সোমবার, ৯ জুলাই, ২০১৮

জীবনান্দদাশের কবিতা

“জীবনান্দদাশের কবিতা”

বুনো হাঁস
পেঁচার ধূসর পাখা উড়ে যায় নক্ষত্রের পানে—
জলা মাঠ ছেড়ে দিয়ে চাঁদের আহ্বানে
বুনো হাঁস পাখা মেলে— সাঁই-সাঁই শব্দ শুনি তার;
এক— দুই— তিন— চার— অজস্র— অপার—

রাত্রির কিনার দিয়ে তাহাদের ক্ষিপ্র ডানা ঝাড়া
এঞ্জিনের মতো শব্দে; ছুটিতেছে— ছুটিতেছে তা’রা।
তারপর প’ড়ে থাকে নক্ষত্রের বিশাল আকাশ,
হাঁসের গায়ের ঘ্রাণ— দু-একটা কল্পনার হাঁস;

মনে পড়ে কবেকার পাড়াগাঁর অরুণিমা সান্যালের মুখ;
উড়ুক উড়ুক তা’রা পউষের জ্যোৎস্নায় নীরবে উড়ুক
কল্পনার হাঁস সব; পৃথিবীর সব ধ্বনি সব রং মুছে গেলে পর
উড়ুক উড়ুক তা’রা হৃদয়ের শব্দহীন জ্যোৎস্নার ভিতর।

কাব্যগন্থ মহাপৃথিবী

“জীবনান্দদাশের কবিতা”

সুবিনয় মুস্তফী.
সুবিনয় মুস্তফীর কথা মনে পড়ে এই হেমন্তের রাতে।
এক সাথে বেরাল ও বেরালের-মুখে-ধরা-ইঁদুর হাসাতে
এমন আশ্চর্য শক্তি ছিলো ভূয়োদর্শী যুবার।
ইঁদুরকে খেতে-খেতে শাদা বেরালের ব্যবহার,
অথবা টুকরো হ’তে-হ’তে সেই ভারিক্কে ইঁদুর:
বৈকুণ্ঠ ও নরকের থেকে তা’রা দুই জনে কতোখানি দূর
ভুলে গিয়ে আধে আলো অন্ধকারে হেঁচকা মাটির পৃথিবীতে
আরো কিছুদিন বেঁচে কিছুটা আমেজ পেয়ে নিতে
কিছুটা সুবিধা ক’রে দিতে যেত— মাটির দরের মতো রেটে;
তবুও বেদম হেসে খিল ধ’রে যেত ব’লে বেরালের পেটে
ইঁদুর ‘হুর্‌রে’ ব’লে হেসে খুন হ’তো সেই খিল কেটে-কেটে।


“জীবনান্দদাশের কবিতা”

মহাপৃথিবী গ্রন্থ
শঙ্খমালা
কান্তারের পথ ছেড়ে সন্ধ্যার আঁধারে
সে কে এক নারী এসে ডাকিল আমারে,
বলিল, তোমারে চাই: বেতের ফলের মতো নীলাভ ব্যথিত তোমার দুই চোখ
খুঁজেছি নক্ষত্রে আমি— কুয়াশার পাখ্‌নায়—
সন্ধ্যার নদীর জলে নামে যে-আলোক
জোনাকির দেহ হ‌তে— খুঁজেছি তোমাকে সেইখানে—
ধূসর পেঁচার মতো ডানা মেলে অঘ্রাণের অন্ধকারে
ধানসিড়ি বেয়ে-বেয়ে
সোনার সিঁড়ির মতো ধানে আর ধানে
তোমারে খুঁজেছি আমি নির্জন পেঁচার মতো প্রাণে।

দেখিলাম দেহ তার বিমর্ষ পাখির রঙে ভরা:
সন্ধ্যার আঁধারে ভিজে শিরীষের ডালে যেই পাখি দেয় ধরা—
বাঁকা চাঁদ থাকে যার মাথার উপর,
শিং-এর মতন বাঁকা নীল চাঁদ শোনে যার স্বর।

কড়ির মতন শাদা মুখ তার,
দুইখানা হাত তার হিম;
চোখে তার হিজল কাঠের রক্তিম
চিতা জ্বলে: দখিন শিয়রে মাথা শঙ্খমালা যেন পুড়ে যায়
সে-আগুনে হায়।

চোখে তার
যেন শত শতাব্দীর নীল অন্ধকার;
স্তন তার
করুণ শঙ্খের মতো— দুধে আৰ্দ্ৰ— কবেকার শঙ্খিনীমালার;
এ-পৃথিবী একবার পায় তারে, পায়নাকো আর।

“জীবনান্দদাশের কবিতা”

বনলতা সেন
হাজার বছর ধ’রে আমি পথ হাঁটিতেছি পৃথিবীর পথে,
সিংহল সমুদ্র থেকে নিশীথের অন্ধকারে মালয় সাগরে
অনেক ঘুরেছি আমি; বিম্বিসার অশোকের ধূসর জগতে
সেখানে ছিলাম আমি; আরো দূর অন্ধকারে বিদর্ভ নগরে;
আমি ক্লান্ত প্রাণ এক, চারিদিকে জীবনের সমুদ্র সফেন,
আমারে দু-দণ্ড শান্তি দিয়েছিলো নাটোরের বনলতা সেন।

চুল তার কবেকার অন্ধকার বিদিশার নিশা,
মুখ তার শ্রাবস্তীর কারুকার্য; অতিদূর সমুদ্রের ’পর
হাল ভেঙে যে-নাবিক হারায়েছে দিশা
সবুজ ঘাসের দেশ যখন সে চোখে দেখে দারুচিনি-দ্বীপের ভিতর,
তেমনি দেখেছি তারে অন্ধকারে; বলেছে সে, ‘এতদিন কোথায় ছিলেন?’
পাখির নীড়ের মতো চোখ তুলে নাটোরের বনলতা সেন।

