সোমবার, ১৪ মে, ২০১৮

ব্যাকরণ প্রশ্ন যেগুলো


প্রশ্ন: ই কার ঈ কার ব্যবহারের নিয়ম উদাহরণসহ লেখ ।

ই-কার ব্যবহারের পাঁচটি নিয়ম  নিচে দেওয়া হলো
১. বাংলা ভাষায় ব্যবহূত তৎসম শব্দের বানানে ই-কার ও ঈ-কার দুটিরই প্রয়োগ আছে। কিন্তু অ-তৎসম শব্দের বানানে ‘ই’ ধ্বনির ক্ষেত্রে সর্বত্র কেবল ই-কার ব্যবহার করা সংগত। যেমন—পাখি, চিংড়ি, কেরানি ইত্যাদি।
২.  মৌলিক ক্রিয়াবাচক শব্দ ও পদে ‘ই’ ধ্বনির সর্বত্রই ই-কার হয়ে থাকে। যেমন— চিমটানো, বিলানো  ইত্যাদি।
৩. বিশেষণসূচক ও স্ত্রীবাচক ‘ঈ’ প্রত্যয়ান্ত সংখ্যাবাচক শব্দগুলো ছাড়া সাধারণভাবে সংখ্যাবাচক শব্দের বানানে ই-কার হয়। যেমন—তিন, চল্লিশ, আশি ইত্যাদি।
৪. প্রাণিবাচক অ-তৎসম শব্দের শেষে ই-কার হয়। যেমন— প্রজাপতি, বুলবুলি, তিমি ইত্যাদি।
৫. স্ত্রীবাচক অ-তৎসম শব্দের শেষে ই-কার হয়।   যেমন—দিদি, মামি, নানি ইত্যাদি।


ঈ-কার ব্যবহারের পাঁচটি নিয়ম—
১. কোনো কোনো স্ত্রীবাচক শব্দের শেষে ঈ-কার দেওয়া যেতে পারে।  যেমন: রানী, পরী, গাভী  ইত্যাদি ।
২.সর্বনাম পদরূপে এবং বিশেষণ ও ক্রিয়া-বিশেষণ পদরূপে কী শব্দটি ঈ-কার দিয়ে লেখা হবে।
যেমন- কী করছ? কী পড়ো?  কী যে করি! ইত্যাদি।
৩. ব্যক্তির কারী’তে (আরী) ঈ-কার হবে। যেমন-  সহকারী,  ছিনতাইকারী, পথচারী, কর্মচারী ইত্যাদি।
৪. কোন শব্দের সাথে সন্ধীগঠিত কারণে শব্দান্তে “ঈ” যোগ হলে অবশ্যই ঈ-কার হবে।
যেমন: দায়+ঈ=দায়ী, মন্ত্র+ঈ=মন্ত্রী  ইত্যাদি।
৫. বেশি’ এবং ‘বেশী’ ব্যবহার: ‘বহু’, ‘অনেক’ অর্থে ব্যবহার হবে ‘বেশি’।  শব্দের শেষে যেমন: ছদ্মবেশী, প্রতিবেশী অর্থে ‘বেশী’  ব্যবহার হবে।




রবিবার, ১৩ মে, ২০১৮

সাধু ও চলিত ভা্ষার পার্থক্য লেখ।

সাধু ও চলিত ভাষারীতির ৫ টি পার্থক্য লেখ ?


১ যে ভাষা ব্যাকরণের নিয়মকানুর পুরোপুরিভাবে মেনে চলে, তাকে সাধু ভাষা বলে।
২. সাধু ভাষা ব্যাকরণের অনুসারী।
৩. সাধু ভাষায় তৎসম শব্দের প্রয়োগ হয়ে থাকে।
৪. সাধু ভাষা অপরিবর্তনীয়।
৫. সাধু ভাষা নীরস ও প্রাণহীন
৬. সাধু ভাষা কৃত্রিম
৭. গদ্য, সাহিত্য, চিঠিপত্র ও দলীল লিখনে সাধু ভাষার ব্যবহার অধিক।

