ঠ হয়ে উঠল। বাঁচার একটা উপায় বের না করলে ইঁদুরের বংশ ধ্বংস হয়ে যাবে। বিড়ালের হাত থেকে কিভাবে বাঁচা যায়, এ বিষয়ে ইঁদুরদের একটা বৈঠক বসল। বৈঠকে অনেক ইঁদুরের সমাবেশ ঘটল। বাঁচার উপায় হিসেবে অনেকেই নানারকম পরামর্শ ও প্রস্তাব দেয়। কিন্তু কারো প্রস্তাবই সভাপতির আসনে বসা বৃদ্ধ ইঁদুরের পছন্দ হলো না।
অবশেষে এক বিজ্ঞ ইঁদুর অত্যন্ত গর্বের সঙ্গে বুক ফুলিয়ে বলল—আমি বলি কি, ওই হুলো বিড়ালের গলায় একটা ঘণ্টা বেঁধে দেওয়া হোক, তাহলে ঘণ্টার আওয়াজ শুনেই আমরা সাবধান হতে পারব। এই প্রস্তাবে বৈঠকে উপস্থিত সব ইঁদুরই হাতে তুড়ি বাজিয়ে রাজি হয়ে গেল। বৈঠকের সভাপতি বৃদ্ধ ইঁদুর এতক্ষণ বসে বসে সবার পরামর্শ শুনছিল। কিন্তু এবার আর কিছু না বলে পারল না। এবার সে বলল, আমার প্রবীণ বিজ্ঞ বন্ধু যা বললেন তা খুবই বুদ্ধির কথা বটে, বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বেঁধে দিতে পারলে আমাদের উদ্যোগ সফল হবে। কিন্তু আমার প্রশ্ন হচ্ছে—ওই ঘণ্টাটা বিড়ালের গলায় বাঁধতে যাবে কে?
সভাপতির কথায় বৈঠকের অন্যান্য ইঁদুর চুপ হয়ে গেল। কিন্তু ঘণ্টা বাঁধার উপায় হিসেবে কেউ কোনো উত্তর দিতে পারল না। পরস্পর মুখ চাওয়া-চাওয়ি করেও উত্তর খুঁজে পেল না। আসলে প্রস্তাব দেওয়া যত সহজ, তা বাস্তবে রূপায়িত করা এত সহজ নয়।
শিরোনাম : একতার ক্ষমতা
এক চাষির ছয় সন্তান। এক মেয়ে, পাঁচ ছেলে। ছেলেদের মধ্যে শান্তি ছিল না। সব সময় ঝগড়া-ফ্যাসাদ লেগেই থাকত। এতে চাষির মনেও ছিল অশান্তি। ছেলেদের প্রতি তাঁর উপদেশ-নির্দেশ কোনো কাজে এলো না। বৃদ্ধ বয়সে চাষি একদিন অনেক ভেবেচিন্তে ছেলেদের বললেন—তোরা প্রত্যেকে একটা করে কঞ্চি নিয়ে সেগুলো একসঙ্গে একটা আঁটি বেঁধে আমার কাছে নিয়ে আয়।
বাবার কথায় ছেলেরা কঞ্চি জোগাড় করে তা নিয়ে একটা আঁটি বেঁধে আনল। এবার চাষি তাঁর ছেলেদের বললেন—এবার তোরা প্রত্যেকে এই আঁটিটি ভাঙার চেষ্টা কর, দেখি কে পারিস।
বাবার কথায় ছেলেরা একে একে প্রত্যেকের কঞ্চির আঁটি ভাঙার চেষ্টা করে ব্যর্থ হলো। চাষি এবার আঁটিটি খুলতে বললেন। তারপর প্রত্যেকের হাতে একটা করে কঞ্চি দিলেন। ছেলেরা বুঝতে পারল না তাদের বাবার আসল উদ্দেশ্য কী? সবার হাতে কঞ্চি দেওয়ার পর এবার চাষি তাঁর ছেলেদের বললেন—তোদের প্রত্যেকের হাতে একটা করে কঞ্চি আছে তো! এবার তোরা যার যার কঞ্চিটি ভেঙে ফেল। বাবার