মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় বিহারের সাঁওতাল পরগনার দুমকায় ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দের ১৯এ মে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পৈতৃক বাড়ি ঢাকার বিক্রমপুরে। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পিতার নাম হরিহর বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মাতার নাম নীরদাসুন্দরী দেবী। তাঁর পিতৃপ্রদত্ত নাম প্রবোধকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়। ডাকনাম মানিক । বাংলা, বিহার, উড়িষ্যার বিভিন্ন স্কুল ও কলেজে তিনি পড়াশোনা করেন।
মাত্র আটচল্লিশ বছর তিনি বেঁচেছিলেন। কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে বিএসসি পড়ার সময়ে মাত্র বিশ বছর বয়সে বন্ধুদের সাথে বাজি ধরে তিনি প্রথম গল্প ‘অতসী মামী’ লিখে খ্যাতি অর্জন করেন। তাপর জীবনের বাকি আটাশ বছর নিরবচ্ছিন্নভাবে লিখে গেছেন। মাঝে বছর তিনেক মাত্র তিনি চাকরি ও ব্যবসায়িক কাজে নিজেকে জড়ালেও বাকি পুরো সময়টাই তিনি সার্বক্ষণিকভাবে সাহিত্যসেবায় নিয়োজিত ছিলেন।
উপন্যাস ও ছোটগল্প লেখক হিসেবে মানিক বাংলা সাহিত্যে খ্যাতিমান। অল্প সময়েই তিনি সৃষ্টি করেছেন প্রায় চল্লিশটি উপন্যাস ও প্রায় তিনশ ছোটগল্প। সেই সঙ্গে লিখেছেন কিছু কবিতা, নাটক, প্রবন্ধ, ও ডায়েরি। বিজ্ঞানমনস্ক এই লেখক মানুষের জগৎ তথা অন্তর্জীবনের রূপকার হিসেবে সার্থকতা দেখিয়েছেন। একই সঙ্গে সমাজবাস্তবতার শিল্পি হিসেবেও সাক্ষর রেখেছেন। ‘জননী’, ‘দিবারাত্রির কাব্য’, ‘পদ্মানদীর মাঝি’, পুতুলনাচের ইতিকথা’, ‘চিহ্ন’, প্রভৃতি তাঁর বিখ্যাত উপন্যাস। তাঁর বিখ্যাত ছোটগল্পের মধ্যে উল্লেখযোগ্য : ‘প্রাগেতিহাসিক’, ‘সরিসৃপ’, ‘সমুদ্রের স্বদ’, ‘কুষ্ঠরোগীর বৌ’, ‘টিকটিকি’, ‘হলুদ পোড়া’, ‘আজকাল পরশুর গল্প’,‘হারানের নাসজামাই’, ‘ছোটবকুল পুরের যাত্রী’ প্রভৃতি।
কলকাতায় ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দে তেসরা ডিসেম্বর তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
পাঠ পরিচিতি:
পাঠ-পরিচিতি
‘মাসিপিসি’ গল্পটি প্রথম প্রকাশিত হয় কলকাতার ‘পূর্বাশা’ পত্রিকায় ১৩৫২ বঙ্গাব্দের চৈত্র সংখ্যায় (মার্চ-এপ্রিল ১৯৪৬)। পরে এটি সংকলিত হয় ‘পরিস্থিতি’ (অক্টোবর ১৯৪৬) নামক গল্পগ্রন্থে। বর্তমান পাঠ গ্রহণ করা হয়েছে ‘ঐতিহ্য’ প্রকাশিত মানিক-রচনাবলি পঞ্চম খণ্ড থেকে।
