সোমবার, ৯ এপ্রিল, ২০১৮

ধ্বনি বর্ণ

মানুষের সাথে মানুষের সামাজিকতা রক্ষায় তার প্রধান উাপায় হল মূখ খোলা আওয়াজ করা  আর সে ধ্বণিগুলোর একমাত্র শর্ত হচ্ছে  তার অর্থ থাকা চাই। কেবল অর্থপূর্ন আওয়াজকে ধ্বণি বলে।
 ভাষার মৌলিক উপাদান হল ধ্বণি। ভাষা হচ্ছে বাগযন্ত্রের সাহায্যে  উচ্চারিত ধ্বনির সমষ্টি।

ধ্বণি এবং বর্ণ

আমরা যখন কথা বলি ধ্বনি সাজিয়ে আর আমরা  যখন কাগজে লিখি বর্ণের পর  বর্ণ সাজিয়ে ।অর্থাৎ বর্ণের মাধ্যমে ভাষার শব্দ চিত্ররূপে অঙ্কিত করা হয়।
বর্ণ: যে সাব প্রতীক বা চিহ্ন দিয়ে ধ্বনি নির্দেশ করা হয় তাকে বর্ণ বলে।
বর্ণমালা : বাংলা ভাষায় যতগুলো বর্ণচিহ্ন ‍রহিয়াছে তাদের কে একত্রে বর্নমালা বলা হয়।
যে সমস্ত বর্ণ বাংলা স্বরধ্বণিগুলিকে উপস্থাপিত করে তারা স্বরবর্ণ তেমনি যে সকল বর্ণ ব্যঞ্জনবর্ণ গুলিকে নির্দেশ করে তাকে ব্যঞ্জন বর্ণ বলে
প্রত্যেক ভাষার ব্যবহৃত ধ্বনিগুলিকে বিচার  করলে কতগুলো ক্ষুদ্রতম অবিভাজ্য ধ্বনি  একক পাওয়া যায়। এদের বলা হয় ধ্বনিমূল বা মৌলিক ধ্বণি
বাংলা ভাষায় ধ্বণি  মূলকে ‍দুটো ভাগে ভাগ করা যায় : ১ .স্বর ধ্বণি ২.ব্যঞ্জনধ্বনি  যথাক্রমে-স্বরবর্ণ
  ব্যাঞ্জনবর্ণ বলা হয়।

বাংলা বর্ণমালা :
১. স্বর বর্ণ: অ আ ই ঈ উ ঊ  ঋ এ ঐ ও ঔ

২.ব্যঞ্জনবর্ণ:
ক খ গ ঘ ঙ
চ ছ জ ঝ ঞ
ট ঠ ড ঢ ণ
ত থ দ ধ ন
প ফ ব ভ ম
য র ল
শ ষ স হ
ড় ঢ় য়
ৎং ঃ  ঁ
--------------------
মোট- ১১+৩৯= ৫০টি

বাংলা ভাষায় মাত্রা




রবিবার, ৮ এপ্রিল, ২০১৮

কবিতা

কবিতা
খাঁদু দাদু
..........কাজী নজরুর ইসলাম
ও মা! তোমার বাবার নাকে কে মেরেছে ল্যাং?
খ্যাঁদা নাকে নাচছে ন্যাদা- নাক ড্যাঙ্গা-ড্যাং- ড্যাং!
ওঁর নাকতাকে কে করল খ্যাঁদ্যা রাঁদা বুলিয়ে?
চামচিকে- ছা ব'সে যেন ন্যাজুড় ঝুলিয়ে।
বুড়ো গরুর টিকে যেন শুয়ে কোলা ব্যাং।
অ মা! আমি হেসে মরি, ন্যাক ডেঙ্গাডেং ড্যাং।

ওঁর খ্যাঁদা নাকের ছ্যাঁদা দিয়ে টুকি কে দেয় 'টু'!
ছোড়দি বলে সর্দি ওটা, এ রাম! ওয়াক! থুঃ!
কাছিম যেন উপুড় হয়ে ছড়িয়ে আছেন ঠ্যাং!
অ মা! আমি হেসে মরি, ন্যাক ডেঙ্গাডেং ড্যাং।