কথা শেষ হতে না হতেই ছেলেরা প্রত্যেকে তাদের নিজের হাতের কঞ্চি পটাপট ভেঙে ফেলল। চাষি এবার তাঁর ছেলেদের উদ্দেশে বললেন—দেখলি তো! তোরা যদি এভাবে মিলেমিশে একজোট হয়ে থাকিস, তবে কোনো শত্রুই তোদের ক্ষতি করতে পারবে না। কারণ একতার ক্ষমতা অনেক বেশি। আর যদি তোরা সব সময় ঝগড়া-বিবাদ করিস, আলাদা হয়ে থাকিস, একজন বিপদে পড়লে তার পাশে সবাই না দাঁড়াস, তাকে সাহায্য না করিস, তবে শত্রুরা তোদের একা পেয়ে ঘায়েল করে দেবে।
শিরোনাম : শক্তি পরীক্ষা
প্রশ্ন:শক্তিপরীক্ষা শিরোনামো একটি গল্প লেখ ?সূর্য আর বাতাসের মধ্যে একদিন প্রচণ্ড তর্ক শুরু হলো। দুজনের মধ্যে কার শক্তি বেশি, এই ছিল তর্কের বিষয়। কেউ কারো কাছে হার মানতে চায় না বলে তর্কেরও শেষ হয় না। শেষ পর্যন্ত দুজনেই বুঝতে পারল, এভাবে তর্ক চালিয়ে যাওয়া অর্থহীন। তাই কথা কাটাকাটি থামিয়ে হাতে-কলমে শক্তি পরীক্ষার একটা উপায় বের করা দরকার। হঠাৎ বাতাসের মাথায় একটা বুদ্ধির উদয় হলো, সে সূর্যকে উদ্দেশ্য করে বলল, ওই দেখো রাস্তা দিয়ে একটা লোক যাচ্ছে। যে ওই লোকটার শরীর থেকে জামা-কাপড় খোলাতে পারবে সেই হবে বিজয়ী। যে বিজয়ী হবে তাকে বেশি শক্তিশালী বলে মেনে নিতে হবে।
দুজনের মধ্যে ঠিক হলো, প্রথমে বাতাসই জামা খোলার চেষ্টা শুরু করবে। শুরু হলো। বাতাস তার সর্বশক্তি প্রয়োগ করে বইতে শুরু করল। বাতাস বইতে শুরু করলে লোকটা আরো ভালোভাবে গায়ে জামা-কাপড় জড়িয়ে নিল। বাতাস তার শক্তি আরো বাড়িয়ে দিলেও কাজ হলো না। বাতাস আরো প্রস্তুতি নিয়ে এবার প্রবল জোরে বইতে শুরু করল। ঠাণ্ডা বাতাসে লোকটার শরীর কাঁপছিল। এবার সে আগের পরা জামার ওপর আরো একটা মোটা কোট পরে নিয়েছে। বাতাসের গতিবেগ থেকে রক্ষার জন্য লোকটি দুহাতে জামা-কাপড় চেপে ধরে রেখেছে। বাতাস তো হতাশ। লোকটার শরীর থেকে জামা-কাপড় খোলা বাতাসের পক্ষে সম্ভব হলো না। এবার সূর্য তার শক্তির পরিচয় দিতে শুরু করল। বাতাসের শীতল প্রবাহের পর সূর্যের তাপে লোকটার বেশ আরাম বোধ হলো। আস্তে আস্তে সূর্যের উত্তাপ বাড়তে থাকলে লোকটা তার গায়ের কোটটা খুলে ফেলল। উত্তাপ যখন প্রচণ্ড থেকে প্রচণ্ডতর হয়ে উঠল, তখন আর তার সহ্য হচ্ছিল না। একে একে সে গায়ের সব জামা-কাপড় খুলে গা ঠাণ্ডা করতে পাশের এক নদীতে নেমে গেল। পরীক্ষায় প্রমাণিত হলো, বাতাসের চেয়ে সূর্যের শক্তি অনেক বেশি।
একতাই বল!