স্বামীর নির্মম নির্যাতনের শিকার পিতৃমাতৃহীন এক তরুণীর করুন জীবনকাহিনী নিয়ে রচিত হয়েছে ‘মাসি-পিসি’ গল্প। আহ্লাদি নামক ওই তরুণীর মাসি ও পিসি দুজনই বিধবা ও নিঃস্ব। তারা তাদের অস্তিত্বরক্ষার পাশাপাশি বিরূপ বিশ্ব থেকে আহ্লাদিকে রক্ষার জন্য যে বুদ্ধিদীপ্ত ও সাহসী সংগ্রাম পরিচালনা করে সেটাই গল্পটিকে তাৎপর্যপূর্ণ করে তুলেছে। অত্যvচারী স্বামী এবং লালসা-উন্মত্ত জোতদার, দারোগা ও গুণ্ডা-বদমাশদের আক্রমণ থেকে আহ্লাদিকে নিরাপদ রাখার ক্ষেত্রে অসহায় দুই বিধবার দায়িত্বশীল ও মানবিক জীবনযুদ্ধ খুবই প্রশংসনীয়। দুর্ভিক্ষের মর্মস্পর্শী স্মৃতি, জীবিকা নির্বাহের কঠিন সংগ্রাম, নারী হয়ে নৌকাচালনা ও সবজির ব্যবসায় পরিচালনা প্রভৃতি এ গল্পের বৈচিত্র্যময় দিক।
শব্দার্থ ও টীকা
সালতি - শালকাঠি নির্মিত বা তালকাঠের সরু ডোঙা।
বদম ছাঁট- মাথার চুল এমনভাবে ছাঁটা যে তা কদমফুলের আকার ধারণ করে।
লগি - হাত ছয়েক লম্বা সরু বাঁশ । নৌকা চালানোর জন্য ব্যবহৃত বাঁশের দণ্ড।
খপর - ‘খবর’ শব্দের আঞ্চলিক উচ্চারণ।
মেয়া - মেয়ে শব্দের আঞ্চলিক উচ্চারণ।
সোমত্ত - সামর্থ (সংসারধর্ম পালনে), যৌবনপ্রাপ্ত
খুনসুটি - হাসি তামাশাযুক্ত বিবাদ-বিসম্বাদ বা ঝগড়া
বেমক্কা - স্থান-বহির্ভূত। অসংগত ।
পেটে শুকিয়ে লাথি ঝাঁটা-পর্যাপ্ত খাবার না-জুগিয়ে কষ্ট দেওয়ার পাশাপাশি লাথি ঝাঁটার মাধ্যমে শারীরিকভাবে নির্যাতন।
কলপোড়া ছ্যাঁকা-তামাকসেবনে ব্যবহৃত হুঁকার উপরে কলকেতে থাকে যে আগুন তা দিয়ে দগ্ধ করা।
ডালের বড়ি- চালকুমড়া ও ডাল পিশে ছোট ছোট আকারে তৈরি করা খাদ্যবস্তু যা রোদে শুকিয়ে – সংরক্ষণ করা হয় এবং সবজি মাছ-মাংসের সঙ্গে রান্না করে খাওয়া হয়।
পাঁশুটে - ছাইবর্ণবিশিষ্ট। পাংশুবর্ণ। পাণ্ডুর । ফ্যাকাশে।
সড়গড় - রপ্ত। মুখস্থ। অভ্যস্থ। স্মৃতিগত।
ব্যঞ্জন - রান্না-করা তরকারি
বাজারের তোলা - বাজারে বিক্রেতাদের কাছ থেকে আদায় করা খাজনা।
কাটারি - কাটবার অস্ত্র।
এর্কি – ‘ইয়ার্কি’ শব্দের আঞ্চলিক উচ্চারণ। হাস্য-পরিহাস বা রসিকতা।
গুরুত্বপূর্ন তথ্য
গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাদি:
শেষবেলায় খালে এখন পুরো ভাটা