দাদু বুঝি চিনাম্যান মা, নাম বুঝি চাং চু,
তাই বুঝি ওঁর মুখটা অমন চ্যাপটা সুধাংশু।
জাপান দেশের নোটীশ উনি নাকে এঁটেছেন!
অ মা! আমি হেসে মরি, ন্যাক ডেঙ্গাডেং ড্যাং।

দাদুর নাকি ছিল না মা অমন বাদুড়- নাক
ঘুম দিলে ঐ চ্যাপটা নাকেই বাজতো সাতটা শাঁখ।
দিদিমা তাই থ্যাবড়া মেরে ধ্যাবড়া করেছেন!
অ মা! আমি হেসে মরি, ন্যাক ডেঙ্গাডেং ড্যাং।

লম্ফানন্দে লাফ দিয়ে মা চলতে বেঁজির ছা
দাড়ির জালে প'ড়ে দাদুর আটকে গেছে গা,
বিল্লি- বাচ্চা দিল্লি যেতে নাসিক এসেছেন!
অ মা! আমি হেসে মরি, ন্যাক ডেঙ্গাডেং ড্যাং।

দিদিমা কি দাদুর নাকে টাঙাতে 'আলমানাক'
গজাল ঠুঁকে দেছেন ভেঙ্গে বাঁকা নাকের কাঁখ?
মুচি এসে দাদুর আমার নাক করেছেন 'ট্যান'!
অ মা! আমি হেসে মরি, ন্যাক ডেঙ্গাডেং ড্যাং।

বাঁশির মতন নাসিকা মা মেলে নাসিকে,
সেথায় নিয়ে চল দাদু দেখন -হাসিকে!
সেথায় গিয়ে করুন দাদু গরুড় দেবের ধ্যান,
খাঁদু দাদু নাকু হবেন, নাক ডেঙ্গাডেং ড্যাং।


তোমারে পড়িছে মনে - প্রেমের কবিতা, বিরহের কবিতা
- কাজী নজরুল ইসলাম
তোমারে পড়িছে মনে
তোমারে পড়িছে মনে
আজি নীপ-বালিকার ভীরু-শিহরণে,
যুথিকার অশ্রুসিক্ত ছলছল মুখে
কেতকী-বধূর অবগুন্ঠিত ও বুকে-
তোমারে পড়িছে মনে।
হয়তো তেমনি আজি দূর বাতায়নে
ঝিলিমিলি-তলে

ম্লান লুলিত অঞ্ছলে
চাহিয়া বসিয়া আছ একা,
বারে বারে মুছে যায় আঁখি-জল-লেখা।
বারে বারে নিভে যায় শিয়রেরে বাতি,
তুমি জাগ, জাগে সাথে বরষার রাতি।

সিক্ত-পক্ষ পাখী
তোমার চাঁপার ডালে বসিয়া একাকী
হয়ত তেমনি করি, ডাকিছ সাথীরে,
তুমি চাহি' আছ শুধু দূর শৈল-শিরে ।।
তোমার আঁখির ঘন নীলাঞ্জন ছায়া
গগনে গগনে আজ ধরিয়াছে কায়া । ...
আজি হেথা রচি' নব নীপ-মালা--
স্মরণ পারের প্রিয়া, একান্তে নিরালা
অকারণে !-জানি আমি জানি
তোমারে পাব না আমি। এই গান এই মালাখানি
রহিবে তাদেরি কন্ঠে- যাহাদেরে কভু
চাহি নাই, কুসুমে কাঁটার মত জড়ায়ে রহিল যারা তবু।
বহে আজি দিশাহারা শ্রাবণের অশান্ত পবন,
তারি মত ছুটে ফেরে দিকে দিকে উচাটন মন,
খুঁজে যায় মোর গীত-সুর

কোথা কোন্ বাতায়নে বসি' তুমি বিরহ-বিধুর।
তোমার গগনে নেভে বারে বারে বিজলীর দীপ,
আমার অঙ্গনে হেথা বিকশিয়া ঝরে যায় নীপ।
তোমার গগনে ঝরে ধারা অবিরল,
আমার নয়নে হেথা জল নাই, বুকে ব্যথা করে টলমল।
আমার বেদনা আজি রূপ ধরি' শত গীত-সুরে
নিখিল বিরহী-কন্ঠে--বিরহিণী--তব তরে ঝুরে!
এ-পারে ও-পারে মোরা, নাই নাই কূল!
তুমি দাও আঁখি-জল, আমি দেই ফুল!
কাজী নজরুল ইসলাম
কাব্যগ্রন্থ - চক্রবাক

.

