উদ্দীপক:
ওয়াহিদ সাহেব একজন ধর্ম.প্রাণ সমাজপতি । কিন্তু তার চারিত্রিক গুনাবলী সরলতা ও ধর্মানুরাগের সুযোগে কতিপয় স্বার্থান্বেষী তার বিরুদ্ধে কিছু বিভ্রান্তিকর ও অযৌক্তিক অভিযোগ উহ্থাপন করে । তিনি এসব অভিযোগ জোরালোভাবে অস্বীকার করা সত্বেও চক্রান্তকারীরা ও নিয়ে মারাত্নক বিশৃংঙ্খলা সৃষ্টি করে এর্ব এক পর্যায়ে তাকে হত্যা করে । এতে সমাজের মানুষের মধ্যে বিভান্তি দেখা দেয় ।
ক.৬৪৪ সালে কে খিলাফতের দায়িত্ব গ্রহন করে ।
খ.কাকে এবং কেন আসাদুল্লাহ্ বলা হয় ।
গ.উদ্দীপকের ঘটনার সাথে তোমার পাঠ্যবইয়ের কোন খলিফার মিল পাওয়া যায় ? লেখ ।
ঘ.উক্ত হত্যাকান্ডের ফলাফল কী হয়েছিল ? বিশ্লেষণ কর ।
উত্তর :-
ক.৬৪৪ সালে হযরত ওসমান (রা:) খিলাফতের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
খ.হয়রত আলী (রা:) প্রতিটি যুদ্ধে অসীম বীরত্ব ও অপূর্ব রনকৌশল প্রর্দশন করেন । একক যুদ্ধে তিনি বহু শত্রুকে ধরাশায়ী ও নিহত করেন। কথিত আছে , খাইবার যুদ্ধে সুরক্ষিত কামুস দূর্গের লৌহদ্বার তিনি এক ধাক্কায় উৎপাটিত করেন এবং সেই কপাট পরে সংযোজিত করতে ৭০ জন যুবকের প্রয়োজন ছিল। আলী (রা:) এর এই শীর্য বীর্জ
দেখে মহানবী (সা:) তাকে আসাদুল্লাহ্ বা আল্লাহর সিংহ উপাধি দিয়েছিলেন।
গ.উদ্দীপকের ঘটনার সাথে আমার পাঠ্যবইয়ের আলোচিত খলিফা ওসমান (রা:) এর মিল রয়েছে।
ওয়াহিদ সাহেব ধর্মপ্রান সমাজপতি। কিন্তু তার চারিত্রিক সরলতা ও ধর্মানুসারে সুযোগে কতিপয় স্বার্থান্বেষী তার বিরোদ্ধে কিছু বিভ্রান্তি কর ও অযৌক্তিক অভিয়োগ উপস্থাপন করে। তিনি এসব অভিযোগ জোরালোভাবে অস্বীকার করা সত্বেও চক্রান্তকারীরা এ নিয়ে মারাত্নক বিশৃংঙ্খলা সৃষ্টি করে এবং এক পর্যায়ে তাকে হত্যা করে।
উদ্দীপকে ওয়াহিদ সাহেবের বিরোদ্ধে যেমন কতিপয় ভিক্তিহীন অভিযোগ উহ্থাপন করে তাকে হত্যা করা হয় তদ্রুপ খলিফা ওসমান (রা:)এর বিরোদ্ধে ও কতিপয় অযৌক্তিক ও ভিক্তীহিন অভিযোগ অভিযোগ উহ্থাপন করা হয়। খলিফা ওসমান (রা:)এর শাসনামলের শেষের দিকে কতিপয় সুবিধাবাধী লোক ওসমান (রা:)এর বিরোদ্ধে কিছু আভিযোগ আনেন। এ সকল অভিযোগের ভিতর ছিল স্বজনপ্রীতি ,বায়তুল মালের অর্থ আত্নসাৎ কুরআন শরীফ পোড়ানো , আবুজর গিফারীকে নির্বাসনে দেওয়া , পশু চারণ ভূমি ব্যাক্তিগত স্বার্থে ব্যবহার প্রভৃতি।কিন্তু নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে বিচার করলে প্রতীয়মান হয় য়ে এ সকল অভিযোগ ছিল ভিক্তিহীন ও বানোয়াট অযৌক্তিক। কিন্তু এ অভিযোগকে পুজি করে কতিপয় লোক তাদের স্বার্থ হাসিল করতে চেয়েছিল। খলিফা ওসমান রা:) এ অভিযোগগুলো খন্ডন করলেও তার ব্যাক্তিগত সচিব মারওয়ানের দুরভিসন্ধিতে তারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। এক পর্যায়ে তারা চরম ঐদ্ধত্য হয়ে উঠে িএবং খলিফার উপর আক্রমণ চালিয়ে তাকে হত্যা করে।