কৈলাশ বাহকের মাথায় খড় চাপাতে ব্যস্ত
কৈলাশের ডাকে সামনের দিকে লগি পুতে মাসি পিসি সালতির গতি ঠেকায়
আহ্লাদী সিঁথির সিঁদুর পর্যন্ত ঘোমটা টেনে দেয়
জগুর সাথে কৈলাশের চায়ের দোকানে দেকা হয়েছিল
জগু বৌকে নেবার জন্য মামলা করবে
শকুনেরা উড়ে এসেছে পাতাশূন্য শুকনো গাছটায়
শহরের বাজারে তরিতরকারি ফলমূলের দাম চড়া
আহ্লাদীর বাবা কলেরায় মারা গেছে
বেঁচে থাকার তাগিদে কোমর বেধে মাসি পিসি হয়ে গেল একমন, একপ্রাণ
আহ্লাদীর স্বামীর নাম জগু
আহ্লাদীর সম্পত্তির উপর জগুর প্রচুর লোভ
মাসির শাউড়ি,ননদ ছিল বাঘের মতো
সরকারবাবুর সঙ্গে বাজারের তেলা নিয়ে ঝগড়া করে মাসি পিসির অর্ধেক জীবন শেষ
রসুই চালায় ঝাঁপ এঁটে মাসি পিসি বাইরে যায়
শুক্লপক্ষের একাদশীর উপোস করেছে দুইজন গতকাল
পথের ধারে ডোবার পাশে কয়েকজন ঘাপটি মেরে বসে আছে
আজ দ্বাদশী, জোৎস্না বেশ উজ্জ্বল
আহ্লাদীর এক ভাই ছিল
কানাই মাসি পিসিকে কাছারিবাড়ি যেতে বলে
মাসি পিসির উপর আহ্লাদীর দেখাশোনার ভার পড়েছে
দুর্ভিক্ষ কোনোরকমে ঠেকিয়েছিল আহ্লাদীর বাবা
মাসি পিসি ছাগল বেচে ভাল মন্দ দশটা খাইয়েছিল জগুকে
ক.মাসিপিসি গল্পে অনাথা মেয়েটির নাম কি--আহ্লাদি।
খ.আহ্লাদির স্বামীর নাম কি--জগু ।
গ.জগু আহ্লাদিকে ছ্যাকা দিত -- কলকেপোড়া দিয়ে ।
ঘ.আহ্লাদির বাবা মারা যায় -- কলেরায় ভূগে
ঙ.মাসিপিসি জীবিকার তাগিদে শুরুকরে --শাকসবজি ব্যবসা
চ.মাসিপিসি সমস্ত মন জুড়ে রয়েছে --আহ্লাদিকে রক্ষা ।
ছ.আহ্লাদি রাতে ঘুমায় --মাসি-পিসির মাঝখানে।
জ.কানােইয়ের পেশা --চৌকিদারি ।
ঝ.কানাই চৌকিদার ও তার দলবল ভ্যাবাচ্যাকা খায় --মাসিপিসির অকুতভয় মনোভাবের জন্য ।
ঞ.বুড়ো রহমানের মেয়ে মারা গেছে -শ্বশুর বাড়িতে ।
ট.মাসিপিসি গল্পটি প্রথম প্রকাশিত হয় -পূর্বাশা পত্রিকায়
ঠ.মাসি পিসি গল্পটি সংকলিত হয় -পরিস্থিতি গন্থে।
৩। কয়টি সালতি পাশাপাশি জোড়া লাগানো ছিল?
ক. দুইটি খ. তিনটি
গ. চারটি ঘ. পাঁচটি
৪। আহ্লাদী স্বামীর কাছে যেতে চায় না, কারণ-
ক. স্বামীর অত্যাচার খ. অর্থকষ্ট
গ. স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ে ঘ. স্বামীর পঙ্গু হওয়া
৫। নিচের কোন পেশাটির সঙ্গে কানাই জড়িত?
ক. মাছধরা খ. ওষুধ বিক্রি
গ. চৌকিদারি ঘ. কৃষিকাজ
৬। সালতি সম্পর্কে নিচের কোন বাক্যটি প্রযোজ্য?