কবিতা

বিদ্রোহী
--কবি কাজী নজরুল ইসলাম

          বল বীর-
বল উন্নত মম শির !
শির নেহারী আমারি নতশির ওই শিখর হিমাদ্রীর! 
বল বীর -
বল মহাবিশ্বের মহাকাশ ফাড়ি’
চন্দ্র সূর্য্য গ্রহ তারা ছাড়ি’
ভূলোক দূলোক গোলোক ভেদিয়া
খোদার ‘আসন’ আরশ ছেদিয়া,
উঠিয়াছি চির-বিস্ময় আমি বিশ্ববিধাতৃর!
মম ললাটে রুদ্র ভগবান জ্বলে রাজ-রাজটীকা দীপ্ত জয়শ্রীর!

বল বীর-
আমি চির-উন্নত শির !
আমি চিরদুর্দম,দূর্বিনীত, নৃশংস,
মহাপ্রলয়ের আমি নটরাজ , আমি সাইক্লোন, আমি ধ্বংস !
আমি মহাভায় , আমি অভিশাপ পৃথ্বীর ,
আমি দূর্বার,
আমি ভেঙে করি সব চুরমার !
আমি অনিয়ম উচ্ছৃঙ্খল,
অামি দ’লে যাই যত বন্ধন, যত নিয়ম কানুন শৃঙ্খল !
আমি মানি না কো কোনো আইন,
আমি ভরা-তরী করি ভরা-ডুবি, আমি টর্পেডো, আমি ভীম ভাসমান মাইন!
আমি ধূর্জটী, আমি এলোকেশে ঞড় অকাল-বৈশাখীর
আমি বিদ্রোহী, আমি বিদ্রোহী -সুত বিশ্ব-বিধাতৃর !

বল বীর-
চির-উন্নত মম শির !
আমি ঝঞ্ঝা, আমি ঘূর্ণি,
আমি পথ-সম্মুখে যাহা পাই যাই চূর্ণি।
আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ,
আমি আপনার তালে নেচে যাই , আমি মুক্ত জীবনানন্দ।
আমি হাণ্বীর ,আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল ,
আমি চল-চঞ্চল , ঠমকি’ ছমকি’
পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’
ফিং দিয়া দেই তিন দোল ;
আমি চপোলা-চপোল হিন্দোল।
আমি তাই  করি ভাই যখন চাহে এ মন যা’
করি শত্রুর সাথে গলাগলি , ধরি মৃত্যুর  সাথে পাঞ্জা,
আমি উন্মাদ, আমি ঝঞ্ঝা !
আমি মহামারী , আমি ভীতি এ ধরীত্রির ;
আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ণ চির অধীর।

বল বীর-
আমি চির-উন্নত শির !আমি চির-দূরন্ত দুর্মর
আমি দূর্দম মম প্রাণের  পেয়ালা হর্দম হ্যায় হর্দম ভরপুর মদ। আমি হোম-শিখা, আমি সাগ্নিক জমদগ্নি,
আমি যজ্ঞ , আমি পুরোহিত, আমি অগ্নি।
আমি সৃষ্টি , আমি ধ্বংস , আমি লোকালয় , আমি শ্মশান,
আমি অবসান , নিশাবসান। আমি ঈন্দ্রাণী -সুত হাতে চাঁদ ভালে সূর্য়
মম এক হাতে বাঁকা বাঁশের  বাঁশরী আর হাতে রণ তূর্য ;আমি কৃষ্ণ-কন্ঠ, মন্থন-বিষ পিয়া ব্যথা বারিধির।
আমি ব্যোমমেশ , ধরি বন্ধন-হারা ধারা গঙ্গোত্রীর।