১.বিভিন্ন অঞ্চলভিত্তিক ব্যবহৃত বা মৌখিকভাষাকে চলিত ভাষা বলে।
২. চলিত ভাষা ব্যাকরণের অনুসারী নয়।
৩ চলিত ভাষায় তদ্ভব, অর্ধতৎসম, ও বিদেশি শব্দের প্রয়োগ হয়ে থাকে।
৪ চলিত ভাষা পরিবর্তনশীল।
৫.চলিত ভাষা সরস ও জীবন্ত।
৬ চলিত ভাষা কৃত্রিমবর্জিত।
৭.চলিত ভাষা বক্তৃতা, সংলাপ, আলোচনা ও নাট্য সংলাপের জন্য উপযুক্ত।

জাতীয় সংগীত

জাতীয় সংগীত
রচয়িতা :কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
সুরকার: কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

আমার সোনার বাংলা গানটি ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত। এ গানের রচয়িতা ও সুরকার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে এই গানটি রচিত হয়েছিল। ১২ জানুয়ারি, ১৯৭২ তারিখে মন্ত্রীসভার প্রথম বৈঠকে এ গানটির প্রথম দশ লাইন সদ্যগঠিত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জাতীয়সঙ্গীত হিসেবে নির্বাচিত হয়।

Flower

আমার সোনার বাংলা,আমি তোমায় ভালোবাসি ।
চিরদিন তোমার আকাশ, তোমার বাতাস, আমার প্রাণে বাজায় বাঁশি ॥

ও মা, ফাগুনে তোর আমের বনে ঘ্রাণে পাগল করে,
মরি হায়, হায় রে—
ও মা, অঘ্রানে তোর ভরা ক্ষেতে আমি কী দেখেছি মধুর হাসি ॥

কী শোভা, কী ছায়া গো, কী স্নেহ, কী মায়া গো—
কী আঁচল বিছায়েছ বটের মূলে, নদীর কূলে কূলে ।
মা, তোর মুখের বাণী আমার কানে লাগে সুধার মতো,
মরি হায়, হায় রে—
মা, তোর বদনখানি মলিন হলে, ও মা, আমি নয়নজলে ভাসি ॥

তোমার এই খেলাঘরে শিশুকাল কাটিলে রে,
তোমারি ধুলামাটি অঙ্গে মাখি ধন্য জীবন মানি ।
তুই দিন ফুরালে সন্ধ্যাকালে কী দীপ জ্বালিস ঘরে,
মরি হায়, হায় রে—
তখন খেলাধুলা সকল ফেলে, ও মা, তোমার কোলে ছুটে আসি ॥

ধেনু-চরা তোমার মাঠে, পারে যাবার খেয়াঘাটে
সারা দিন পাখি-ডাকা ছায়ায়-ঢাকা তোমার পল্লীবাটে,
তোমার ধানে-ভরা আঙিনাতে জীবনের দিন কাটে,
মরি হায়, হায় রে—
ও মা, আমার যে ভাই তারা সবাই, ও মা, তোমার রাখাল তোমার চাষি ॥

ও মা, তোর চরণেতে দিলেম এই মাথা পেতে—
দে গো তোর পায়ের ধুলা, সে যে আমার মাথার মানিক হবে ।
ও মা, গরিবের ধন যা আছে তাই দিব চরণতলে,
মরি হায়, হায় রে—
আমি পরের ঘরে কিনব না আর, মা, তোর ভূষণ ব'লে গলার ফাঁসি



সাধু ও চলিত ভাষার পার্থক্য:

প্রশ্ন : ভাষা কাকে বলে ? সাধু ও চলিত ভাষার পার্থক্য আলোচনা কর ।

উত্তর: ভাষার সংঙ্গা: সাধারণ কথায় মানুষ তার মনের ভাব প্রকাশ করতে যেসব অর্থপূর্ণ ধ্বনি বা শব্দ উচ্চারণ করে তাকে ভাষা বলে। এ বিষয়ে কয়েকটি প্রামান্য সংঙ্গা নিম্নরুপ-
১. ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর অভিমত: তিনি বলেন, “মানুষ্য জাতি যেসব ধ্বনি দিয়ে মনের ভাব প্রকাশ করে, তার নাম ভাষা”।