ক. শালকাঠ নির্মিত সরু ডোঙ্গা
খ. কদমকাঠ নির্মিত সরু ডোঙ্গা
গ. পরিধেয় বস্ত্রবিশেষ
ঘ. ধানবিশেষ
৭। আহ্লাদী স্বামীর ঘরে যেতে চায় না কেন?
ক. খুন হওয়ার ভয়ে খ. যৌতুকের কথা শুনে
গ. মাসি-পিসির মায়ায় ঘ. বাবার সম্পত্তি রক্ষায়
নিচের উদ্দীপকটি পড়ো এবং ৮ ও ৯ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও :
নিজের শেষ সম্বল বিক্রি করে হরিপদ মেয়েকে শ্বশুরবাড়ি পাঠালেও স্বামীর অত্যাচারে শেষ পর্যন্ত সে বাবার সংসারেই ফিরে আসে। শ্বশুরবাড়ির কথা বললেই ভয়ে মেয়েটি আঁতকে ওঠে।
৮। উদ্দীপকের মেয়েটি কার আংশিক প্রতিনিধিত্ব করে?
ক. দিগম্বরী খ. আহ্লাদী
গ. সিলভী ঘ. হজের
৯। উদ্দীপক ও ‘মাসি-পিসি’ গল্পের মূল ভাব কোনটি?
ক. জীবিকার ধরন খ. মমত্ববোধ
গ. নির্যাতনের স্বরূপ ঘ. দায়িত্ববোধ
১০। কৈলাশ ব্যস্ত ছিল কেন?
ক. ধানের আঁটি বাঁধায় খ. নৌকাটি খুলে দিতে
গ. বাহকের মাথায় খড় চাপাতে ঘ. নিজে খড় বহন করতে
১৫। মাসি-পিসি গল্পটিকে তাৎপর্যপূর্ণ করে তুলেছে কোনটি?
ক. মাসি-পিসির কর্মদক্ষতা
খ. তাদের বুদ্ধিদীপ্ত চেতনা
গ. মাসি-পিসির সরলতা
ঘ. মাতৃত্বের মহিমা
নিচের উদ্দীপকটি পড়ো এবং ১৬ ও ১৭ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও :
পিতৃ-মাতৃহীন মিতু স্বামীর নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে চলে আসে ফুফুর কাছে। গ্রামের উঠতি যুবকের দৃষ্টি পড়ে মিতুর ওপর। কিন্তু ফুফু সব প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে মিতুকে লালসা-উন্মুত্ত লোকদের হাত থেকে আগলে রাখে।
১৭। উদ্দীপকের ফুফুর মধ্যে মাসি-পিসি চরিত্রের যে দিকটি ইঙ্গিত করে-
i. মমত্ববোধ
ii. দায়িত্ববোধ
iii. আত্মসচেতন
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
১৮। আহ্লাদী কান পেতে রাখে কেন?
ক. মাসির ইশারায়
খ. কৈলাশের কথা শুনতে
গ. জগুর কথা মনে পড়ায়
ঘ. পিসির কথা শুনতে
১৯। মাসি-পিসির মধ্যে গভীর ভাব গড়ে ওঠার কারণ-
ক. অর্থ উপার্জন
খ. দুজনই আশ্রিত
গ. একসাথে ব্যবসা করে
ঘ. আহ্লাদীর দায়িত্ব পড়ায়
২১। মাসি-পিসি আহ্লাদীকে শ্বশুরবাড়ি পাঠাতে চায় না। কারণ-
i. সন্তানবাৎসল্যে
ii. নির্যাতনের ভয়ে
iii. আহ্লাদী যেতে চায় না বলে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i খ. i ও ii
গ. i ও iii ঘ. ii ও iii
২৫। বেমক্কা শব্দের অর্থ হিসেবে নিচের যেটি গ্রহণীয়-
i. স্থানবহিভর্র্‚ত
ii. অসংগত
iii. অসম্ভব
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
২৬। ‘মাসি-পিসি’ গল্পের একটি অন্যতম দিক কী?