বল  বাীর -
চির-উন্নত মম শির ! আমি সন্ন্যাসী সুর  সৈনিক,
আমি যুবরাজ, মম রাজবেশ ম্লান  গৈরিক।
অামি বেদুইন , আমি চেঙ্গিস,
আমি আপনারে ছাড়া  করি না কাহারে কূর্ণিশ।
আমি বজ্র , আমি ঈষাণ-বিষানে ওঙ্কার,
অামি ইস্রাফিলের শৃঙ্গার মহা-হুঙ্কার,
আমি পিনাক-পাণির ডমরু ত্রিশুল , ধর্মরাজের দণ্ড,
আমি চক্র-মহাশঙ্খ, আমি প্রণব-নাদ প্রচণ্ড !
আমি ক্ষ্যাপা দুর্বাসা, বিশ্বমিত্র-শিষ্য,
আমিদাবানল-দাহ, দহন করিব বিশ্ব।
আমি প্রাণ -খোলা  হাসি উল্লাস, আমি সৃষ্টি-বৈরী মহাত্রাস
আমি মহাপ্রলয়ের দ্বদশ রবির রাহু-গ্রাস!
আমি কভু প্রশান্ত , কভু অশান্ত দারুণ স্বেচ্ছাচারী,
আমি অরুণ খুনের তরুণ , আমি বিধির দর্পহারী!
আমি প্রভঞ্জনের  উচ্ছাস আমি বরিধির মহাকল্লোল,
আমি উজ্জ্বল , আমি প্রোজ্জ্বল,
আমি উচ্ছল জল-ছল-ছল, চল ঊর্মির হিন্দোল-দোল! আমি বন্ধনহারা কুমারীর বেনী , তন্বী নয়নে বহ্নি,
আমি ষোড়শীর হৃদি-সরসিজ প্রেম উদ্দাম , আমি ধন্যি ! আমি উন্মন, মন-উদাসীর ,
আমি বিধবার বুকে ক্রন্দন-শ্বাস, হা-হুতাশ আমি হুতাশীর।
আমি বঞ্চিত ব্যথা পথবাসী চির গৃহহারা যত পথিকের ,
আমি অবমানিতের  মরম-বেদনা , বিষ-জ্বালা , প্রিয় লাঞ্ছিতি বুকে গতি ফের
আমি অভিমানী চির ক্ষুব্ধ হিয়ার কাতরতা , ব্যাথা সূনিবিড়,
চিত চুম্বন-চোর -কম্পন আমি থর থর থর প্রথম পরশ কুমারীর !
আমি গোপন-প্রিয়ার চকিত চাহনি, ছল ক’রে দেখা অনুখন,
আমি চপল মেয়ের ভালোবাসা , তাঁর কাঁকণ-চুড়ির কন্-কন্।
আমি চির শিশু, চির কিশোর ,
আমি যৌবন-ভীতু পল্লীবালার আঁচল কাচুলি নিচোর !
আমি উত্তর-বায়ু মলয় -অনিল  উদাস পূরবী হাওয়া,
আমি পথিক-কবির ,গভীর রাগিণী,বেণু-বীণে গান গাওয়া।
আমি আকুল নিদাঘ-তিয়াসা ,  আমি রৌদ্র-রুদ্র রবি
আমি মরু-নির্ঝর ঝর-ঝর, আমি শ্যামলিমা ছায়াছবি!
আমি তুরীয়ানন্দে ছুটে চলি , এ কি উন্মাদ আমি উন্মাদ !
আমি সহসা আমারে চিনেছি , আমার খুলিয়া  গিয়াছে সব বাঁধ ! আমি উহ্থান, আমি পতন , আমি অচেতন
চিতে চেতন,
আমি বিশ্বতোরণে বৈজয়ন্তী , মানব -বিজয় -কেতন।
ছুটি ঝড়ের মতন করতালী দিয়া
স্বর্গ মর্ত্য-করতলে ,
তাজী বোরবাক আর উচ্চৈঃশ্রবা বাহন আমার
হিম্মত-হ্রেষা হেঁকে চলো ! আমি বসুধা -বক্ষে আগ্রেয়াদ্রী, বাড়ব বহ্নি, কালানল ,