একতার শক্তি দিয়ে যে আপাত দৃষ্টিতে অসম্ভব বলে মনে হওয়া কোনো কাজকেও অনায়াসে সম্ভব করা যায় সেটা নতুন করে আরও একবার প্রমাণ করেছেন অস্ট্রেলিয়ার পার্থের একটি ট্রেনের যাত্রীরা। ট্রেন থেকে নামার সময় প্লাটফর্ম ও ট্রেনের মাঝখানে আটকে যাওয়া এক ব্যক্তিকে উদ্ধার করতে এই যাত্রীরা সম্মিলিত ভাবে কয়েক হাজার টন ওজনের একটি ট্রেনের বগিকে একদিকে খানিকটা কাত করেন। আর তাতেই প্রাণে রক্ষা পায় ঘটনাক্রমে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে থাকা ঐ ব্যক্তির জীবন। ঘটনার বিবরণে জানা যায়, নাম প্রকাশ না হওয়া ঐ ব্যক্তি পার্থের একটি স্টেশনে নামতে গেলে তার একটি পা প্লাটফর্ম ও ট্রেনের দরজার মাঝে থাকা মাত্র ৫ সেন্টিমিটারের ছোট ফাঁক গলে ভিতরে ঢুকে আটকে যায়। এ অবস্থায় তাত্ক্ষণিকভাবে স্টেশন ও ট্রেনের কর্মীরা ট্রেনচালককে স্টেশন থেকে ট্রেন পুনরায় ছাড়তে না করেন। এরপর তারা নানাভাবে ৫/৬ মিনিট সময় ধরে ঐ ব্যক্তিটিকে উদ্ধার করার চেষ্টা করেন। তবে এতেও কাজ না হওয়ায় ট্রেনের সকল যাত্রীকে বগিটির একদিকে জড়ো হতে বলা হয় যাতে করে ট্রেনটি কিছুটা কাত হলে ঐ ব্যক্তিকে বের করে আনা যায়। তবে তাদের এই প্রথম বুদ্ধিটি তেমন কোনো কাজে না আসায় যাত্রীদের সবাই একে একে ট্রেন ছেড়ে নিচে নেমে আসেন। সেই সাথে শুরু হয় ট্রেনটিকে একদিকে ধাক্কা দিয়ে সামান্য একটু কাত করার চেষ্টা। এ সময় এলোমেলোভাবে ট্রেনটিকে ঝাঁকুনি দেওয়ার মতো করে নড়ানো হলে তা ঐ ব্যক্তির আটকে যাওয়া পায়ে পুনরায় বড় কোনো জখম তৈরি করতে পারতো। আর তাই লোকটিকে বাঁচাতে আসা যাত্রীরা এক-দুই-তিন গুনে ট্রেনের বগিটিকে বেশ কয়েকবারের চেষ্টায় একদিকে কাঁত করেন। আর তাদের এই প্রচেষ্টার ফসল হিসেবেই বের করে আনা সম্ভব হয় ভাগ্যবান লোকটিকে।
ক্ষুদে গল্প লেখা
প্রশ্ন: সন্ধি ও সমাসের মধ্যে পার্থক্য লেখ
প্রশ্ন: সমাস কাকে বলে? সমাসের প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করো।
সোমবার, ৬ আগস্ট, ২০১৮
ব্লা ব্লা ব্লা
প্রবন্ধ রচনা
রচনা বলতে প্রবন্ধ রচনকে বোঝায়।
‘রচনা’ শব্দের অর্থ কোনো কিছু নির্মাণ বা সৃষ্টি করা। কোনো বিশেষ ভাব বা তত্ত্বকে ভাষার মাধ্যমে পরিস্ফুট করে তোলার নামই রচনা। রচনাকে সাধারণত সৃষ্টিশীল কর্ম হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এতে বিষয়ের উপস্থাপনা , চিন্তার ধারাবাহিকতা , সংযত বর্ণনা , ভাষার প্রঞ্জলতা ও যুক্তির সৃশৃঙ্খল প্রয়োগ থাকে।
‘প্রবন্ধ’ শব্দের প্রকৃত অর্থ প্রকৃষ্ট রূপে বন্ধন। ‘প্রকৃষ্ট বন্ধন’বিষয়বস্তু ও চিন্তার ধারাবাহিক বন্ধনকে বোঝায়। নাতিদীর্ঘ, সুবিন্যস্ত গদ্য রচনাকে প্রবন্ধ বলে। প্রবন্ধ রচনার বিষয়, ভাব, ভাষা সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ ।