ক. সমাজ শোষণ খ. নারী নির্যাতন
গ. নারীর ব্যক্তিত্ব চেতনা ঘ. স্বাধীনচেতা মানুষ
২৮। ‘মাসি-পিসি’ গল্পের বৈচিত্র্যময় দিক হলো-
i. দুর্ভিক্ষের মর্মস্পর্শ স্মৃতি
ii. প্রকৃতির প্রতি নিবিড়তা
iii. মানবিক জীবনসংগ্রাম
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii
খ. ii ও iii
গ. i ও iii
ঘ. i, ii ও iii
৩০। বাইরে থেকে কার হাঁক আসে?
ক. গোকুলের খ. কানাই চৌকিদারের
গ. সরকার বাবুর ঘ. পেয়াদার
৩১। স্বামী পরিত্যক্ত মোমেনা বেগম কঠোর পরিশ্রম করে জীবিকা নির্বাহ করেন। মোমেনা বেগম নিচের কোন চরিত্রকে স্মরণ করিয়ে দেন?
ক. আহ্লাদী খ. বুড়ি
গ. মাসি-পিসি ঘ. দিগম্বরী
৩২। জগু মামলা করবে কেন?
ক. মাসি-পিসিকে ভয় দেখাতে
খ. বউকে নেওয়ার জন্য
গ. জমি রক্ষা করতে
ঘ. বউকে ভয় দেখাতে
নিচের উদ্দীপকটি পড়ো এবং ৩৩ ও ৩৪ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও :
শ্বশুরবাড়ির নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে শিপ্রা পালিয়ে বাবার বাড়ি চলে আসে। কিন্তু সমাজে অপমানের কথা চিন্তা করে বাবা শিপ্রাকে আবার শ্বশুরবাড়ি পাঠিয়ে দেন।
৩৩। উদ্দীপকের শিপ্রার সঙ্গে কোন চরিত্রের বৈপরীত্য রয়েছে?
ক. দিগম্বরী খ. আহ্লাদী
গ. সিলভী ঘ. সিনথিয়া
৩৪। উদ্দীপকের শিপ্রার বাবার চরিত্রে কোন গুণটি থাকলে মাসি চরিত্রের ধারক হতে পারত?
ক. সহনশীল খ. প্রতিবাদী
গ. সততা ঘ. হাতুল
৩৫। স্বভাবগত কারণে নিচের কোন স্থানের সঙ্গে জগুর সম্পর্ক রয়েছে?
ক. চায়ের দোকান খ. মন্দির
গ. স্কুলমাঠ ঘ. শুঁড়িখানা
৩৬। মাসি-পিসি আহ্লাদীকে পাঠাতে চায় না, কারণ-
ক. জগু নির্যাতন করে খ. জগু অর্থলোভী
গ. জগু দরিদ্র ঘ. জগু অশিক্ষিত
নিচের উদ্দীপকটি পড়ো এবং ৩৭ ও ৩৮ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও :
চার বছরের তপনকে নিয়ে সদ্য বিধবা হয়েছে রেবতী। কিন্তু বৈধব্য গ্রহণ করতে না করতেই গ্রামের প্রভাবশালী হরিপদ তাকে নানাভাবে উত্ত্যক্ত করে। এ নিয়ে সমাজের কাছে বিচার চেয়েও বিচার পায়নি রেবতী। অবশেষে এক দিন বঁটি দিয়ে হরিপদের পা কেটে দেয় রেবতী।
৩৭। উদ্দীপকের হরিপদ শ্রেণির লোকের সঙ্গে নিচের কোন চরিত্রের সাদৃশ্য রয়েছে?