আমি পাতালে মাতাল ,অগ্নি-পাথার -কলরোল-কল কোলাহল !
আমি তড়িতে চড়িয়া , উড়ে চলি  জোড় তুড়ি দিয় দিয়া লম্ফ,
আমি ত্রাস সঞ্চারি, ভুবনে সহসা , সঞ্চারি ভূমিকম্প। ধরি বাসুকির ফণা জাপটি-
ধরি স্বর্গীয় দূত জিব্রাইলের আগুনের  পাখা সাপটি। আমি দেবশিশু , আমি চঞ্চল ,
আমি ধৃষ্ট, আমি দাঁত দিয়া  ছিঁড়ি বিশ্ব-মায়ের অঞ্চল!
আমি অর্ফিয়াসের  বাঁশরী,
মহা-সিন্ধু উতলা ঘুমঘুম
ঘুম চুমু দিয়ে করি নিখিল বিশ্বে নিঝঝুম
মম বাঁশরীর তানে পাশরি।
আমি শ্যমের হাতের বাঁশরী । আমি রুষে উঠে যবে ছুটি মহাকাশ ছাপিয়া ,
ভয়ে সপ্ত নরক হাবিয়া দোযখে নিভে নিভে যায় কাঁপিয়া !
আমি বিদ্রোহ-বাহী  নিখিল অখিল ব্যাপিয়া ! আমি শ্রাবণ-প্লাবন-বন্যা,
কভু ধরনীরে কর বরণীয়া, কভূ বিপুল ধ্বংস ধন্যা-
আমি ছিনিয়া আনিব বিষ্ণু-বক্ষহইতে যুগল কন্যা !
আমি অন্যায় , আমি উল্কা , আমি শনি,
আমি ধুমকেতু জ্বলা,  বিষধর কাল-ফণী!
আমি ছিন্নমস্তা চণ্ডী , আমি রণদা সর্বনাশী,
আমি জাহান্নামের আগুনে  বসিয়া হাসি পুস্পের হাসি ! আমি মৃন্ময় , আমি চিন্ময়,
আমি অজর অমর অক্ষয় ,  আমি অব্যয়!
আমি মানব দানব দেবতার ভয়,
বিশ্বের আমি চির -দুর্জয়,
জগদীশ্বর -ঈশ্বর আমি পুরুষোত্তম সত্য,
আমি তাথিয়া তাথিয়া মাথিয়া ফিরি স্বর্গ--পাতাল মর্ত্যে!
আমি উন্মাদ, আমি উন্মাদ।
আমি সহসা আমারে চিনেছি , আজিকে আমার খুলিয়া গিয়াছে সব বাঁধা !
আমি পরশুরামের কঠোর কুঠার ,
        নিঃক্ষত্রিয় করিব বিশ্ব, আনিব শান্তি শান্ত উদারা!
আমি হল বলরাম-স্কন্ধে,
আমি উপাড়ি’ফেলিব অধীন বিশ্ব অবহেলে নব সৃষ্টির মহানন্দে।
মহা-বিদ্রোহী রণ-ক্লান্ত
আমি সেই দিন হব শান্ত,
যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দন-রোল ,আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না ,
অত্যাচারীর খকড়গ কৃপাণ ভমি রণ -ভূমে রণিবে না-
বিদ্রোহী রণ-ক্লান্ত
আমি আমি সেই দিন হব শান্ত !
আমি বিদ্রোহী ভূগু, ভগবান বুকে ্ এঁকে দিই পদ-চিহ্ন,
আমি স্রষ্ট্টা-সূদন, শোক-তাপ-হানা খেয়ালী বিধির বক্ষ করিব-ভিন্ন !
আমি চির -বিদ্রোহী বীর-
        বিশ্ব ছাড়ায়ে উঠিয়াছি একা চির-উন্নত শির !
[অগ্নি-বীণা]