শিক্ষার্থীদের বেলায় রচনা ও প্রবন্ধ কথাটি সমার্থক। শিক্ষার্থীদের রচনায় নতুন কোনো ভাব বা তত্ত্ব থাকে না ।একটা নির্দিষ্ট বিষয় সম্পর্কে শিক্ষার্থীরা মনের ভাব বা বক্তব্যকে প্রকাশ করে। রচনা বা প্রবন্ধ লেখার মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থী কোনো বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা ব্যক্ত করতে পারে। এতে তার বক্তব্যকে গুছিয়ে বলার দক্ষতা জন্মে। বক্তব্যকে সুস্পষ্ট করার জন্য যথার্থ শব্দ প্রয়োগ এবং উপমা, অলংকার ইত্যাদির ব্যবহার সম্পর্কে শিক্ষর্থী সচেতন হয়ে উঠে। প্রকাশের জড়তা কাটিয়ে ওঠা ও ভাষাগত দক্ষতা অর্জনের জন্য প্রবন্ধ- রচনার অনুশীলন প্রয়োজন। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত আবেগ, অনুভূতি ,অভিজ্ঞতা , ব্যক্তিত্বের প্রকাশের জন্য প্রবন্ধ – রচনা অনুশীলনের বিকল্প কিছু নেই ।
রচনার বিভিন্ন অংশ
রচনার প্রধান অংশ তিনটি – ক. ভুমিকা , খ. বিষয়বস্তু, গ.উপসংহার।
ক.ভুমিকা :
এটি রচনার প্রবেশপথ। একে সূচনা , প্রারম্ভিকা বা প্রাক – কথনও বলা চলে। এতে যে বিষয়ে রচনা হবে, তার আভাস এবং সংক্ষিপ্ত ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করা হয় । ভূমিকা সংক্ষিপ্ত হওয়াই উচিত ।
খ. বিষয়বস্তু বা মূল বক্তব্য :
বিষয়বস্তু বা মূল বক্তব্যই হচ্ছে রচনার প্রধান অংশ।এ অংশে রচনার মূল বিষয়বস্তুর সামগ্রিক পরিচয় স্পষ্ট করতে হয় ।বিষয় বা ভাবকে পরিস্ফুট করার জন্য প্রয়োজনে ছোট ছোট অনুচ্ছেদ ব্যবহার করা যেতে পারে।তবে লক্ষ রাখতে হবে,অনুচ্ছেদগুলোর ধারাবাহিকতা যেন বজায় থাকে।বক্তব্যকে স্পষ্ট করার জন্য এ অংশে প্রয়োজনে উদাহরণ ,উপমা , উদ্ধৃতি ইত্যাদি ব্যবহার করা যায়।
গ. উপসংহার:
বিষয়বস্তু আলোচনার পর এ অংশে একটা সিদ্ধান্তে আসা বলা হয় বলে এটাকে ‘উপসংহার ’ নামে অভিহিত করা হয়।এখানে বর্ণিত বিষয়ে লেখকের নিজস্ব মতামত বা অভিজ্ঞতার সারসংক্ষেপ তুলে ধরা হয়।
রচনার শ্রেণিবিভাগ :
বিষয়বস্তু অনুসারে রচনাকে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা যায় : ক. বর্ণনা মুলক রচনা,থ.চিন্তামূলক রচনা ।
বর্ণনামূলক রচনার সাধারণত স্থান,কাল,বস্তু,ব্যক্তিগত স্মৃতি –অনুভুতি ইত্যাদি বিষয়ে থাকে।ধান, পাট, শরৎকাল,কাগজ. টেলিভিশন,বনভোজন, শৈশবস্মৃতি ইত্যাদি রচনা এই শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত।চিন্তা মূলক রচনায় থাকে সাধারণত তত্ত্ব,তথ্য, ধ্যান–ধারণা,চেতনা ইত্যাদি।শ্রমের মর্যাদা,বাংলাদেশের বন্যা ও তার
প্রতিকার,পরিবেশদূষণ,অধ্যবসায়,সত্যবাদিতা,চরিত্রগঠন প্রভৃতি এই শ্রেণির রচনার মধ্যে পড়ে।
প্রবন্ধ- রচনার কৌশল :
১.বর্ণনার মধ্য দিয়ে দৃষ্টি,রং,ধ্বনি,স্বাদ,গন্ধ,অনুভুতি ব্যবহার করে বিষয়বস্তুকে ছবির মতো ফুটিয়ে তুলতে হবে ।