সমস্ত দিনের শেষে শিশিরের শব্দের মতন
সন্ধ্যা আসে; ডানার রৌদ্রের গন্ধ মুছে ফেলে চিল;
পৃথিবীর সব রং নিভে গেলে পাণ্ডুলিপি করে আয়োজন
তখন গল্পের তরে জোনাকির রঙে ঝিলমিল;
সব পাখি ঘরে আসে— সব নদী— ফুরায় এ-জীবনের সব লেনদেন;
থাকে শুধু অন্ধকার, মুখোমুখি বসিবার বনলতা সেন।।



কাব্যগন্থ বনলতা সেন
mozahid
10/7/2018,thuesday

রবিবার, ৮ জুলাই, ২০১৮

বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ



“বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ”

লেখক: মাইকেল মধুসূদন দত্ত জন্ম: ২৫ জানুয়ারি, ১৮২৪ সাল জন্মস্থান: সাগরদাঁড়ি গ্রাম, যশোর জেলা পিতা: রাজনারায়ণ দত্ত মাতা: জাহ্নবী দেবী *১৮৩৩ খ্রিষ্টাব্দ – কলকাতার হিন্দু কলেজে ভর্তি *১৮৪৩ খ্রিষ্টাব্দ – হিন্দুধর্ম ত্যাগ করে খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ। এবং হিন্দু কলেজ ছেড়ে দিয়ে শিবপুরের বিশপস কলেজে ভর্তি হন অবদান: অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবর্তন, বাংলায় চতুর্দশপদী কবিতা বা সনেটের প্রবর্তন উল্লেখযোগ্য রচনা: কৃষ্ণকুমারী (নাটক), বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ (প্রহসন), মেঘনাদবধ কাব্য (কাব্যগ্রন্থ) মৃত্যু: ২৯ জুন, ১৮৭৩ সাল



“এতক্ষণে”– অরিন্দম কহিলা বিষাদে,
“জানিনু কেমনে আসি লক্ষণ পশিল
রক্ষপুরে! হায়, তাত, উচিত কি তব
এ কাজ, নিকষা সতী তোমার জননী!
সহোদর রক্ষঃশ্রেষ্ঠ! শূলিশম্ভুনিভ
কুম্ভকর্ণ? ভ্রাতৃপুত্র বাসববিজয়ী!

এইখানে ক্লিক করুন [ এতক্ষণে জানতে পারলাম লক্ষণ কী করে এই রাক্ষসপুরের ভিতরে প্রবেশ করলো , হায় চাচা ,একাজ করা কি উচিৎ তোমার মা হচ্ছে সতী নিকষা এব্ং ভাই শ্রেষ্ঠ রাক্ষস রাবণ । মহাদেব বা শিবের মত ভাই কুম্ভকর্ন, ভাইয়ের ছেলে সে [মেঘনাদ] নিজে হচ্ছে ইন্দ্রবিজয়ী ]



নিজগৃহপথ, তাত, দেখাও তস্করে?
চণ্ডালে বসাও আনি রাজার আলয়ে?
কিন্তু নাহি গঞ্জি তোমা, গুরু জন তুমি
পিতৃতুল্য। ছাড় দ্বার, যাব অস্ত্রাগারে,

এইখানে ক্লিক করুন [ নিজের ঘরের পথ কাকা তুমি দেখাও চোরকে. চন্ডালকে (নিচুশ্রেণীর) রাজার বাড়ীতে বসাও, তুমি পৃতৃতুল্য তোমাকে তিরস্কার করিব না ছাড় দাড় যাব অস্ত্রাগারে ]


পাঠাইব রামানুজে শমন-ভবনে,
লঙ্কার কলঙ্ক আজি ভঞ্জিব আহবে।”

এইখানে ক্লিক করুন [ রামের ভাই লক্ষণকে আজ মৃত্যুপুরীতে পাঠিয়ে লঙ্কার কলঙ্ক আজ মোচন করিব যুদ্ধের দ্বারা ]


উত্তরিলা বিভীষণ, “বৃথা এ সাধনা,
ধীমান্! রাঘবদাস আমি; কী প্রকারে
তাঁহার বিপক্ষ কাজ করিব, রক্ষিতে
অনুরোধ?” উত্তরিলা কাতরে রাবণি;-
“হে পিতৃব্য, তব বাক্যে ইচ্ছি মরিবারে!
এইখানে ক্লিক করুন [বিভীষণ উত্তর দিল তোমার এ প্রয়াস বৃথা {মেঘনাদ} আমি হলাম রামের দাস কিভাবে তোমার অনুরোধ রক্ষা করিব,কাতর স্বরে উত্তর দিল রাবনের পুত্র মেঘনাদ পিতৃব্য, আপনার কথা শুনে মরতে ইচ্ছা করছে]



রাঘবের দাস তুমি? কেমনে ও মুখে
আনিলে এ কথা, তাত, কহ তা দাসেরে!

এইখানে ক্লিক করুন [রামচন্দ্রের দাস তুমি কেমনে একথা মুখে আনতে পারলে আমাকে বল চাচা]


স্থাপিলা বিধুরে বিধি স্থাণুর ললাটে;
পড়ি কি ভূতলে শশী যান গড়াগড়ি
ধূলায়? হে রক্ষোরথি, ভুলিলে কেমনে
কে তুমি? জনম তব কোন মহাকুলে?