wkpdm=nor-c,nora.toua
-------🌿------

মঙ্গলবার, ৩ এপ্রিল, ২০১৮

বাংলা বানানের নিয়ম ‘ম’ ফলা


◼️প্রশ্নঃ বাংলা বানানের ক্ষেত্রে `ম’ ফলার নিয়ম গুলো আলোচনা কর।
১.পদের প্রথমে ব্যঞ্জনবর্ণের ‘ম’ ফলা সংযুক্ত হলে সাধারণত তার কোন উচ্চারণ হয় না , যেমন স্মরণ (শঁরোন্)  শ্মশান (শঁশান্) স্মৃতি (সৃঁতি)
২.পদের মধ্যে বা অন্তে ‘ম’ –ফলা সংযুক্ত বর্ণের দ্বিত্ব উচ্চারণ হয়ে থাকে। `ম' যেহেতু নাসিক্য ধ্বনি সেজন্য দ্বিত্ব উচ্চারিত শেষ ধ্বনি সামান্য নাসিক্য প্রভাবিত হয়। ছদ্ম (ছদদোঁ) পদ্ম (পদদোঁ) আত্ম (আততোঁ) আকস্মাৎ(আকশশাঁত) রশ্মি(রোশশিঁ)
৩.কিন্তু বাংলা ভাষায় পদের মধ্যে কিংবা অন্তে সর্বত্র  ‘ম’ ফলা যুক্ত ব্যঞ্জনবর্ণটি দ্বিত্ব উচ্চারণ হয় না ।
যেমনঃ-
গ+ম-ফলা : বাগ্মী, যুগ্ম(জুগমো)
ঙ+ম-ফলা: বাঙ্ময়, বাঙ্ময়ী(বাঙ্ মোয়ী)
ট্+ম-ফলাঃ কুট্মল (কটমল্)কুট্মলিত(কটমোলিত)
ণ+ম-ফলাঃ হিরণ্ময়(হিরন্ ময়)ষাণ্মাসিক(শান্ মাসিক্)
ন্+ম-ফলাঃ উন্মাদ উন্মার্গ চিন্ময় জগন্ময় জন্ম মৃন্ময়
ম্+ম-ফলাঃ সম্মান , সম্মতি সম্মামনা
ল্+ম-ফলাঃ গুল্ম বাল্মীকি
৪.যুক্ত ব্যঞ্জনবর্ণের সঙ্গে ‘ম’ ফলার উচ্চারণ হয় না , তবে এ ক্ষেত্রে যুক্ত ব্যঞ্জনবর্ণের শেষ বর্ণটিকে প্রমিত উচ্চারণে সামান্য সানুনাসিক করে তোলে যথা: সূক্ষ্ম লক্ষ্মী (ল+ক+ষ+ম+ী ) লক্ষ্মণ (ল+ক+ষ+ম+ণ) {লক্ খোঁন্} এখানে ম অক্ষরটি বানানে থাকলেও উচ্চারণ  হয়নি ।
৫.এছাড়া বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত কতিপয় ‘ম’ ফলা যুক্ত বানান ও উচ্চারণে সাংস্কৃতি রীতি অনুসৃত।কুস্মান্ড , স্মিত আয়ূস্মতী ইত্যাদি।

◼️প্রশ্ন:-বাংলা বানানে ঙ ,ঞ ধ্বনির উচ্চারণ এর নিয়ম লেখ।
১.  ঙ এবং ং এর উচ্চারণ অং হয় । যেমন ব্যাঙ (ব্যাং)বাঙালি (বাংআলি) বঙ্কিম (বংকিম) রঙ (রং)
২. ঞ এর উচ্চারণ তিন রকম হয় ।
৩ স্বতন্ত্র ঞ এর মতো যেমন মিঞা(মিয়া) মিঞ (মিঁয়ো)
৪.  যুক্ত ঞ+চ/ছ/জ/ঝ- ন এর মতো উচ্চারণ হয় যেমন: অঞ্চল (অনচল) বাঞ্ছা (বানছা) ব্যঞ্জন (ব্যানজোন) ঝঞ্ঝা(ঝনঝা)
আর যদি জ+ঞ হয়  তাহলে উচ্চারণ হবে গ বা গূগঁ এর মতো যেমন জ্ঞান (গ্যাঁন),যজ্ঞ (যোগগোঁ) জ্ঞানী জ্ঞাতো বিজ্ঞ বিজ্ঞপ্তি,বিজ্ঞান,অকৃতজ্ঞ,
জ্ঞাতি,(গ্যাঁতো) জ্ঞাতব্য,জিজ্ঞাস্য [এসকল বানানের ক্ষেত্রে জ+ঞ=গ গগঁ এর উচ্চারণ হব]