ঘ)উক্ত হত্যাকান্ড তাথা হযরত উসমান (রা:) এর হত্যাকান্ড ইসলামের ইতিহাসে গতিপ্রবাহ নির্ধারনের গভীর ও সুদুর প্রসারী প্রভাব বিস্তার করে। হযরত উসমান হত্যা ইসলামের অন্য যেকোনো ঘটনা অপেক্ষা অধিকতর যুগান্তকারী তার হত্যার কারণে ইসলামের ও মুসলিম বিশ্বের সুদূরপ্রসারী ফলাফল নিচে তুলে ধরা হলো।
গৃহযুদ্ধের সুচনা: প্রথম দুই খলিফার আমলে মুসলিমদের মধ্যে যে ঐক্য ও সংহতি গড়ে ওঠে তা হযরত উসমান রা: এর আমলে নষ্ট হয়ে যায়। হযরত উসমান রা: এর হত্যাকান্ডকে ভিক্তি করে উষ্ট্রের যুদ্ধ সিফফিনের যুদ্ধ এবং কারবালার যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে।
খিলাফতের মর্যাদা হানি : তৃতীয় খলিফা হযরত উসমান রা: এর হত্যাকান্ড ইসলামের ঐক্যের প্রতীক খিলাফতের ধমীয় ও নৈতিক মর্যাদাকে ক্ষুন্ন করে। বিদ্রোহী মুসলিম কর্তৃক একজন খলিফার প্রাণ সংহার দ্ভারা যে বেদনাবিধুর নজির সৃষ্টি হলো তা ইসলামের ঐক্যের প্রতীক খিলাফতের ধর্মীয় ও নৈতিক মর্যাদাকে মারাত্নকভাবে ম্লান করে।
ধর্মীয় ও রাজনৈতিক সম্প্রদায়ের উদ্ভব : হযরত উসমান রা : এর হত্যাকান্ডের পর মুসলিম রাষ্ট্রের রাজনৈতিক পরিস্থিতি অত্যন্ত জটিল ও বহুমুখী হয়ে পড়ে। বিভিন্ন পথ ও মতের সৃষ্টি হয় ।
গনতন্ত্রের সমাধি: হযরত ওসমান রা: হত্যাকান্ডের পর অনেকেই খলিফা হওয়ার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করে কুটকৌশলে হযরত মুয়াবিয়া বিজয়ী হয়ে ৬৬১ সালে খলিফা নির্বাচিত হন।তার ছেলেকে পরবর্তী শাসক নির্বাচনের মাধ্যমে গনতন্ত্রের সমাধি রচিত হয়।
খলিফার প্রাধান্য বিলোপ :হযরত ওসমান রা: হত্যাকান্ডের পর থেকে মদিনা শরীফের প্রাধান্য বিলোপ হতে থাকে।
উদ্দীপক: বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরে পাকিস্তানি মুদ্রা প্রচলিত ছিল। কিন্তু ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর গহমান টাকশাল স্থাপন করে বাংলাদেশী জাতীয় মুদ্রা প্রচলন করে। ফলে ব্যবসায় বাণিজ্যের প্রসার ঘটে এবং দেশ এগিয়ে যায়।
ক.আব্দুল্লাহ ইবনে যোবায়ের কোন যুদ্ধে নিহত হন।
খ.ময়ূর বাহিনী বলতে কী বোঝায়।
গ.উদ্দীপকের ঘটনার সাথে তোমার পাঠ্যবইয়ের কোন উমাইয়া শাসকের মিল রয়েছে ? লিখ।
ঘ.উক্ত শাসক আর কোন কোণ ক্ষেত্রে জাতীয়তাবাদ গড়ে তোলেন।
বাইজান্টাইন সাম্রাজ্যের রাজধানী কনস্টান্টিনোপল অত্যন্ত সুরক্ষিত ছিল। মুসলমানরা অনেকবার চেষ্টা করেও সুরক্ষা ভেদ করতে পারেনি। শত্রুর মোকাবিলা এবং সময় বাঁচানোর জন্য সুলতান দ্বিতীয় মহম্মদ কাঠের তক্তার ওপরে চর্বি মেখে এক রাতে ৭০টি জাহাজ পাহাড়ের ওপর দিয়ে টেনে সেখানে প্রবেশ করান এবং কনস্টান্টিনোপল বিজয় করেন। ফলে বাইজান্টাইন সাম্রাজ্যের পতন হয় এবং মুসলিম শাসন ইউরোপে সম্প্রসারিত হয়। নির্যাতিত খ্রিস্টানরা মুসলমানদের সাদরে গ্রহণ করে। মুসলিম সভ্যতা ও সংস্কৃতি ইউরোপে বিস্তার লাভ করে।