২.বর্ণনামূলক রচনা লেখার সময় সময়সীমা এবং পরিসরের কথা মনে রেখে বিশেষ কিছু দিক বেছে নিতে হয়। সেগুলির সাহায্যে মূল বিষয়বস্তুকে সংক্ষেপে উপস্থাপন করতে হয় ।
৩. রচনা লেখার সময় পরম্পরা বা ধারাবাহিকতার দিকে লক্ষ রাখতে হবে।চিন্তাগুলো যেন এলোমেলো না হয় সেদিকে খেয়াল রাখা দরকার। জানা বিষয় ছাড়াও অনেক সময় অজানা বিষয় নিয়ে রচনা লিথতে হতে পারে।বিষয়ের ধারণাগুলো একটির পর একটি এমনভাবে সাজাতে হবে, যাতে ভাবের কোনো অসংগতি না থাকে।
৪.শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে রচনার আকার সাধারণত নির্দিষ্ট পরিসরের হয়ে থাকে।পরিমিত পরিসরে তাই রচনার সামগ্রিক বিষয়কে তুলে ধরতে হয়। অযথা বিষয়কে প্রলম্বিত করা ঠিক নয়। অপ্রয়োজনীয় ও অপ্রাসঙ্গিক বাক্য লেখা থেকে বিরত থাকতে হয়। এক কথায় রচনা খুব ছোট বা খুব বড় হওয়া উচিত নয়।
৫.প্রবন্ধের ভাষা সহজ এবং প্রাঞ্জল হওয়া বাঞ্ছনীয়। সন্ধি, সমাসবদ্ধ পদ, অপরিচিত বা অপ্রচলিত শব্দ যথাসম্ভব পরিহার করা ভালো। বাগাড়ম্বর বা অলংকারবহুল শব্দ ব্যবহার করা হলে অনেক সময় বিষয়টি জটিল ও দুর্বোধ্য হয়ে পড়ে। সাবলীল ও প্রাঞ্জল ভাষারীতির মাধ্যমে রচনাকে যথাসম্ভব রসমন্ডিত ও হৃদয়গ্রাহী করার চেষ্টা করতে হয়।
প্রবন্ধ রচনায় দক্ষতা অর্জনের উপায় :
প্রবন্ধরচনায় রাতারাতি দক্ষতা অর্জন করা সম্ভব নয়। এর জন্য নিয়মিত অনুশীলন দরকার। এ ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত দিকগুলো সহায়ক হতে পারে :
১. প্রবন্ধ লেখার দক্ষতা অর্জনের জন্য প্রচুর প্রবন্ধ বা রচনা পড়তে হবে।পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত প্রবন্ধ, সংবাদ, প্রতিবেদন, ফিচার ইত্যাদি নিয়মিত পাঠ করলে নানা বিষয়ের ধারণা জন্মায় এবং শব্দভান্ডার বৃদ্ধি পায়।এতে লেখা সহজ হয়ে ওঠে ।
২. প্রবন্ধের বিষয়বস্তু সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকা দরকার ।প্রবন্ধের বিষয়বস্তু, যুক্তি, তথ্য, তত্ত্ব, বিচার-বিশ্লেষণ ইত্যাদি বিষয়ানুগ,প্রাসঙ্গিক ও সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া চাই ।একই বক্তব্যের পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে,সেদিকে লক্ষ রাখা দরকার।
৩.ভাষারীতিতে সাধু এবং চলিত যেন মিশে না যায় সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।অযথা অপ্রাসঙ্গিক তথ্য,উদ্বৃতি ব্যবহার করা উচিত নয়।
৪.প্রাসঙ্গিক তথ্য-উপাত্ত ছাড়াও নিজের বক্তব্যকে আরো জোরালো করার জন্য প্রবাদ- প্রবচন,কবিতার পঙক্তি উদ্বৃতি ইত্যাদি সন্নিবেশ করা চলে।
৫. নিজের অভিজ্ঞতা , শিক্ষা, চিন্তাশক্তি,পঠন- পাঠন, ভাষাগত দক্ষতা ও উপস্থাপন কৌশল ইত্যাদি প্রয়োগ করে প্রবন্ধকে যথাসম্ভব হৃদয়গ্রাহী করার চেষ্টা করা উচিত ।
" " link.