এইখানে ক্লিক করুন [ চাঁদকে বিধাতা সৃষ্টি করে আকাশের ললাটে স্থাপন করেছেন আকাশের চাঁদ কখনো ভূতলে ধূলায় গড়াগড়ি খায়না, তাই উচ্চ বংশের বিভীষণকে রাম-লক্ষ্মণের সাথে বন্ধুত্ব করা মানায় না। হে রাক্ষসকুলের বীরকে তা কী করে ভুলে গেলেন? রক্ষোরথি: রাক্ষসকুলের বীরমহাকুলে: উচ্চবংশ]


কে বা সে অধম রাম? স্বচ্ছ সরোবরে
করে কেলি রাজহংস পঙ্কজ-কাননে
যায় কি সে কভু, প্রভু, পঙ্কিল সলিলে,

এইখানে ক্লিক করুন [ কে সে অধম সুন্দর জলাশয়ে জলহাঁসের সাথে খেলাকরে সে কখনও কর্দমাক্ত মাটিতে শ্যাওলাভারা বদ্ধজলাশয়ে গোসল করে না ]


শৈবালদলের ধাম? মৃগেন্দ্র কেশরী,
কবে, হে বীরকেশরী, সম্ভাষে শৃগালে
মিত্রভাবে? অজ্ঞ দাস, বিজ্ঞতম তুমি,
অবিদিত নহে কিছু তোমার চরণে।


এইখানে ক্লিক করুন [ কেশরযুক্ত পশুরাজ সিংহ কখনো শিয়ালকে বন্ধু করে নেয় না। বিভীষণ এখানে সিংহ এবং রাম-লক্ষ্মণ শিয়ালতুল্য। আমি তোমার অজ্ঞদাস। তুমি তো বিজ্ঞ। তোমার তো কিছু অজানা নেই ]


ক্ষুদ্রমতি নর, শূর, লক্ষণ; নহিলে
অস্ত্রহীন যোধে কি সে সম্বোধে সংগ্রামে?
এইখানে ক্লিক করুন [ লক্ষণ নিতান্তই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্রমনা বীর। নাহলে কি সে অস্ত্রহীনকে যুদ্ধে আহবান জানায়? ] ক্ষুদ্রমতি নর: ক্ষুদ্রমনা মানুষ, শূর: শক্তিমান

কহ, মহারথী, এ কি মহারথীপ্রথা?
নাহি শিশু লঙ্কাপুরে, শুনি না হাসিবে

এ কথা! ছাড়হ পথ; আসিব ফিরিয়া
এখনি! দেখিব আজি, কোন্ দেববলে,
বিমুখে সমরে মোরে সৌমিত্রি কুমতি!


এইখানে ক্লিক করুন [বলো বীর, এটা বীরের প্রথা? লঙ্কাপুরীতে এমন কোনো শিশু নেই যে এ কথা শুনে হাসতো না। পথ ছেড়ে দাও। এখনি ফিরে আসবো। দেখবো, কোন্ দৈব ক্ষমতাবলে সুমিত্রার সন্তান লক্ষ্মণ আমাকে বাঁধা দেয়। বিমুখে: রুখে দেয় সৌমিত্রি: সুচিত্রার সন্তান- লক্ষ্মণ ]


দেব-দৈত্য-নর-রণে, স্বচক্ষে দেখেছ,
রক্ষঃশ্রেষ্ঠ, পরাক্রম দাসের! কী দেখি
ডরিবে এ দাস হেন দুর্বল মানবে?

এইখানে ক্লিক করুন [দেবতা, দৈত্যের, নরের যুদ্ধে আমার পরাক্রম বা ক্ষমতা তুমি দেখেছো। কী দেখে তোমার এরকম একজন দুর্বল মানুষকে দেখে তোমার এদাস ভয় পাবে।]


নিকুম্ভিলা যজ্ঞাগারে প্রগল্ভে পশিল
দম্ভী; আজ্ঞা কর দাসের! শাস্তি নরাধমে।

এইখানে ক্লিক করুন [মেঘনাদের যজ্ঞ বা পূজার স্থান।দম্ভ সহকারে প্রবেশ করে এবং চাচা বিভীষনের নিকট হতে লক্ষণকে শাস্তিদেওয়ার জন্য অনুমতি চান।] এখানে অগ্নিদেবের পূজারত অবস্থায় অন্যায় যুদ্ধে মেঘনাদ নিহত হয়।


তব জন্মপুরে, তাত, পদার্পন করে
বনবাসী! হে বিধাতঃ, নন্দন-কাননে
ভ্রমে দুরাচার দৈত্য? প্রফুল্ল কমলে
কীটবাস? কহ তাত, সহিব কেমনে
হেন অপমান আমি,- ভ্রাতৃ-পুত্র তব?
তুমিও, হে রক্ষোমণি, সহিছ কেমনে?”


এইখানে ক্লিক করুন [হে পিতৃব্য, তোমার জন্মভূমিতে এক বনবাসী ঢুকে পড়েছে।হে বিধানকর্তা, স্বর্গীয় উদ্যানে এক দুরাচার দৈত্য ভ্রমণ করছে ফুটন্ত পদ্মফুলে এক কীট ঢুকে পড়েছে। বলো পিতৃব্য, তোমার ভাতৃপুত্র হয়ে এ অপমান আমি কী করে সইবো।তুমিই বা কিভাবে সহিতেছে ]


মহামন্ত্র-বলে যথা নম্রশিরঃ ফণী,
মলিনবদন লাজে, উত্তরিলা রথী
রাবণ-অনুজ, লক্ষি রাবণ-আত্মজে;
“নহি দোষী আমি, বৎস; বৃথা ভর্ৎস মোরে

এইখানে ক্লিক করুন [প্রচণ্ড মন্ত্রের শক্তিতে সাপ লজ্জায় যেভাবে মাথানত করে, রাবণের ছোটভাই বিভীষণও তেমনি মাথানত করে মেঘনাদকে লক্ষ করে উত্তর দিল, “হে বৎস আমি দোষী নই। অহেতুক তুমি আমাকে দোষী করছো। ভর্ৎস: ভর্ৎসনা বা তিরষ্কার করে ]


তুমি! নিজ কর্ম-দোষে, হায়, মজাইলা
এ কনক-লঙ্কা রাজা, মজিলা আপনি!
বিরত সতত পাপে দেবকুল; এবে
পাপপূর্ণ লঙ্কাপুরী; প্রলয়ে যেমতি
বসুধা, ডুবিছে লঙ্কা এ কালসলিলে!