সাধু ও চলিত ভাষার পার্থক্য
ব্যবহার ও লেখার বিচারে বাংলা ভাষা দু’ভাবে ব্যবহার হয়। যথা-সাধুরীতি ও চলিতরীতি। নিচে এদের পাথ্যক্য তুলে ধরা হল-
১. যে ভাষা ব্যাকরণের নিয়মকানুর পুরোপুরিভাবে মেনে চলে, তাকে সাধু ভাষা বলে। বিভিন্ন অঞ্চলভিত্তিক ব্যবহৃত বা মৌখিক ভাষাকে চলিত ভাষা বলে।
২. সাধু ভাষা ব্যাকরণের অনুসারী। চলিত ভাষা ব্যাকরণের অনুসারী নয়।
৩. সাধু ভাষায় তৎসম শব্দের প্রয়োগ হয়ে থাকে। চলিত ভাষায় তদ্ভব, অর্ধতৎসম, ও বিদেশি শব্দের প্রয়োগ হয়ে থাকে।
৪. সাধু ভাষা অপরিবর্তনীয়। চলিত ভাষা পরিবর্তনশীল।
৫. গদ্য, সাহিত্য, চিঠিপত্র ও দলীল লিখনে সাধু ভাষার ব্যবহার অধিক। চলিত ভাষা বক্তৃতা, সংলাপ, আলোচনা ও নাট্য সংলাপের জন্য উপযুক্ত।
৬. সাধু ভাষায় পদবিন্যাস সুনিয়ন্ত্রিত ও সুনির্ধারিত। চলিত ভাষায় পদবিন্যাস সুনিয়ন্ত্রিত ও সুনির্ধারিত নয়।
৭. সাধু ভাষা শ্রুতিকঠোর ও দুর্বোধ্য। চলিত ভাষা শ্রুতিমধুর ও সহজবোধ্য।
৮. সাধু ভাষা নীরস ও প্রাণহীন। চলিত ভাষা সরস ও জীবন্ত।
৯. স্বভাবগত সাধু ভাষা গুরুগম্ভীর ও আভিজাত্যের অধিকারী। চলিত ভাষা সাবলীল ও স্বাচ্ছন্দ্যময়তার অধিকারী।
১০. সাধু রীতিতে অনুসর্গ হচ্ছে- জন্য, হইতে, থাকিয়া, চাইতে ইত্যাদি। চলিত রীতিতে অনুসর্গ হচ্ছে- জন্যে, হতে, থেকে, চেয়ে ইত্যাদি।
১১. সাধু ভাষা কৃত্রিম। চলিত ভাষা কৃত্রিমবর্জিত।
১২. সাধু ভাষায় সন্ধি সমাসের আধিক্য লক্ষণীয়। চলিত ভাষায় সন্ধি সমাস বর্জন করে সহজ করে লেখার প্রবণতা লক্ষণীয়।
১৩. সাধু ভাষা বহু ভাষা প্রশংসিত। চলিত ভাষা মিত ভাষা আদৃত।
১৪. সাধু ভাষায় সর্বনাম ও ক্রিয়াপদের ব্যবহার এ ভাষায় পূর্ণরুপে হয়ে থাকে। চলিত ভাষায় এদের আধুনিক ও সংকুচিত রুপ ব্যবহার হয়।
১৫. সাধু ভাষা আঞ্চলিক প্রভাবমুক্ত। চলিত ভাষা আঞ্চলিক প্রভাবধীন।
১৬. উদাহরণ: সাধু ভাষা-তোমাকে কাছে পাইয়া আমি ধন্য হইলাম। চলিত ভাষা-তোমাকে কাছে পেয়ে আমি ধন্য হলাম।