প্রশ্ন:
ক. মুসলিম বিজয়ের প্রাক্কালে বাংলায় কোন বংশের রাজত্ব ছিল। -১
খ. বর্ণপ্রথা ব্যাখ্যা করো। -২
গ. উদ্দীপকের দ্বিতীয় মুহম্মদের অভিযানের সাথে বখতিয়ার খলজির বঙ্গ অভিযানের কৌশলগত কী মিল রয়েছে? ব্যাখ্যা করো।- ৩
ঘ. উদ্দীপকের অভিযানের ফলাফলের সাথে বখতিয়ার খলজির বঙ্গ বিষয়ের ফলাফলের তুলনামূলক আলোচনা করো। -৪
উত্তর: ক. মুসলিম বিজয়ের প্রাক্কালে বাংলায় সেন রাজবংশের রাজত্ব ছিল।
উত্তর: খ. মুসলিম বিজয়ের প্রাক্কালে হিন্দুরা ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য ও শূদ্র—এ চারটি জাতি বা বর্ণে বিভক্ত ছিল। সমাজে ব্রাহ্মণ ও ক্ষত্রিয়দের প্রভাব বেশি ছিল এবং এ প্রথা ভারতে চরম আকার ধারণ করে।
উত্তর: গ. উদ্দীপকের ঘটনা এবং বঙ্গ বিজয় ঘটনা বিশ্লেষণ করলে আমরা দেখতে পাই যে উভয় অভিযানে কৌশলগত মিল রয়েছে। উভয়েই মূল পথে অভিযান না করে বিকল্প পথে অভিযান করেছেন। উভয় অভিযানের ক্ষেত্রে সময়ের একটি ব্যাপার লক্ষ করা যায়। কনস্টান্টিনোপল অভিযান পরিচালনা করা হয় রাতের বেলায় যখন বাইজান্টাইন সম্রাটের বাহিনী বিশ্রামে ব্যাপৃত। অন্যদিকে, বঙ্গ বিজয়ের ক্ষেত্রে মাত্র ১৮ জন অশ্বারোহী নিয়ে মধ্যাহ্নভোজের সময় আক্রমণকালে লক্ষণ সেনের সেনাবাহিনী প্রতিরক্ষা করতে ব্যর্থ হয়। এ ছাড়া উভয়ের আক্রমণ এত দ্রুত ও ক্ষিপ্রগতিসম্পন্ন ছিল যে সেনাবাহিনীর লোকজন বুঝে ওঠার আগেই প্রাসাদ দখল ও পদানত হয়।
উত্তর: ঘ. সুলতান দ্বিতীয় মুহম্মদ কর্তৃক খ্রিস্টান সাম্রাজ্য বাইজান্টাইন বিজয়ের ফলে মুসলিম সভ্যতা ও সংস্কৃতি ইউরোপে বিস্তার লাভ করে। তেমনি মধ্যযুগীয় বাংলার ইতিহাসে ইখতিয়ার উদ্দীন মুহম্মদ বিন বখতিয়ার খলজির বঙ্গ বিজয় বাংলার ইতিহাসে এক নতুন মাত্রা যোগ করে এক সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলে ছিল, যেমন বঙ্গ বিজয়ের মাধ্যমে বখতিয়ার খলজি বাংলায় হিন্দু আধিপত্যের অবসান ঘটিয়ে মধ্যযুগ থেকে বাংলায় মুসলিম শাসনের ভিত্তি স্থাপন করে ইসলামি শাসনব্যবস্থার বিকাশ ঘটান। তিনি বাংলায় একটি ইসলামি শাসনব্যবস্থা ও শাসনপ্রণালি গড়ে তোলেন। এ বিজয়ের মাধ্যমে মুসলমানরা বঙ্গের সামাজিক পটভূমিতে একটি নতুন চিন্তাধারা বয়ে নিয়ে আসেন, ফলে হিন্দু সমাজের মুসলিম বিপ্লবের সূত্রপাত হয় এবং একটি ধর্মীয় সংস্কারের সূচনা হয়। ইসলামি শিক্ষা বিস্তারের লক্ষ্যে বখতিয়ার লক্ষৌতে অনেক মসজিদ ও মাদ্রাসা নির্মাণ করেন। এ বিজয়ের ফলে ভারতবর্ষে মুসলিম সাম্রাজ্য সম্প্রসারিত হয় এবং মুসলিম সভ্যতা ও সংস্কৃতি ভারতবর্ষে বিস্তার লাভ করে। স্যার যদুনাথ সরকার যথার্থই বলেন, ‘যতদিন বাংলায় ইসলাম ধর্ম থাকবে, বখতিয়ার খলজি তত দিন স্বমহিমায় উজ্জ্বল হয়ে থাকবেন।’