এইখানে ক্লিক করুন [নিজ কর্মদোষে এ স্বর্ণালঙ্কার রাজা লঙ্কাকে মজিয়েছে এবং নিজেও মজেছে।কনক-লঙ্কা: স্বর্ণালঙ্কা দেবকূল সর্বদা পাপ থেকে দূরে থাকে, কিন্তু আজ লঙ্কাপুরী পাপে পূর্ণ হয়ে গেছে। প্রলয় বা ঝড়ে যেভাবে পৃথিবী ধ্বংস হয়, যেভাবে লক্ষ্মণ যেন এক অশুভ কালজলে নিমজ্জিত হচ্ছে।


রাঘবের পদাশ্রয়ে রক্ষার্থে আশ্রয়ী
তেঁই আমি। পরদোষে কে চাহে মজিতে?”
রুষিলা বাসবত্রাস। গম্ভীরে যেমতি

এইখানে ক্লিক করুন [সেজন্য আমি রামের পায়ের কাছে আশ্রুয় নিয়েছি। পরের দোষে আমি কেন মগ্ন হবো? সেজন্য এ কথাশুনে মেঘনাদ{বাসবত্রাস} রাগান্বিত হয়ে উঠে]


নিশীথে অম্বরে মন্দ্রে জীমূতেন্দ্র কোপি,
কহিলা বীরেন্দ্র বলী,-“ধর্মপথগামী,
হে রাক্ষসরাজানুজ, বিখ্যাত জগতে
তুমি; – কোন্ ধর্ম মতে, কহ দাসে, শুনি,
জ্ঞাতিত্ব, ভ্রাতৃত্ব, জাতি,- এ সকলে দিলা
এইখানে ক্লিক করুন [ রাতে আকাশে যেভাবে ভয়ানকরূপে মেঘ গর্জে ওঠে সেভাবে বীর বলবান (মেঘনাদ) বললো, হে ধর্মগামী, তুমি কোন ধর্মমতে জাতি, কুল সম্পর্ক সব বিসর্জন দিলে? ]

অম্বরে:= আকাশে ,মন্দ্রে:= শব্দে বা ধ্বনিতে
জীমূতেন্দ্র:= মেঘের ডাক
কোপি:= গর্জে ওঠে
বীরেন্দ্র বলী:= বীর বলজন
রাক্ষসরাজানুজ:=রাক্ষস রাজার অনুজ বা রাক্ষসের ছোটভাই
জ্ঞাতিত্ব:= মানবসম্পর্ক , জলাঞ্জলি:= বিসর্জন দেয়া)


জলাঞ্জলি? শাস্ত্রে বলে, গুণবান্ যদি
পরজন, গুণহীন স্বজনে, তথাপি
নির্গুণ স্বজন শ্রেয়ঃ, পরঃ পরঃ সদা!
এ শিক্ষা, হে রক্ষোবর, কোথায় শিখিলে?

এইখানে ক্লিক করুন [শাস্ত্রে বলা হয়েছে, গুণবান পরজনের চেয়ে নির্গুণ স্বজন উত্তম। পর সবসময় পর থাকে। এই যে আত্মীয় স্বজনকে ত্যাগ করার শিক্ষা, হে রাক্ষসকূলের কর্তা, তুমি কোথায় শিখিলে]


কিন্তু বৃথা গঞ্জি তোমা! হেন সহবাসে,
হে পিতৃব্য, বর্বরতা কেন না শিখিবে?
গতি যার নীচ সহ, নীচ সে দুর্মতি।”

এইখানে ক্লিক করুন ✿ [কিন্তু অহেতুক তোমাকে তিরস্কার করছি। যাদের সঙ্গে তুমি বন্ধুত্ব করে বসবাস করছো, তাদের কাছে বর্বরতা তুমি কেনই বা শিখবে না? নীচ প্রকৃতির মানুষের সঙ্গে যার বসবাস, তার মন তো নীচ হবেই।]


মূলভাব:

আধুনিক বাংলা কবিতার জনক মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত তাঁর বহুমুখী প্রতিভা দ্বারা মানুষ মানবতার জয় গান গেয়েছেন। পুরানো বিভীষণ চরিত্রের বিশ্বাসঘাতকতার স্বরুপ উন্মোচন পূর্বক মেঘনাদের মাধ্যমে কবির স্বদেশের প্রতি গভীর প্রেম,ভালোবাসা ও দায়িত্ববোধের বহিঃপ্রকাশ-ই হলো ‘বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ’ কাব্যাংশের মূল প্রতিপাদ্য বিষয়।

মূলভাব :

বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত মহাকাব্য মেঘনাদবধ কাব্য থেকে নেওয়া হয়েছে। এখানে রাবণের ছেলে মেঘনাদ এর সাথে তার চাচা বিভীষণের কথোপকথন হচ্ছে। রামের সঙ্গে রাবণের যুদ্ধে বিভীষণ স্বপক্ষ ত্যাগ করে এবং রামের দলে যোগ দেয়। যুদ্ধের আগে মেঘনাদ যখন তার জজ্ঞাগারে যায় প্রার্থনা করতে, তখন বিভীষণের সাহায্যে সেখানে লক্ষ্মণও প্রবেশ করে এবং নিরস্ত্র মেঘনাদকে যুদ্ধের জন্য আহবান করে। মেঘনাদ তখন দেখতে পায় দরজায় তারি চাচা বিভীষণ দাঁড়িয়ে আছে। তখন সে সব ষড়যন্ত্র বুঝতে পারে এবং তার চাচাকে উদ্দেশ্য করে এই কথাগুলো বলে। তখন তাদের মাঝে যে কথোপকথন হয়।