ক. কৈলাশ, কানাই
খ. কানাই, গোকুল
গ. জগু, কৈলাশ
ঘ. কৈলাশ, রহমান
৩৮। সাদৃশ্যগত দিকটি হলো-
i. আর্থিক দীনতা
ii. চারিত্র্যিক স্খলন
iii. ক্ষমতার দৌরাÍয
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii
খ. i ও iii
গ. ii ও iii
ঘ. i, ii ও iii
ষাটোর্ধ্ব বিধবা ফাতেমা বেগম। নিঃসন্তান এ বৃদ্ধার আপন বলতে কেউ নেই। একদিন প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে হঠাত্ তিনি একটি মেয়েকে রাস্তায় কাঁদতে দেখেন। বৃত্তান্ত শুনে তিনি মেয়েটিকে বাড়িতে নিয়ে আসেন এবং স্বামীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ মেয়েটিকে মাতৃস্নেহে আশ্রয় দেন। স্বামীপক্ষ খবর পেয়ে তাকে নিয়ে যেতে চায়। মেয়েটি কোনোভাবেই যেতে ইচ্ছুক নয়। বৃদ্ধাও মেয়েটিকে যেতে দেননি। এতে তাকে অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়। মৃত্যুর আগে বৃদ্ধা মেয়েটিকে সমুদয় সম্পত্তি দান করে যান।
ক. ‘ছেলের মুখ দেখে পাষাণ নরম হয়’—উক্তিটি কার?
খ. ‘যুদ্ধের আয়োজন করে তৈরি হয়ে থাকে মাসি-পিসি’—উক্তিটি দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে?
গ. উদ্দীপকের মেয়েটি ‘মাসি-পিসি’ গল্পের আহ্লাদির সঙ্গে কিভাবে সংগতিপূর্ণ তা ব্যাখ্যা করো।
ঘ. ‘মাসি-পিসি’ গল্পের মাসি-পিসি ও উদ্দীপকের বৃদ্ধা কি একসূত্রে গাঁথা? মতামত দাও।
উত্তর :
ক. ‘ছেলের মুখ দেখে পাষাণ নরম হয়’—উক্তিটি পিসির।
খ. ‘যুদ্ধের আয়োজন করে তৈরি হয়ে থাকে মাসি-পিসি’—উক্তিটি দ্বারা সমাজের কুচক্রীদের কুদৃষ্টি থেকে রক্ষা পেতে দুই বিধবার দায়িত্বশীল ও মানবিক জীবনযুদ্ধের প্রস্তুতিকে বোঝানো হয়েছে।
আহ্লাদিকে অপহরণ করার হীন মতলবে জোতদার ও দারোগা বাবু কানাই চৌকিদারকে পাঠায় মাসি-পিসির বাড়িতে। তারা কূটকৌশলের আশ্রয় নেয়। কিন্তু মাসি-পিসি তা বুঝতে পারে। তারা চিত্কার করে লোক জড়ো করে। অস্ত্র হাতে ধাওয়া করে দোষীদের। কিন্তু তার পরও শত্রুর অনিষ্ট বিষয়ে নিশ্চিত হয় না মাসি-পিসি। তাই বড় গামলাভর্তি জল ও কাঁথা আর কম্বল ভিজিয়ে রাখে। হাঁড়ি-পাতিল ভরে রাখে। আগুন দিলে তাতে নেভানো যাতে সহজ হয় এ জন্য এই প্রস্তুতি। আর হাতের কাছে রাখে ধারালো অস্ত্র।
গ. নির্যাবতিতা ও অসহায়ত্বের প্রতিনিধি হিসেবে উদ্দীকের মেয়েটি ‘মাসি-পিসি’ গল্পের আহ্লাদির সঙ্গে সংগতিপূর্ণ।
