প্রশ্ন:-২৭ উদাহরণসহ বিশেষ্য পদের শ্রেণিবিভাগ আলোচনা করো
উত্তর: যে পদে কোনো ব্যক্তি, বস্তু, জাতি, কাজ বা গুণের নাম বোঝায়, তাকে বিশেষ্য পদ বলে। যেমন: বই, নদী, পাখি, ফুল, ঢাকা ইত্যাদি।
বিশেষ্য পদের কয়েকটি শ্রেণীবিভাগ আছে। যেমন:
১। সংজ্ঞাবাচক বিশেষ্য: যেসব বিশেষ্য পদে কোনো নির্দিষ্ট স্থান, নদী, পর্বত, সমুদ্র, প্রসিদ্ধ গ্রন্থ বা ব্যক্তির নাম বোঝায়, তাকে সংজ্ঞাবাচক বিশেষ্য বলা হয়। যেমন: আকবর, রানা, লন্ডন, তাজমহল ইত্যাদি।
২। স্থানবাচক বিশেষ্য: যেসব বিশেষ্য পদে কোনো নির্দিষ্ট স্থানের নাম বোঝায়, তাকে স্থানবাচক বিশেষ্য বলা হয়। যেমন: রাজশাহী, ময়নামতি ইত্যাদি।
৩। বস্তুবাচক বিশেষ্য: যে বিশেষ্য পদের সাহায্যে কোনো বস্তু বোঝায় এবং যার সংখ্যা নির্দেশ করা যায় না, শুধু পরিমাণ নির্দেশ করা যায়, তাকে বস্তুবাচক বিশেষ্য বলে। যেমন: পানি, লবণ ইত্যাদি।
৪। জাতিবাচক বিশেষ্য: যে বিশেষ্য পদের সাহায্যে কোনো প্রাণী বা বস্তুর জাতি বোঝায়, তাকে জাতিবাচক বিশেষ্য বলে। যেমন: মানুষ, মুসলমান, হিন্দু ইত্যাদি।
৫। গুণবাচক বিশেষ্য: যে বিশেষ্য পদে কোনো গুণ, অবস্থা ও ভাবের নাম বোঝায়, তাকে গুণবাচক বিশেষ্য বলে। যেমন: সুখ, দুঃখ, দয়া, বীরত্ব ইত্যাদি।
৬। ক্রিয়াবাচক বিশেষ্য: যে বিশেষ্য পদে কোনো কাজের নাম বোঝায়, তাকে ক্রিয়াবাচক বা ভাববাচক বিশেষ্য বলে। যেমন: ঘুমান, গমন, যাওয়া ইত্যাদি।
৭। সমষ্টিবাচক বিশেষ্য: যে বিশেষ্য পদে সমষ্টি বোঝায়, তাকে সমষ্টিবাচক বিশেষ্য বলে। যেমন: জনতা, সমিতি, সভা, দল ইত্যাদি।
প্রশ্ন:-০০ বাংলা ভাষায় প্রমিত উচ্চারণের প্রয়োজনীয়তা আলোচনা কর ।
অথবা, বিশুদ্ধ উচ্চারণ প্রয়োজন কেন ? আলোচনা কর ।
অথবা, বিশুদ্ধ উচ্চারণ প্রয়োজন কেন ? আলোচনা কর ।
উত্তর:বাংলা ভাষায় প্রমিত উচ্চারণের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। আমাদের দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আঞ্চলিক রীতি ব্যবহৃত হয়, যা কেবল কোনো অঞ্চল বা সামাজিক শ্রেণির মধ্যেই সীমাবদ্ধ। অঞ্চল বা শ্রেণি নির্বিবিশেষ তা সবার জন্য মান্য নয় । সেজন্যে কোনো ভাষাভাষী অঞ্চলে প্রচলিত আঞ্চলিক বা উপভাষাগুলোর উপরে সর্বজন্যমান্য ও সারা দেশে অভিন্ন একটি আদর্শ ভষা গড়ে ওঠে । দেশের শিক্ষিত ও পন্ডিত সমাজ এ ভাষায়ই ভাবের আদান-প্রদান করে থাকেন। বিভিন্ন অঞ্চলের উপভাষার উপাদানের সমন্বয়ে শিষ্টজনের ব্যবহৃত এ ভাষাই প্রমিত ভাষা (standard language)। বাংলা ভাষার মুখের ভাষার সাথে মিল রেখে চলিত ভাষারীতির উদ্ভব ঘটে বিশ শতকের গোড়ার দিকে । সর্বজন্যমান্য এবং সারা দেশে অভিন্ন এ প্রচলিত চলিত ভাষাকেই বলা হয়েছে প্রমিত চলিত বাংলা।
পারিবারিক পরিমন্ডলে আমরা আঞ্চলিক উপভষায় কথা বললেও শিক্ষিত পরিবেশে, আনুষ্ঠানিক পরিমন্ডলে, সর্বস্তরের পাঠ্যবই, সংবাদপত্র, প্রকাশনালয়, অফিস-আদালত, ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান সর্বত্র প্রমিত চলিত বাংলার প্রচলন হয়েছে । বেতার, টিভি, বক্তৃতামঞ্চ, তথা ইলেকট্রনিক মিডিয়া এ ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে । ফলে বাংলা ভাষার প্রামিত উচ্চারণের প্রয়োজনীয়তাও বৃদ্ধি পেয়েছে । কেননা এ উচ্চারণ সহজ-সাবলীল, মাধুর্যময়, ব্যঞ্জনাময় ও ঐশ্বর্যময় ।