পাঠ পরিচিতির জন্য:- এইখানে দেখুন “বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ” কাব্যাংশটুকু মাইকেল মধুসূদন দত্তের ‘মেঘনাদবধ-কাব্যে’র ‘বধো’ (বধ) নামক ষষ্ঠ সর্গ থেকে সংকলিত হয়েছে।সর্বমোট নয়টি সর্গে বিন্যস্ত ‘মেঘনাদবধ-কাব্যে’র ষষ্ঠ সর্গে লক্ষ্মণের হাতে অন্যায় যুদ্ধে মৃত্যু ঘটে অসমসাহসী বীর মেঘনাদের। রামচন্দ্র কর্তৃক দ্বীপরাজ্য স্বর্ণলঙ্কা আক্রান্ত হলে রাজা রাবণ শত্রুর উপর্যুপরি দৈব-কৌশলের কাছে অসহায় হয়ে পড়েন। ভ্রাতা কুম্ভকর্ণ ও পুত্র বীরবাহুর মৃত্যুর পর মেঘনাদকে পিতা রাবণ পরবর্তী দিবসে অনুষ্ঠেয় মহাযুদ্ধের সেনাপতি হিসেবে বরণ করে নেন। যুদ্ধজয় নিশ্চিত করার জন্য মেঘনাদ যুদ্ধযাত্রার পূর্বেই নিকুম্ভিলা যজ্ঞাগারে ইষ্টদেবতা অগ্নিদেবের পূজা সম্পন্ন করতে মনস্থির করে। মায়া দেবীর আনুকূল্যে এবং রাবণের অনুজ বিভীষণের সহায়তায়, লক্ষ্মণ শত শত প্রহরীর চোখ ফাঁকি দিয়ে নিকুম্ভিলা যজ্ঞাগারে প্রবেশ করতে সমর্থ হয়। কপট লক্ষ্মণ নিরস্ত্র মেঘনাদের কাছে যুদ্ধ প্রার্থনা করলে মেঘনাদ বিস্ময় প্রকাশ করে। শত শত প্রহরীর চোখ ফাঁকি দিয়ে নিকুম্ভিলা যজ্ঞাগারে লক্ষ্মণের অনুপ্রবেশ যে মায়াবলে সম্পন্ন হয়েছে, বুঝতে বিলম্ব ঘটে না তার। ইতোমধ্যে লক্ষ্মণ তলোয়ার কোষমুক্ত করলে মেঘনাদ যুদ্ধসাজ গ্রহণের জন্য সময় প্রার্থনা করে লক্ষ্মণের কাছে। কিন্তু লক্ষ্মণ তাকে সময় না দিয়ে আক্রমণ করে। এ সময়ই অকস্মাৎ যজ্ঞাগারের প্রবেশদ্বারের দিকে চোখ পড়ে মেঘনাদের; দেখতে পায় বীরযোদ্ধা পিতৃব্য বিভীষণকে। মূহুর্তে সবকিছু স্পষ্ট হয়ে যায় তার কাছে। খুল্লতাত বিভীষণকে প্রত্যক্ষ করে দেশপ্রেমিক নিরস্ত্র মেঘনাদ যে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে, সেই নাটকীয় ভাষ্যই “বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ” অংশে সংকলিত হয়েছে। এ অংশে মাতৃভূমির প্রতি ভালোবাসা এবং বিশ্বাসঘাতকতা ও দেশদ্রেহিতার বিরুদ্ধে প্রকাশিত হয়েছে ঘৃণা। জ্ঞাতিত্ব, ভ্রাতৃত্ব ও জাতিসত্তার সংহতির গুরুত্বের কথা যেমন এখানে ব্যক্ত হয়েছে তেমনি এর বিরুদ্ধে পরিচালিত ষড়যন্ত্রকে অভিহিত করা হয়েছে নীচতা ও বর্বরতা বলে। উনিশ শতকের বাংলার নবজাগরণের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সন্তান মাইকেল মধুসূদন দত্ত বাল্মীকি-রামায়ণকে নবমূল্য দান করেছেন এ কাব্যে। মানবকেন্দ্রিকতাই রেনেসাঁস বা নবজাগরণের সারকথা। ওই নবজাগরণের প্রেরণাতেই রামায়ণের রাম-লক্ষ্মণ মধুসূদনের লেখনীতে হীনরূপে এবং রাক্ষসরাজ রাবণ ও তার পুত্র মেঘনাদ যাবতীয় মানবীয় গুণের ধারকরূপে উপস্থাপিত। দেবতাদের আনুকূল্যপ্রাপ্ত রাম-লক্ষ্মণ নয়, পুরাণের রাক্ষসর্জ রাবণ ও তার পুত্র মেঘনাদের প্রতিই মধুসূদনের মমতা ও শ্রদ্ধা। “বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ” কাব্যাংশটি ১৪ মাত্রার অমিল প্রবহমান যতিস্বাধীন অক্ষরবৃত্ত ছন্দে রচিত। প্রথম পঙক্তির সঙ্গে দ্বিতীয় পঙক্তির চরণান্তের মিলহীনতার কারণে এ ছন্দ ‘অমিত্রাক্ষর ছন্দ’ নামে সমধিক পরিচিত। এ কাব্যাংশের প্রতিটি পঙক্তি ১৪ মাত্রায় এবং ৮+৬ মাত্রার দুটি পর্বে বিন্যস্ত। লক্ষ করার বিষয় যে, এখানে দুই পঙক্তির চরণাধিক মিলই কেবল পরিহার করা হয়নি, যতিপাত বা বিরামচিহ্নের স্বাধীন ব্যবহারও হয়েছে বিষয় বা বক্তব্যের অর্থের অনুষঙ্গে। এ কারণে ভাবপ্রকাশের প্রবহমানতাও কাব্যাংশটির ছন্দেরবিশেষ লক্ষ্মণ হিসেবে বিবেচ্য


mozahid
10/7/2018,thuesday




শনিবার, ৭ জুলাই, ২০১৮

সমার্থক শব্দ


প্রশ্ন:সমার্থক বা প্রতি শব্দ বলতে কি বোঝ ? সামর্থক শব্দের প্রয়োজন লেখ ?