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘মাসি-পিসি’ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র আহ্লাদির। সে স্বামী-সংসারে নির্যাবতিতা। স্বামীর ঘরে টিকতে না পেরে বিধবা মাসি-পিসির কাছে ঠাঁই নেয়। মাসি-পিসির যত্নের কোনো ত্রুটি ছিল না। কিন্তু আশপাশের কুচক্রীরা কুদৃষ্টি দিয়ে তার জীবন অতিষ্ঠ করে তোলে। স্বামীর বাড়ি থেকে হুমকি আসে। জোতদার দারোগা বাবুর সহায়তায় চৌকিদার পাঠায়। বাবার সম্পদের উত্তরাধিকারী হওয়ায় অনেকেই তাকে খরিদ করার পাঁয়তারা করে।
উদ্দীপকের ষাটোর্ধ্ব ফাতেমা আশ্রয় দেন অসহায় মেয়েটিকে। মেয়েটি স্বামীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ ছিল। বৃদ্ধা মাতৃস্নেহে তাকে লালন করতে থাকেন। আপন করে নেন। স্বামীর ঘর থেকে নিতে এলেও বৃদ্ধা যেতে দেননি মেয়েটিকে। মৃত্যুকালে সব সম্পত্তির উত্তরাধিকার নির্ধারণ করে যান এই মেয়েটিকে। আর এখানেই উদ্দীপকের মেয়েটি ‘মাসি-পিসি’ গল্পের আহ্লাদির সঙ্গে সংগতিপূর্ণ।
ঘ. ‘মাসি-পিসি’ গল্পের আহ্লাদি স্বামী-সংসারে নির্যাবতিতা। অসহায় হয়ে সে মাসি-পিসির কাছে আসে। সেখানে যত্ন-আত্তির ত্রুটি ছিল না তার। কিন্তু আশপাশের দুর্বৃত্তদের চোখ পড়ে অসহায় মেয়েটির ওপর। মাসি-পিসি জীবন বাজি রেখে মেয়েটিকে রক্ষা করতে চান। মাসি-পিসি সারাক্ষণ চিন্তা করেন খাইয়ে-পরিয়ে যত্নে রাখতে হবে আহ্লাদিকে। শ্বশুরবাড়ির কবল থেকে বাঁচাতে হবে, এমনকি গাঁয়ের বজ্জাতদের নজর থেকে সামলে রাখতে হবে, কত দায়িত্ব তাদের, কত কাজ।
উদ্দীপকের ফাতেমা বেগম বিধবা। সকালে হাঁটতে গিয়ে অসহায় একটি মেয়েকে ঘরে তুলে আনেন তিনি। মেয়েটি স্বামীর হাতে নির্যাবতিতা। শ্বশুরবাড়ি থেকে নিতে এলেও ফাতেমা বেগম যেতে দেননি তাকে। অনেক ঝামেলাও পোহাতে হয় তাকে। এমনকি মৃত্যুর আগে নিজের সম্পত্তির উত্তরাধিকার করে যান মেয়েটিকে।
উদ্দীপকের ফাতেমা বেগম বিধবা। কিন্তু মানবিকবোধে উজ্জীবিত এক মহান দায়িত্ববান নারী। অন্যদিকে ‘মাসি-পিসি’ গল্পের মাসি ও পিসি আহ্লাদির প্রেক্ষিতে দায়িত্ব-কর্তব্যের এক বিরল দৃষ্টান্ত। সার্বিক আলোচনায় বলা যায়, ‘মাসি-পিসি’ গল্পের মাসি ও পিসি এবং উদ্দীপকের বৃদ্ধা একসূত্রে গাঁথা।
2। শ্বশুরবাড়ির অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে বাবারবাড়ি এসেছে আরিফা। এখানে তার মা ছাড়া আপন কেউ নেই। শ্বশুরবাড়ি থেকে নিতে এলেও মা তাকে যেতে দেননি। কিন্তু পূর্ণ যুবতী আরিফাকে এলাকার বখাটে শামীম, দিপু, কালা জাহাঙ্গীর এদের কাছ থেকে রক্ষার জন্য তার মা সদাসতর্ক থাকেন।
(ক) ‘সোমত্ত’ শব্দের অর্থ কী? ১
