প্রত্যয়




প্রকৃতি ও প্রত্যয় ব্যাকরণের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।তবে প্রকৃতি ও প্রত্যয় আলোচনার পূর্বে আমাদের কতগুলো বিষয় সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকা দরকার।

▶ সমস্ত শব্দ বা পদকে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা যায়:- যথা,১.মূল শব্দ বা প্রাতিপাদিক। ২.সাধিত শব্দ।

☆ প্রাতিপাদিক :-
বিভক্তিহীন নাম পদকে প্রাতিপাদিক বলে। যেমনঃ ফুল, কলম, বই।

☆সাধিত শব্দ:-
মৌলিক শব্দ ব্যতিত অন্য সকল শব্দকেই সাধিত শব্দ বলে। যেমনঃ হাতা, ফুলেল।

☆সাধিত শব্দ আবার দুই প্রকার :- যথা, ১.নাম পদ/শব্দ। ২. ক্রিয়া পদ/শব্দ।

▶ প্রত্যেক সাধিত শব্দের (নাম শব্দ ও ক্রিয়া) দুটি অংশ থাকে।যথা,
১প্রকৃতি।
২প্রত্যয়।

নিম্নে প্রকৃতি ও প্রত্যয় নিয়ে আলোচনা করা হলো।

▶ প্রকৃতি;:-
কোন শব্দের যে অংককে বা যে শব্দকে আর কোন ক্ষুদ্রতম অংশে ভাগ করা যায় না তাকে প্রকৃতি বলা হয়।
▶ প্রত্যয়::-প্রত্যয় নতুন শব্দ তৈরি করার একটি পদ্ধতি।প্রত্যয় কখনো ধাতু আবার কখনো নাম প্রকৃতি বা শব্দের সাথে যুক্ত হয়ে নতুন শব্দ গঠন করে।
অর্থাৎ, আমরা বলতে পারি শব্দ গঠনের উদ্দেশ্যে যেসব শব্দাংশ ধাতু বা ক্রিয়া প্রকৃতি এবং নাম প্রকৃতির সাথে যুক্ত হয় তাদের প্রত্যয় বলে।

ক্রিয়া প্রকৃতি ......প্রত্যয়...... প্রত্যয়ান্ত শব্দ
চল্ ................+ অতি ............ চলতি
নাচ্ ...............+ অন ............. নাচন
বাজ্ ............. + না .............. বাজনা
নাম প্রকৃতি ..... প্রত্যয় ...... প্রত্যায়ান্ত শব্দ
গোলাপ ........ +অতি ...... গোলাপি।
ফুল ..........+ এল ......... ফুলেল।

▶ প্রকারভেদ:- বাংলা শব্দ গঠনে দুই প্রকার প্রত্যয় পাওয়া যায়:-
কৃৎ প্রত্যয়।
তদ্ধিত প্রত্যয়।
-কৃৎ প্রত্যয় :-
ক্রিয়া প্রকৃতির সঙ্গে যে ধ্বনি বা ধ্বনিসমষ্টি যুক্ত হয় তাকে কৃৎ প্রত্যয় বলে।
যেমনঃ
√ পড় + উয়া = পড়ুয়া।
√ চল + অন = চলন।
তদ্ধিত প্রত্যয়:-
নাম প্রকৃতির বা শব্দের শেষে যেসব প্রত্যয় যোগ হয়ে নতুন শব্দ গঠিত হয় সেগুলোকে তদ্ধিত প্রত্যয় বলে।
যেমনঃ
বোকা + আমি = বোকামি।
চোর + আই = চোরাই।
বিদেশী তদ্ধিত প্রত্যয় যোগে গঠিত শব্দ:-

আনা > আনি:-
ভাব, আচরন ও অভ্যাস বুঝাতে ব্যবহার হয়।
যেমনঃ
বিরি + আনা = বিরিয়ানা।
বাবু + আনা = বাবুয়ানা।
গরিব + আনা = গরিবিয়ানা।

ওয়ালা > আনা:-
মালিক, পেশা, অধিবাসী অর্থে
যেমনঃ-
বাড়ি + ওয়ালা = বাড়িওয়ালা। [মালিক অর্থে]
দুধ + ওয়ালা = দুধ ওয়ালা। [পেশা অর্থে]

⇒ এক কথায় প্রশ্নোত্তর:-
⇒ বিভক্তিহীন নাম পদকে বলে = প্রাতিপাদিক।
⇒ তদ্ধিত প্রত্যয় সাধিত শব্দেকে বলে = তদ্ধিতান্ত শব্দ।
⇒ ধাতু কাকে বলে = ক্রিয়াপদকে।
⇒ সাধিত শব্দ কোনগুলো = মৌলিক শব্দ ব্যতিত অন্য সকল শব্দ।
⇒ যে বর্ণ বা বর্ণসমষ্ঠি ধাতুর পর যুক্ত হয়ে নতুন শব্দ গঠন করে তাকে বলে = প্রত্যয়।
⇒ ক্রিয়া বা ধাতুর পরে যে প্রত্যয় যুক্ত হয় তাকে কি বলে = কৃৎ প্রত্যয়।
⇒ কৃৎ প্রত্যয় সাধিত শব্দকে কি বলে = কৃদন্ত শব্দ।
⇒ শব্দের শেষে কোন প্রত্যয় যুক্ত হয় = তদ্ধিত প্রত্যয়।
⇒ হৈমন্তিক শব্দের প্রকৃতি ও প্রত্যয় = হেমন্ত + ষ্ণিক।
⇒ ধাতু বা প্রকৃতির অন্ত্যধ্বনির আগের ধ্বনির নাম কি = উপধা।
⇒ মুক্তি শব্দের প্রকৃতি ও প্রত্যয় কি = √মুচ্ + ক্তি।
⇒ " ✓" চিহ্ন টি ব্যবহার করা হয় কেন = প্রকৃতি কথাটি বুঝানোর জন্য।
⇒ " জবানবন্দি" শব্দটির "বন্দি" কোন ধরনের প্রত্যয় = বিদেশী তদ্ধিত প্রত্যয়।
⇒ জ্বরূয়া শব্দে "উয়া" প্রত্যয় টি কোন অর্থে ব্যবহৃত হয় = রোগগ্রস্ত অর্থে।
⇒ উক্তি শব্দের প্রকৃতি প্রত্যয় কি = বচ্ + তি।
⇒ "জেঠামি" এখানে" মি " শব্দটি কোন