উত্তর : সমার্থক শব্দের অর্থ হল সমার্থবোধক,সমার্থজ্ঞাপক,একার্থবোধক, এক বা অনুরূপ অর্থবিশিষ্ট। বাংলা ভাষায় এমন কতগুলো শব্দ আছেন যা অন্য একটি শব্দের প্রতিশব্দ অর্থাৎ অন্য একটি শব্দ একই অর্থ প্রকাশ করে। একেই সমার্থক শব্দ বলে।

অথবা যে সকল শব্দ একই অর্থ প্রকাশ করে তাকে সমার্থক শব্দ বলে। যেমন:

অগ্নি শব্দের প্রতিশব্দ আগুন, অনল ,সর্বভূক,দহন,শিখা।
আগুন=আগুনে সবকিছু পুড়ে নি:শেষ হয়ে যায়।
অনল=আমার সুখের ঘর অনলে পুড়ে ছাই হল।
সর্বভুক=আগুন হল সর্বভূক ,মূহুর্তেই সবকিছু খেয়ে নিঃশেষ করে ফেলে।
গহন=দহনে পুড়িল হৃদয দেখিল না কেউ।
শিখা=জ্বেলে দে তোর বিজয় শিখা।

১.সমার্থক শব্দের মাধ্যমে ভাষার শব্দভানডার সমৃদ্ধ হয়
২.সমার্থক শব্দের ব্যবহারে একই শব্দ বার বার প্রয়োগজনিত সমস্যা দুর হয়।
৩.এর ব্যবহার প্রকাশশৈলীতে অভিনবত্ব আনয়ন করে।
৪.বাক্যের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়।
৫.মনোভাবের সার্থক প্রকাশ ঘটাতে সমার্থশব্দ সাহায্য করে।
৬.এর মাধ্যমে পাঠক নতুন নতুন শব্দের সাথে পরিচিত হতে পারে।
সাহিত্যের মিল দেওয়ার জন্য ,বক্তৃতা আকর্ষণীয় করার জন্য সমার্থক শব্দের ভুমিকা খুবেই গুরুত্বপূর্ণভ। যেমন :সাগর জলে সিনান করি সাজল এলোচুলে। এখানে সাগর এর প্রতিশব্দ সমুদ্র ব্যবহার করলে ছন্দের পতন ঘটে।

প্রশ্ন: যে কোন পাঁচটি শব্দের ২টি/৩টি করে সমার্থক শব্দ লেখ?

বন = কানন অরণ্য, জঙ্গল,
অপূর্ব =আশ্চর্য, অলৌকিক, অপরূপ,
ঈশ্বর = সৃষ্টিকর্তা, ভগবান, বিধাতা
অক্ষয় = ক্ষয়হীন, চিরন্তন, নাশহীন, অশেষ,
মহৎ = উন্নত, উদার, মহান,