(খ) মাসি-পিসির ডাক শুনে পাড়ার লোকজন বেরিয়ে আসে কেন? ২
(গ) উদ্দীপকে আরিফার সঙ্গে ‘মাসি-পিসি’ গল্পের কোন চরিত্রের মিল রয়েছে? তুলনামূলক আলোচনা করো। ৩
(ঘ) উদ্দীপকে আরিফাকে রক্ষার জন্য তার মায়ের যে সতর্কতা—মাসি-পিসি গল্পের আলোকে বিশ্লেষণ করো। ৪
৩.গ্রামের নাম কাশীপুর। গ্রাম ছোট, জমিদার আরও ছোট। তবু দাপটে তার প্রজারা টুঁ-শব্দটি করিতে পারে না—এমনই প্রতাপ। ইহারই সীমানায় পথের ধারে গফুর জোলার বাড়ি। তাহার মাটির প্রাচীর পড়িয়া গিয়া প্রাঙ্গণ আসিয়া পথে মিশিয়াছে। একদিন দ্বিপ্রহরে জমিদারের পিয়াদা যমদূতের ন্যায় আসিয়া প্রাঙ্গণে দাঁড়াইয়া, চিৎকার করিয়া ডাকিল, গফরা ঘরে আছিস?
গফুর তিক্ত কণ্ঠে সাড়া দিয়া কহিল, আছি। কেন?
বাবুমশায় ডাকচেন, আয়।
গফুর কহিল, আমার খাওয়া-দাওয়া হয়নি, পরে যাব।
এত বড় স্পর্ধা পিয়াদার সহ্য হইল না। সে কুিসত একটা সম্বোধন করিয়া কহিল, বাবুর হুকুম, জুতো মারতে মারতে টেনে নিয়ে যেতে।
গফুর দ্বিতীয়বার আত্মবিস্মৃত হইল, সে-ও একটা দুর্বাক্য উচ্চারণ করিয়া কহিল, মহারানীর রাজত্বে কেউ কারও গোলাম নয়। খাজনা দিয়ে বাস করি, আমি যাব না।
মহেশ : শরত্চন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
ক. মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের রচিত প্রথম গল্প কোনটি?
খ. ‘নিজেকে তার ছ্যাঁচড়া, নোংরা, নর্দমার মতো মনে হয়।’ উক্তিটি ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকের পিয়াদার সঙ্গে ‘মাসি-পিসি’ গল্পের কোন চরিত্রের সাদৃশ্য রয়েছে? সাদৃশ্যের কারণ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. ‘উদ্দীপকের গফুর এবং ‘মাসি-পিসি’ গল্পের মাসি-পিসি একই শক্তির জাঁতাকলে পিষ্ট এবং তাদের প্রতিবাদের ধরনও একই’— মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর।
বহুনির্বাচনী
১. সালতি কি?
ক.সেগুন কাঠে নির্মিত নৌকা
খ.গর্জন কাঠের নির্মিত নৌকা
গ.মেহগানি কাঠে নির্মিত নৌকা
ঘ. তাল কাঠে নির্মিত নৌকা
উত্তর: তাল কাঠে নির্মিত নৌকা
২.মাসিপিসি গলা ঝরঝরে এর মাধ্যমে কি বোঝানো হয়েছে?
ক. স্পষ্টভাষী
খ.রুক্ষ
গ.মিষ্টভাষী
ঘ.তিক্ত
উত্তর: রুক্ষ
৩.ওসব একরকম ছেড়ে দিয়েছে জগ ‘ এর মাধ্যমে কি বোঝানো হয়েছে ?
ক. মারধর করা
খ. নেশা করা
গ. গালাগালি করা
ঘ. মামলা করা
উত্তর ; খ নেশা করা
৪.গগু আহ্লাদিকে নিয়ে যেতে চায় কেন?
ক.যৌতুকের লোবে
খ.জেদের কারণে
গ.সম্পতির কারণে
ঘ.অনুত্প্ত হয়ে
উত্তর: সম্পতির লোভে