কতিপয় সমার্থক শব্দের তালিকাঃ--

সূর্য = দিবাকর, প্রভাকর, ভাস্কর, রবি, তপন, দিনেশ, ভানু, রোদ, সবিতা, আদিত্য, মার্তন্ড, দিনমনি, দিননাথ, দিবাবসু, অর্ক, অংশু, কিরণমালী, অরুণ, মিহির, পুষা, সূর, মিত্র, দিনপতি, বালকি, অর্ষমা
পৃথিবী = ধরা, ধরাধাম, ধরণী, ধরিত্রী, ভুবন, ভূ, বসুধা, বসুন্ধরা, বিশ্ব, পৃথিবী, দুনিয়া, জগত, সংসার, সৃষ্টি, মর্ত, মর্তধাম, মহী, মেদিনী, অবনী, স্থলভাগ, ভূ-মণ্ডল, ইহলোক
আলো = বাতি, প্রদীপ, জ্যোতি, কিরণ, দীপ্তি, প্রভা,
সাগর = সমুদ্র, বারিধি, পারাবার, পাথার, বারীন্দ্র, অর্ণব, সিন্ধু, জলনিধি, জলধি, জলধর, সায়র, জলাধিপতি, রত্নাকর , বরুণ, দরিয়া, বারীন্দ্র, বারীশ, পয়োনিধি, তোয়ধি, বারিনিধি, অম্বুধি
অগ্নি = আগুন, জ্বালানি, তেজ, শিখা, অনল, বহ্নি, হুতাশন, পাবক, দহন, সর্বভূক, বৈশ্বানর, কৃশানু, বিভাবসু, সর্বশুচি
পর্বত = পাহাড়, অচল, অদ্রি, গিরি, ভূধর, শৈল, অটল, চূড়া, নগ, শৃঙ্গী, শৃঙ্গধর, মহীধর, মহীন্দ্র
সোনা= স্বর্ণ, কনক, কাঞ্চন, সুবর্ণ, হেম, হিরণ্য, হিরণ
বন = কানন অরণ্য, জঙ্গল, বিপিণ, কুঞ্জ, কান্তার, অটবি, বনানী, গহন
পাখি = পক্ষী, খেচর, বিহগ, বিহঙ্গ, বিহঙ্গম, পতত্রী, খগ, অণ্ডজ, শকুন্ত, দ্বিজ
আকাশ = গগন, অম্বর, নভঃ, ব্যোম, ঊর্ধ্বলোক, মেঘমণ্ডল, আসমান, নভোমণ্ডল, খগ, অন্তরীক্ষ
অন্ধকার = আঁধার, তমসা, তিমির, তমঃ, তমিস্রা, আন্ধার, তমস্র
ঈশ্বর = সৃষ্টিকর্তা, ভগবান, বিধাতা, বিষ্ণু, আল্লাহ, খোদা, বিশ্বপতি, পরমাত্মা, জগদীশ্বর, আদিনাথ
দেবতা = অমর, দেব, সুর, ত্রিদশ, অজর, ঠাকুর
জল = পানি, অম্বু, জীবন, নীর সলিল, বারি, উদক, পয়ঃ, তোয়, অপ, জীবন, পানীয়
বৃক্ষ = গাছ, শাখী, বিটপী, অটবি, দ্রুম, মহীরূহ, তরু, পাদপ
বায়ু = বাতাস, অনিল, পবন, হাওয়া, সমীর, সমীরণ, মারুত, গন্ধবহ
চাঁদ = চন্দ্র, নিশাকর, বিধু, শশধর, শশাঙ্ক, সুধাংশু, হিমাংশু, চন্দ্রমা, শশী, সুধাকর, সোম, ইন্দু, নিশাকান্ত, মৃগাঙ্ক, রজনীকান্ত
মানুষ = লোক,মানব, মনুষ্য, , জন, নৃ, নর
মৃত্যু = ইন্তেকাল, ইহলীলা-সংবরণ, ইহলোক ত্যাগ, চিরবিদায়, জান্নাতবাসী হওয়া, দেহত্যাগ, পঞ্চত্বপ্রাপ্তি, পরলোকগমন, লোকান্তরগমন, শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ, স্বর্গলাভ
মহৎ = উন্নত, উদার, মহান, বড়, বিশিষ্ট, বিশাল, বৃহৎ, মস্ত, মহানুভব, বদান্য, মহীয়ান পণ্ডিত = বিদ্বান, জ্ঞানী, বিজ্ঞ, অভিজ্ঞ
চালাক = চতুর, বুদ্ধিমান, নিপুণ, কুশল, ধূর্ত, ঠগ, সপ্রতিভ
সাহসী = অভীক, নির্ভীক
অপূর্ব =আশ্চর্য, অলৌকিক, অপরূপ, অভিনব, বিস্ময়কর, আজব, তাজ্জব, চমকপ্রদ, অবাক করা, মনোরম, অদ্ভুত, সুন্দর
উত্তর = জবাব, প্রতিবাক্য, মীমাংশা, সাড়া, সিদ্ধান্ত
কপাল = ললাট, ভাল, ভাগ্য, অদৃষ্ট, নিয়তি, অলিক
ইচ্ছা = আকাঙ্ক্ষা, অভিলাষ, অভিরুচি, অভিপ্রায়, আগ্রহ, স্পৃহা, কামনা, বাসনা, বাঞ্চা, ঈপ্সা, ঈহা
পর্দা = আড়াল, পরদা, পর্দা, যবনিকা, মশারি, অভিনয়শেষ, অবগুণ্ঠন, আবরণ, ছদ্মবেশ, ত্তড়, আচ্ছাদন, প্রাবরণ, মুড়ি, বিছানার চাদর,
ঝিল্লী, জীবদেহের ঝিল্লি, উদ্ভিদ্দেহের ঝিল্লি
মাটি = ক্ষিতি, মৃত্তিকা
উত্তম = সেরা, শ্রেষ্ঠ, প্রকৃষ্ট, ভালো, অগ্রণী, অতুল
দৃষ্টান্ত = উদাহরণ, নিদর্শন, নজির, নমুনা, উল্লেখ, অতিষ্ঠা
একতা = ঐক্য, ঐক্যবদ্ধ, মিলন, একত্ব, অভেদ, সংহতি, একাত্মতা, একীভাব
পূর্ণ = সম্পূর্ণ, আস্ত, গোটা, অক্ষত, অখন্ড, সমগ্র, সমাগ্রিক
আদি = প্রথম, প্রাচীন, মূল, আরম্ভ, অগ্র, পূর্ব,
আইন = নিয়ম, কানুন, বিধি, বিধান, ধারা, অনুবিধি। বিহিতক, অধিনিয়ম, উপবিধি, বিল, নিয়মাবলি, বিধিব্যবস্থা
আসল = প্রকৃত, খাঁটি, মূলধন, মৌলিক, মূল, যথার্থ
আনন্দ = সুখ, হাসি, খুশি, হাসিখুশি, মজা, হর্ষ, হরষ, পুলক,স্ফূতর্ত, সন্তোষ, পরিতোষ, প্রসন্নতা, আমোদ, প্রমোদ, উল্লাস, তুষ্টি
দু:খ = কষ্ট, মেহনত, যন্ত্রনা, ক্লেশ, আয়াস
অবস্থা = দশা, রকম, প্রকার, গতিক, হাল, স্তিতি, অবস্থান, পরিবেশ, ঘটনা, ব্যাপার, প্রসঙ্গ, হালচাল
অক্ষয় = ক্ষয়হীন, চিরন্তন, নাশহীন, অশেষ, অনন্ত, অব্যয়, অবিনাশী, অলয়, অনশ্বর, লয়হীন, অমর, স্থায়ী
খ্যাতি = যশ, প্রসিদ্ধি, সুখ্যাতি, সুনাম, নাম, সুবাদ, প্রখ্যাতি, সুযশ, বিখ্যাতি, নামযশ, নামডাক, প্রখ্যা, প্রচার, হাতযশ, প্রতিপত্তি, প্রতিষ্ঠা।
কুল = বংশ, গোত্র, জাতি, বর্ণ, গণ, সমূহ, অনেক, যূথ, জাত, শ্রেণী,
ফুল = পুষ্প, কুসুম, প্রসূন, রঙ্গন
পদ্ম = কমল, উৎপল, সরোজ, পঙ্কজ, নলিন, শতদল, রাজীব, কোকনদ, কুবলয়, পুণ্ডরীক, অরবিন্দ, ইন্দীবর, পুষ্কর, তামরস, মৃণাল, সরসিজ, কুমুদ
মেঘ = জলধর, জীমৃত, বারিদ, নীরদ, পয়োদ, ঘন, অম্বুদ, তায়দ, পয়োধর, বলাহক, তোয়ধর
বিদ্যুত = বিজলী, ত্বড়িৎ, ক্ষণপ্রভা, সৌদামিনী, চপলা, চঞ্চলা, দামিনী, অচিরপ্রভা, শম্পা
নদী = তটিনী, স্রোতস্বিনী, স্রোতস্বতী, তরঙ্গিনী, প্রবাহিনী, শৈবালিনী, গাঙ, স্বরিৎ, নির্ঝরিনী, কল্লোলিনী
নৌকা = নাও, তরণী, জলযান, তরী
তীর = কূট, তট, সৈকত, কূল, পাড়, পুলিন, ধার, কিনারা
ঢেউ= তরঙ্গ, ঊর্মি, লহরী, বীচি, মওজ
রাত = রাত্রি, রজনী, নিশি, যামিনী, শর্বরী, বিভাবরী, নিশা, নিশিথিনী, ক্ষণদা, ত্রিযামা
দিন = দিবস, দিবা, দিনমান
দেহ = গা, গতর, গাত্র, তনু, শরীর, বিগ্রহ, কায়, কলেবর, অঙ্গ, অবয়ব, , কাঠামো, আকৃতি
ঘর = গৃহ, আলয়, নিবাস, আবাস, আশ্রয়, নিলয়, নিকেতন, ভবন, সদন, বাড়ি, বাটী, বাসস্থান
ধন = অর্থ, বিত্ত, বিভব, সম্পদদেহ,
দ্বন্দ্ব = বিরোধ, ঝগড়া, কলহ, বিবাদ, যুদ্ধ
নারী = অবলা, কামিনী, মহিলা, স্ত্রীলোক, রমণী, ললনা, অঙ্গনা, ভাসিনী, কান্তা, সীমন্তনী
স্ত্রী = পত্নী, জায়া, সহধর্মিণী, ভার্যা, বেগম, বিবি, বধূ, অর্ধাঙ্গী, জীবন সাথী, বউ, গৃহিণী, গিন্নী
পিতা = বাবা, আব্বা, জনক,
মাতা = মা, গর্ভধারিণী, প্রসূতি, জননী, জন্মদাত্রী
পুত্র = ছেলে, তনয়, নন্দন, সুত, আত্মজ
কন্যা = মেয়ে, দুহিতা, দুলালী, আত্মজা, নন্দিনী, পুত্রী, সূতা, তনয়া
কোকিল = পরভৃত, পিক, বসন্তদূত
গরু = গো, গাভী, ধেনু
রাজা = নৃপতি, নরপতি, ভূপতি, বাদশাহ
স্বর্গ = দেবলোক, দ্যুলোক, বেহেশত, সুরলোক, দ্যু, ত্রিদশালয়, ইন্দ্রালয়, দিব্যলোক, জান্নাত
বিলাস = আরাম, শৌখিনতা
উঁচু = লম্বা, দীর্ঘ, মহৎ, বড় বড়, উঁচা, উচ্চ, তুঙ্গ, সমুন্নত, আকাশ-ছোঁয়া, গগনচূম্বী, অভ্রভেদী, অত্যুচ্চ, সুউচ্চ
অক্লান্ত = ক্লান্তিহীন, শ্রান্তিহীন, নিরলস, অনলস, পরিশ্রমী, অদম্য, উদ্যমী, অশ্রান্ত
অবকাশ = সময়, ফূসরত, অবসর, ছুটি, সুযোগ, বিরাম
সাপ = অহি, আশীবিষ, নাগ, ফণী, ভুজঙ্গ, সর্প, উরহ, নাগিনী, ভুজগ, ভুজঙ্গম, সরীসৃপ, ফণাধর, বিষধর, বায়ুভুক
হাতি = হস্তী, করী, দন্তী, মাতঙ্গ, গজ, ঐরাবত, দ্বিপ, দ্বিরদ, বারণ, কুঞ্জর
ঘোড়া = অশ্ব, ঘোটক, তুরগ, বাজি, হয়, তুরঙ্গ, তুরঙ্গম
হাত = কর, বাহু, ভুজ, হস্ত, পাণি
চুল = অলক, কুন্তল, কেশ, চিকুর
চোখ = অক্ষি, চক্ষু, নয়ন, নেত্র, লোচন, আঁখি, দর্শনেন্দ্রিয়
কান = কর্ণ, শ্রবণ
লাল = লোহিত, রক্তবর্ণ
class="sansserif">

শুক্রবার, ৬ জুলাই, ২০১৮

বাণী চিরন্তন


Bootstrap Example

বাণী চিরন্তন

“ডাকছে কৃষ্ণপক্ষের রাত- ঘুমিয়ে পড়লে নাকি? লুট হয়ে গেল ইতিহাস, স্মৃতি, পতাকা কৃষ্ণচুড়া- চেতনায় জ্বলে বৈরী আগুন- ঘুমিয়ে পড়লে নাকি?”

- রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ

“ওর হাতে ফুলগুলো তুলে দিয়ে বললাম 'তুমিও কি ফুল হয়ে ঝ'রে যাবে?”

- রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